হেলাল উদ্দিন, টেকনাফ
সতর্কসংকেত জারি থাকায় সেন্ট মার্টিনে বেড়াতে গিয়ে আটকা পড়েছিলেন সাড়ে তিনশতাধিক পর্যটক। শনিবার বিকেলে এমভি বার আউলিয়া নামে জাহাজে করে তাঁরা নিরাপদে টেকনাফে ফিরেছেন।এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)মো আদনান চৌধুরী।তিনি বলেন, আবহাওয়ার সতর্কসংকেত প্রত্যাহার করার পর শনিবার থেকে আবার জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে।আটকাপড়া পর্যটকেরা নিরাপদে ফিরেছেন।তারা জাহাজ থেকে নেমে স্ব স্ব গন্তব্য রওয়ানা হচ্ছেন।ইউএনও বলেন,টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে পযটকবাহী জাহাজ ও পণ্যবাহী সার্ভিস ট্রলার চলাচল অনুমতি দেওয়া হলেও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।গত মঙ্গলবার মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ৩নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত জারি করায় টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে জাহাজসহ নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন।গতকাল শুক্রবার বিকেলে আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্কসংকেত প্রত্যাহার করে নেয়।ফলে আজ শনিবার সকালে পুনরায় জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে।তবে এ নৌপথে কেয়ারি সিন্দাবাদ নামে আরও একটিসহ আজ থেকে দুটি পযটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হযেছে।উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, শনিবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে ৪১৪পযটক নিয়ে এমভি বার আউলিয়া নামে জাহাজটি সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে রওনা দেয়।দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জাহাজটি সেন্ট মার্টিনের জেটিতে নোঙর করে।আবার বেলা তিনটার দিকে আটকেপড়া সাড়ে তিনশতাধিক পর্যটকসহ আজ নতুন করে বেড়াতে যাওয়া আরও প্রায় দেড়শতাধিক পর্যটক নিয়ে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ)টেকনাফের দমদমিয়া ঘাটে পৌঁছায়।তবে আড়াইশতাধিক পর্যটক রাত যাপন করার জন্য সেন্ট মার্টিনে রয়ে গেছেন। গত চারদিন ধরে আটকে থাকা ওই পর্যটকদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৭৭জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী রয়েছেন এ ছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং নীলফামারী মেডিকেল কলেজের ৩৮জন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ওই পর্যটকদের মধ্যে রয়েছেন তারাও বিকেলে এমভি বার আউলিয়া জাহাজে করে টেকনাফে ফিরেছেন বলে জানান সেন্ট মার্টিন পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. সেলিম হোসেন ও সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান। দমদমিয়া জাহাজঘাটে গিয়ে দেখা যায়, এমভি বার আউলিয়া জাহাজটি বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে এসে ঘাটে পৌঁছায়।জাহাজটি ভিড়ানোর পর পর পযটকেরা জাহাজ থেকে নেমে স্ব স্ব গন্বব্য রওয়ানা হওয়ার জন্য বাস বা নিজস্ব গাড়িতে উঠতে দেখা গেছে।অপরদিকে,এরআধা ঘন্টা পর সন্ধ্যা ছয়টায় কেয়ারি সিন্দাবাদের নিজস্ব ঘাটে এসে পৌছায়। জামালপুরের বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা রেজওয়ানুর রহমান বলেন,স্ত্রীকে সঙ্গে করে বেড়াতে গিয়ে চারদিন আটকাপড়েন।শুধু আমরা নয়,প্রায় চার শতাধিকের মতো পর্যটক আটকা পড়েছিল।সেন্টমার্টিন দ্বীপের অধিকাংশ হোটেল-রেস্তোরা বন্ধ থাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণের খাবার পাওয়া যায়নি।ডাল, আলুভর্তা দিয়ে ভাত খেয়েছি দুই বেলা।শুধু আমরা নয়,দ্বীপের মানূষের একই অবস্থা ছিল।তেমন কোনো সমস্যা না হলেও কিছুটা ভয় তো ছিলই।এখন বাড়ি ফেরার তোড়জোড় করছেন। ঢাকার থেকে বেড়াতে আসা পযটক ফেরদৌস আরা ও আলী হোসেন বলেন,‘আটকাপড়ার সময় সেন্টমাটিনে খাদ্যপণ্যে সংকট ছিল। ওইসময় ডিম না পেয়ে ছেলে-মেয়েদের খাবার নিয়ে খুবই কষ্ট হয়েছে।পাশাপাশি টাকা-পয়সা নিয়ে ও ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।’
আলোকিত প্রতিদিন/এপি