মোঃ নিশাদুল ইসলাম:
পরবর্তী চেয়ারম্যান নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত শূন্যই থাকছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের চেয়ার। ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান’-এর দায়িত্ব পাচ্ছেন না কেউ। জেলা পরিষদ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন-এখানে কোনো প্যানেল নেই। ফলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার সুযোগ নেই। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার ইন্তেকাল করেন গত সোমবার সকালে। শূন্য এ চেয়ার কে পূরন করবে- মৃত্যুর পর থেকে এ নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। প্যানেল চেয়ারম্যান নিয়ে বিবাদ শুরু হয় নতুন পরিষদের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই। পরিষদের প্রথম সভার পর সদস্য মো. আবদুল আজিজ মো. নাছির উদ্দিন এবং সনি আক্তার সূচীর নাম প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে প্রকাশ করা হয়। এরপরই বাদবাকি সদস্যরা অভিযোগ তুলেন চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার তার ইচ্ছেমতো প্যানেল চেয়ারম্যান মনোনীত করেছেন। এ নিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর কাছে অভিযোগের পর বিষয়টি উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। যা নিষ্পত্তিহীন অবস্থাতেই মারা যান চেয়ারম্যান। পরিষদের ৮ জন সদস্য প্রথমে ৯ই ফেব্রুয়ারি, এরপর ২৮শে মার্চ মন্ত্রী এবং সচিবের কাছে এনিয়ে দু’দফা লিখিত অভিযোগ দেন। যাতে পরিষদের প্রথম সভায় সকল সদস্যদের মতামত বা ভোট গ্রহণ ছাড়া চেয়ারম্যান তার অনুসারী ৩ সদস্যকে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচন করেন বলে অভিযোগ করা হয়। তাছাড়া সদস্যদের পাশ কাটিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র এবং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের অনুকূলে অর্থ বরাদ্দ প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার বিষয়েও অভিযোগ করা হয়। এসব অভিযোগকে কেন্দ্র করে জেলা পরিষদের মাসিক সভা উত্তপ্ত হয়। অভিযোগকারী সদস্যদের সভা থেকে বের হয়ে যেতে বলা হয় এবং এনিয়ে চেয়ার ছুড়ে মারার ঘটনাও ঘটে। এসব অভিযোগের তদন্তে কমিটি করেও মন্ত্রণালয় পরে আবার তদন্ত স্থগিত করে। জেলা পরিষদ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান জানান, আইনে বলা আছে ৩ সদস্যবিশিষ্ট প্যানেল চেয়ারম্যান থাকবেন। তারমধ্যে একজন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য থাকবেন। এই ৩ জনের মধ্যে যিনি ১ নম্বর থাকবেন তাকে প্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথম দায়িত্ব দেয়া হবে। তিনি অক্ষম হলে ২য় জন, মানে এইভাবে। কিন্তু এখানে তো প্যানেলই গঠন হয়নি। সাধারণত পরিষদের প্রথম যে সাধারণ সভা হয় সেখানে সদস্যদের মধ্যে থেকে কণ্ঠভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আগে কিভাবে হয়েছে তাতো আমি জানি না, তখন আমি এখানে ছিলাম না। তবে সেটা নিয়ে হাইকোর্টে মামলা হয় এবং বাতিলও হয়। এরপর আবার রিট হয়, এরপ্রেক্ষিতে আবার অ্যাপিলেট ডিভিশনে যায়। সেখান থেকে রায় হওয়ার পর বলা হয়েছিল যে নতুন করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্যে। প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচনের জন্যে সাধারণ সভা আহ্বান করার বিষয়ে ফাইল উত্থাপন করা হয়েছিল। যেটি চেয়ারম্যানের দপ্তরেই ছিল। এরমধ্যেই তিনি মারা গেলেন। এখন যেহেতু নির্বাচিত চেয়ারম্যান নেই, সেক্ষেত্রে প্যানেলের প্রশ্ন আসে না। কারণ মূল ব্যক্তিই যেখানে নেই সেখানে আবার প্যানেল করবে কে। যেহেতু প্যানেল চেয়ারম্যানই নেই। তাহলে দায়িত্ব কাকে দেবে। এদিকে চেয়ারম্যান আল মামুন সরকারের মৃত্যুর পর গতকাল জেলা পরিষদ ছিল সুনসান নীরব। সকাল সাড়ে ১১টায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কক্ষে বৈঠক করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করতে আসেন সদস্য বাবুল আখতার। তিনি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জানতে চান এখন আমাদের কী হবে।
আলোকিত প্রতিদিন /০৫ অক্টোবর ২৩/মওম