ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা/ ভৈরবের বাতাসে আর্তনাদ

0
274

 

আলোকিত ডেস্ক :

 

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। বগি দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। এতে বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ রিপোর্ট লেখা পযর্ন্ত এ  দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আহত হয়েছেন আরও বহু যাত্রী। তবে হতাহতের সংখ্যা শতাধিক হতে পারে বলে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। সাংবাদিকদের পাঠানো এক ক্ষুদে বার্তায় এ আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার জগন্নাথপুর রেল ক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার সিরাজ-উদ-দৌলা খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রেলওয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা থেকে একটি কন্টেইনারবাহী ট্রেন ভৈরব স্টেশনে প্রবেশ করছিল। তার আগ মুহূর্তে ভৈরব থেকে এগারসিন্দুর ট্রেন ঢাকার দিকে রওনা হয়েছিল। জগন্নাথপুর রেল ক্রসিং এলাকায় এগারসিন্দুর ট্রেনের শেষের দুই-তিনটি বগিতে কন্টেইনারবাহী ট্রেনের ইঞ্জিন আঘাত করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ট্রেনের নিচে অনেক মানুষ চাপা পড়ে আছে। ক্ষতিগ্রস্ত কোচগুলোতে অনেকে আহত অবস্থায় পড়ে আছে। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছে। এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ভৈরব স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার মুহূর্তে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মালবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে এগারসিন্দুর বেশ কয়েকটি বগি দুমড়েমুচড়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, উল্টে যাওয়া বগির নিচে অনেক যাত্রী চাপা পড়েছে। এ ছাড়া রেললাইনের ওপর অনেকের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ: ভৈরবে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার আফছার উদ্দিন। তিনি বলেন, উদ্ধার কাজের জন্য রিলিফ ট্রেন রওনা হয়েছে। উদ্ধার কাজ শেষ হলে তারপরে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। রেলওয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা থেকে একটি কন্টেইনারবাহী ট্রেন ভৈরব স্টেশনে প্রবেশ করছিল। তার আগ মুহূর্তে ভৈরব থেকে এগারসিন্দুর ট্রেন ঢাকার দিকে রওনা হয়েছিল। জগন্নাথপুর রেল ক্রসিং এলাকায় এগারসিন্দুর ট্রেনের শেষের দুই-তিনটি বগিতে কন্টেইনারবাহী ট্রেনের ইঞ্জিন আঘাত করে। মূলত সিগনালিংয়ের কোনো জটিলতার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনায় হতাহতদের উদ্ধারে পুলিশ-ফায়ার সার্ভিস: দুর্ঘটনায় হতাহতদের উদ্ধারে ঘটনাস্থলে কাজ করছেন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। দুর্ঘটনায় বহু মানুষ হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।  ভৈরব বাজার ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার রাসেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী এগারসিন্দুর গোধূলি ও ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কন্টেইনারবাহী একটি ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আমরা বিকেল পৌনে ৪টার দিকে দুর্ঘটনার খবর পাই। এতে অনেকে হতাহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধারে ঘটনাস্থলে কাজ করছেন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তবে কতজন নিহত বা আহত হয়েছেন তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। এদিকে দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে হাজারো উৎসুক জনতা ভিড় করেছে। উপস্থিত হয়েছেন দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনে থাকা যাত্রীদের স্বজনরা। তাদের অভিযোগ, স্টেশন মাস্টারের অবহেলায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। নিখোঁজদের জন্য স্বজনদের আহাজারি: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন। হতাহতদের উদ্ধারে কাজ শুরু করেছেন পুলিশ ও ফায়ার সাভিসের কর্মীরা। দুর্ঘটনাস্থলে হতাহতদের স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা গেছে। জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী এগারসিন্দুর গোধূলি ও ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কন্টেইনারবাহী একটি ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই অনেকের মৃত্যু হয় বলে খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের ফলে ট্রেনের কয়েকটি বগি দুমড়ে-মুচড়ে গিয়ে নিচে চাপা পড়েন অনেকে। উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে র‌্যাব: দুর্ঘটনায় উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদস্যরা। র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানিয়েছেন। উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করছে রেলওয়ে-জেলা পুলিশও: ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করছে রেলওয়ে পুলিশ ও জেলা পুলিশ। এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের জনসংযোগ কর্মকর্তা (উপপ্রধান তথ্য অফিসার) এ কে এম কামরুল আহছান। ভৈরব বাজার নদী ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ আজিজুল হক ১৫ মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সন্ধ্যা ৬টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট উদ্ধারকাজ করছিল। কমলাপুর রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক মাসুদ সারওয়ার বলেন, ঢাকা থেকে একটি কন্টেইনারবাহী ট্রেন ভৈরব স্টেশনে প্রবেশ করছিল। তার আগ মুহূর্তে ভৈরব থেকে এগারসিন্ধুর ট্রেন ঢাকার দিকে রওনা হয়েছিল। জগন্নাথপুর রেল ক্রসিং এলাকায় এগারসিন্দুর ট্রেনের শেষের দু-তিনটি বগিতে কন্টেইনারবাহী ট্রেনের ইঞ্জিন আঘাত করে। মূলত সিগনালিংয়ের কোনো জটিলতায় এমনটা ঘটেছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার পর থেকে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। উদ্ধার কাজের জন্য রিলিফ ট্রেন রওনা হয়েছে। উদ্ধার কাজ শেষ হলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে। মাইকিং করে উৎসুক জনতাকে সরে যাওয়ার অনুরোধ:  এ ঘটনায় উদ্ধারকাজে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্টদের। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতা ব্যাপকহারে ভিড় করছেন। যার কারণে উদ্ধারকাজে ধীরগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন মাইকিং করে বার বার তাদের সরে যাওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছেন। সবশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ট্রেন দুর্ঘটনায় উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ। এরই মধ্যে ঢাকা থে‌কে উদ্ধারকারী রি‌লিফ ট্রেন ভৈরবের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। ভৈরব বাজার ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার রাসেল বলেন, আমরা বিকেল পৌনে ৪টার দিকে দুর্ঘটনার খবর পাই। হতাহতদের উদ্ধারে ঘটনাস্থলে কাজ করছেন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। দুর্ঘটনায় কতজন নিহত হয়েছেন তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।  এ বিষয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার আফছার উদ্দিন বলেন, উদ্ধারকাজের জন্য রিলিফ ট্রেন রওনা হয়েছে। উদ্ধার কাজ শেষ হলে তারপরে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।

 

আলোকিত প্রতিদিন/ ২৩ অক্টোবর ২৩/ এসবি

 

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here