কিশোরগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে সেবার মান বৃদ্ধি

0
216
কিশোরগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে সেবার মান বৃদ্ধি
কিশোরগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে সেবার মান বৃদ্ধি
আব্দুর রহমান:
কিশোরগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে সেবার মান বৃদ্ধি, কমেছে হয়রানি ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন অপেক্ষা করে নির্দিষ্ট সময়ে পাওয়া যেত না পাসপোর্ট। সরকার নির্ধারিত ফি দিয়েও সঠিক সময়ে পাসপোর্ট না পেয়ে গ্রাহকদের অসুবিধার অন্ত ছিল না। তবে কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-সহকারী-পরিচালক মোঃ আজিজুল হকের প্রচেষ্টায় পাল্টে গেছে চিত্র। জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়ম রোধে কঠোর তিনি। এতে করে বেড়েছে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ। পাশাপাশি অনিয়ম ও দুর্নীতি কমায় স্বস্তি ফিরেছে কিশোরগঞ্জ বাসির।কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সুত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর থেকে কিশোরগঞ্জে আনুষ্ঠানিকভাবে ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম শুরু হয়। পাসপোর্ট অফিসে এসে সাধারণ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়টি বিবেচনায় রেখে মূলত ই-পাসপোর্ট সেবা চালু হয়। বাসায় বসেই একজন মানুষ ই-পাসপোর্ট করতে পারে। ই-পাসপোর্টের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এরমাধ্যমে ই-গেট ব্যবহার করে খুব দ্রুত ও সহজে ভ্রমণকারীরা যাতায়াত করতে পারবেন। ফলে বিভিন্ন বিমানবন্দরে ভিসা চেকিংয়ের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে না। এর মাধ্যমেই ইমিগ্রেশন দ্রুত হয়ে যাবে। তার থেকেও বড় সুবিধা বড় ধরনের তথ্যগত ত্রুটি না থাকলে প্রায় শতভাগ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ে ই-পাসপোর্ট হাতে পাওয়া যায় এবং কি রিইস্যুর ক্ষেত্রে তথ্যগত অমিল না থাকলে সুপার এক্সপ্রেসের মাধ্যমে ২-৩ দিনেও পাসপোর্ট পাওয়া যায়। কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ্য ২০ হাজার জন ই-পাসপোর্টের আবেদন করেছেন। এর মধ্যে প্রায় ১ লক্ষ ১৫ হাজার জনের পাসপোর্ট প্রিন্ট হয়ে এসেছে। রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করতে ডাটা বেইজ রয়েছে এবং প্রতিটি পাসপোর্ট আবেদনকারীর সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। যার ফলে অবৈধ, ভুয়া নাম ঠিকানা ব্যবহারকারীদের চিহ্নিত করতে সহজ হয়ে যায়। পাসপোর্ট করতে আসা একাধিক আবেদনকারী জানান, অনলাইনে ফরম পূরণ করে সঠিক সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট হাতে পেয়েছেন। তাদের মতে, পাসপোর্ট করতে অনেক সময় ও সরকার নির্ধারিত ফি এর চেয়ে অধিক অর্থ গুনতে হয়। সরকার নির্ধারিত ফি দিয়ে আবেদন করে অল্প সময়ে তারা পাসপোর্ট পেয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই অবাক হয়ে জানান, মোঃ আজিজুল হক যোগদানের পর  এই অফিসের কর্মকর্তাদের আচরণ এবং সেবার মান অনেকগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। কাজেও স্বচ্ছতা ফিরেছে। তারা আরও জানান, বর্তমান সহকারী-পরিচালক আইরিন পারভীন ডালিয়ার আমলে অনেক সুবিধা হয়েছে। পাসপোর্ট সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যা বা কোনো কিছু জানতে চাইলে অফিসের উপ-সহকারী-পরিচালক মোঃ আজিজুল হকের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা যায়। সমস্যা সমাধানে তাৎক্ষণিক উপ-সহকারী-পরিচালক নিজে উঠে টেবিলে টেবিলে ঘুরে সমাধান করে দিচ্ছেন। সৌদি আরবে  কাজ পাওয়া ছেলে সোহাগ জানান, ১৫ দিন আগে পাসপোর্ট আবেদন করেছেন। অনলাইনে ফরম পূরণ করে সঠিক সময়ের মধ্যেই পাসপোর্ট হাতে পেয়েছেন তিনি। পাসপোর্ট করতে নির্ধারিত ফি এর বেশি টাকা ও লোক ধরতে হয়- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সেদিন এখন আর নেই। সমস্যা হলে সোজা বড় কর্মকর্তার সঙ্গে সরাসরি কথা বলা যায়। আর কি চান। আর কোনো দালাল লাগে না। এক বেসরকারি কর্মকর্তা বলেন, নির্ধারিত ফি দিয়ে অনলাইনে আবেদন করে পাসপোর্ট অফিসে যাই। সেখানে গেলে অফিস প্রধান পরিচয় জানতে পেরে নিজে এসে আমাকে সঙ্গে নিয়ে আবেদন জমাদানের বিভিন্ন কক্ষে যান এবং মুহূর্তে কাজ শেষ করেন। এতে আমি আন্তরিকভাবে খুশি। বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার তাগিদে আসা সাইফুল বলেন, লিভারের রোগে ভারতে উন্নত চিকিৎসায় যাওয়ার জন্য নির্ধারিত ফি দিয়ে আমি অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদন করি। এর আগেই জানতে পারি বর্তমান অফিস প্রধান জনগণের জন্য আন্তরিক। আমি তার কাছে গেলে মাত্র অল্প সময়ে তিনি নির্দিষ্ট লোক দিয়ে আমার কাজ সমাধান করে দেন। পরবর্তীতে আমি সঠিক সময়ে আমি পাসপোর্ট হাতে পেয়েছি। কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-সহকারী-পরিচালক  মোঃ আজিজুল হক বলেন,‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন জনগণকে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দিতে। সেই লক্ষেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। মানুষের দুর্ভোগে দ্রুততার সঙ্গে কাজ যাচ্ছি। আবেদনকারীদের যে কোনো সমস্যা হলে তারা সরাসরি আমার সঙ্গে দেখা করলে আমি যথাসম্ভব দ্রুত সমাধান করে দেব। আমার রুম নাম্বার ১০৭ আপনাদের সেবায় আমার দরজা সবসময় খোলা।’
আলোকিত প্রতিদিন /১৯ সেপ্টেম্বর ২৩/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here