মোঃ জিয়াউল ইসলাম:
বরগুনার পাথরঘাটা থেকে গভীর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার সময় ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল হয়ে ভারতের জলসীমায় প্রবেশ করা বাংলাদেশি ছয় জেলে ভারতীয় কারাগার থেকে দীর্ঘ তিন বছর পর মুক্তি পেল। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে আলোকিত প্রতিদিন কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী। ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি ভারতের বন বিভাগের কর্মীরা তাঁদের আটক করেন। আটক জেলেদের অনুপ্রবেশের দায়ে ৩ বছরের সাজা দেন ভারতীয় আদালত। চলতি বছরের ১৭ আগস্ট স্রোতে ভেসে যাওয়া ছয় জেলের সাজার মেয়াদ শেষ হলেও মুক্তি মেলেনি। এ নিয়ে গত ১১ সেপ্টেম্বর ‘সাজা শেষে মুক্তি মিলছে না’ শিরোনামে দেশে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। অবশেষে আজ বিকেল ৫টায় ভারতীয় কারাগার থেকে মুক্তি পায়। মুক্তি পাওয়া জেলেরা হলেন পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী ইউনিয়নের চরদুয়ানী গ্রামের মৃত আমির হোসেন জোমাদ্দারের ছেলে মো. বেলাল মাঝি, দক্ষিণ জ্ঞানপাড়া গ্রামের সুলতান চৌকিদারের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন, তালুকের চরদুয়ানী গ্রামের আ.রব জোমাদ্দারের ছেলে মো. এমাদুল হক, একই এলাকার মৃত হাফেজ জোমাদ্দারের ছেলে মো: শাহিন, জ্ঞানপাড়া গ্রামের আতাহার আলীর ছেলে আবদুল হক ও পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী এলাকার বাহাদুর চাপরাশির ছেলে মো. ইমরান চাপরাশি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর বিকেলে পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র (বিএফডিসি) ঘাট থেকে তৌহিদুল ইসলামের মালিকানাধীন এফ বি মারিয়া নামের একটি ট্রলার ছয় জেলেকে নিয়ে মাছ শিকারের জন্য গভীর সমুদ্রে যাত্রা শুরু করে। কয়েক ঘণ্টা চালানোর পর ইঞ্জিন বিকল হয়ে ট্রলারটি স্রোতে ভাসতে ভাসতে দেশের জলসীমা অতিক্রম করে ভারতে চলে যায়। সেখানে একটি চরে থেকে নোঙর করা অবস্থায় ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি ভারতের বন বিভাগের কর্মীরা তাঁদের আটক করেন। অনুপ্রবেশের অপরাধে ট্রলারটিসহ ছয় জেলেকে মামলা দিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। পুলিশ আদালতের মাধ্যমে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বাড়ইপুর কারাগারে পাঠায়। সেখানকার আদালত তাঁদের তিন বছরের কারাদণ্ড দেন। এ সময় ভারতীয় একটি ফোন নম্বর থেকে কল করে ট্রলারটির মালিক তৌহিদুল ইসলামকে জেলেদের আটকের বিষয়টি জানানো হয়। পরে ওই বছরের ১৫ জানুয়ারি ওই ট্রলারটির মালিক নিখোঁজ ছয় জেলের নাম উল্লেখ করে পাথরঘাটা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, চলতি বছরের ১৭ আগস্ট ওই ছয় জেলের সাজার মেয়াদ শেষ হয়। সাজা শেষ হওয়ার দেড় মাস পর আজ বিকেলে কারাগার থেকে মুক্তি পায়। ট্রলারমালিকের পক্ষ থেকে বেনাপোল বন্দরে গাড়ি প্রস্তুত রাখে রিসিভ করার জন্য সেখান থেকে জেলেরা বাড়িতে আসবে বেনাপোল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন ভুঁইয়া আজ সাড়ে ৭টায় আলোকিত প্রতিদিন কে বলেন, জেলেরা আইনি প্রক্রিয়া শেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তাঁদের বাড়ির উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে। এদিকে তিন বছর পর জেলেরা মুক্তি পাওয়ায় পরিবারের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
আলোকিত প্রতিদিন /০৪ অক্টোবর ২৩/মওম