আয়নুল হক :
প্রত্যেক সৃষ্টির আনন্দ আছে। সেই সৃষ্টি টেকসই হলে আনন্দ আরো বেড়ে যায়। একটি মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে তালের গাছ রোপন করেছিলাম। সেই ঘুঘুডাঙ্গার তাল সড়ক এখন দেশে বিদেশে পরিচিত। তালসড়ক এখন ব্রান্ড হয়ে উঠেছে বলে উল্লেখ করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় নিয়ামতপুরের ঘুঘুডাঙ্গার তালতলিতে তৃতীয়বারের মত তাল পিঠা মেলা অনুষ্ঠিত হয়। নিয়ামতপুর উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদ এ মেলা আয়োজন করে। খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার তাল পিঠা মেলায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সাথে মিশে আছে পিঠা পুলির আয়োজন। আর এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতেই প্রতি বছরের মতো এবারও শুরু হয়েছে নিয়ামতপুরের ঘুঘুডাঙ্গার তালতলিতে তাল পিঠা মেলা। সাধন চন্দ্র বলেন, ঘুঘুডাঙ্গাকে একটি পরিকল্পিত পর্যটন এলাকা করা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গ্রাম হবে শহর প্রকল্পের নওগাঁ জেলায় কার্যক্রম এই ঘুঘুডাঙ্গা থেকেই শুরু হবে বলে উল্লেখ করেন খাদ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, তালসড়ককে কেন্দ্র করে ঘুঘুডাঙ্গা একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। কিছু কাজ করা হয়েছে। জলবায়ু ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ এখানে অর্থায়ন করার আশ্বাস দিয়েছে। ভবিষ্যতে পর্যটন বান্ধব হিসেবে তালসড়ক কেন্দ্রীক এলাকাকে গড়ে তোলা হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস বলেন, তাল পিঠার মেলাকে কেন্দ্র করে মানুষের সাথে মানুষের সংযোগ ঘটে। তালগাছকে কেন্দ্র করে এরকম আয়োজন আমাদের সংস্কৃতিকে ধরে রাখবে যুগযুগ ধরে। এসময় তিনি নিরাপদ খাদ্য গ্রহণে সকলকে সচেতন হওয়ার আহবান জানান। এছাড়াও নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোঃ গোলাম মওলা, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নিয়ামতপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইমতিয়াজ মোর্শেদ। হাজিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বাগত বক্তব্য রাখেন। অন্যান্য মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নিয়ামতপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ, নিয়ামতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, আলহাজ্ব আবুল কালাম, আজাদ সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান বিপ্লব। তিন দিনব্যাপী এ পিঠা মেলায় তালের তৈরি নানান ধরনের পিঠার পসরা নিয়ে হাজির হয়েছেন এ অঞ্চলের পিঠাশিল্পীরা। এবার মেলায় ৩০ ধরনের পিঠা দিয়ে সাজানো হয়েছে। মেলায় তালের তৈরি ফুলঝুরি, জামাই পিঠা, তাল রুটি, তাল কেক, তাল জিলাপি, তালক্ষীর, খেজুর পিঠা, মুইঠা পিঠা, গড়গড়া, কান মুচুরি, ডাল বড়া প্রভৃতি। আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ২২, ২৩ ও ২৪ সেপ্টেম্বর এই তিন দিনব্যাপী তাল পিঠা মেলা চলবে। উল্লেখ্য, তালতলিতে ১৯৮৬ সালে তাল গাছ রোপণ করেন তৎকালীন ইউনিয়নপরিষদের চেয়ারম্যান, বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তালতলির তালসড়ক এখন এ অঞ্চলের পর্যটন স্পটে পরিণত হয়েছে। ২০২১ সালে প্রথমবার তাল পিঠা মেলা আয়োজন করা হয় এখানে। প্রকৃতিতে শোভাবর্ধনের পাশাপাশি আয়বর্ধক কাজেও তালগাছগুলো ভূমিকা রেখে চলেছে।অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন বজলুর রশিদ।
২৩-০৯-২০২৩ইং