সহিংসতার শঙ্কা, জনমনে আতঙ্ক

0
299

 

 আলোকিত ডেস্ক:

 

সরকার পতনের একদফা দাবিতে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। দলটির দাবি, এ সমাবেশ থেকেই সরকার পতনের মহাযাত্রা শুরু হবে। এতে বিএনপির সঙ্গে যুক্ত হবে ৩৬টির বেশি রাজনৈতিক দল। অন্যদিকে, এদিন রাজপথ দখলে রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছে আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন। এক্ষেত্রে পরিস্থিতি কোনো সংঘাতের দিকে যাচ্ছে কিনা এ নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে এখন জনসাধারণের মনে। রাজনীতিতে ‘শান্তিপূর্ণ পরিবেশ’ বজায় রাখার ব্যাপারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী বিএনপির তরফ থেকে পশ্চিমা কূটনীতিকদের আশ্বস্ত করার পরেও রাজনীতি সংঘাতময় হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিএনপি নেতাদের দাবি – সরকার পরিকল্পিতভাবে তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সহিংস হামলা চালাচ্ছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ দাবি করছে বিএনপি নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির নামে নিজেরাই সহিংস হয়ে উঠছে। এক্ষেত্রে দুই দলের মধ্যে কোন আপোষ, মীমাংসার সম্ভাবনা দেখছেন না বিশ্লেষকরা। বরং সামনে সংঘাত আরও ঘনীভূত হতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রতিশ্রুতি দেয়া সত্ত্বেও কি বাংলাদেশের রাজনীতি আবার সহিংস রূপ নিচ্ছে? এদিকে ২৮ তারিখের এ কর্মসূচি রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। কেননা একই দিন ঢাকায় সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন। আওয়ামী লীগ নেতারা একদিকে যখন রাজপথ দখলে রাখার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, অন্যদিকে সরকার পতনের দাবিতে মহাসমাবেশকে সফল করতে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলো। দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে এদিন রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। গত ২৩ অক্টোবর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন স্বাভাবিক থাকে, জনজীবন যাতে ব্যাহত না হয়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলেছি। জেলা প্রশাসকদেরও এ বিষয়ে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি কেমন হবে? গত কয়েক মাস ধরে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি পালন করলেও তা বেশ শান্তিপূর্ণভাবেই চলেছে। কোথাও বড় কোন হামলার খবর পাওয়া যায়নি। কিন্তু বিএনপির জুলাইয়ের পদযাত্রা কর্মসূচিকে ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় নতুন করে প্রশ্ন উদ্রেক করেছে যে সামনের দিনের কর্মসূচিগুলোয় সংঘাত আরও প্রকট রূপ নেবে কিনা। এবার ২৮ অক্টোবর এবং তার পরবর্তী কর্মসূচিতে কি হয়- তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি দেখে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিরোধী দলের কর্মসূচি দমনে কঠোর হতে পারে। বিএনপিও সামনে পাল্টা শক্ত অবস্থান নিতে পারে। সরকার পরিকল্পিতভাবে সহিংস হয়ে উঠছে বলে দাবি করছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি বলেন, নির্বাচনের শেষ সময়ে এসে সরকারের মধ্যে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার উগ্র কামনা বেশ জোরদার হয়েছে। যে কারণে  জুলাইয়ে বিএনপির সমাবেশে এবং এর আগে ঢাকা-১৭ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলমের ওপর হামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগকে আতঙ্ক এমনভাবে পেয়ে বসেছে যে আতঙ্কের খোলস ঝেড়ে ফেলার জন্য তারা এখন আক্রমণ শুরু করেছে যেটা আমাদের পক্ষ থেকে কাম্য ছিল না। এক্ষেত্রে পুলিশ সরকারের হয়ে কাজ করছে, সামনে পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হবে বলে আশঙ্কা করছেন আলাল। আমরা উদ্বেগ ও আশঙ্কার মধ্যে আছি কারণ সরকার নানা ধরনের নিবর্তনমূলক পদক্ষেপের মাধ্যমে বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ কব্জা করে নিয়েছে। বিভিন্ন জেলায় আমাদের যে কর্মীরা আহত হয়েছেন তাদেরকেই আবার আসামি করে মামলা করা হয়েছে। শেষ দিকে এসে তারা আমাদের নেতাকর্মীদের কারাগারে নিক্ষেপ করছে। পুলিশ শুধু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে নিরাপত্তা দেয় অন্য কাউকে নিরাপত্তা দেয়ার ব্যাপারে তাদের উৎসাহ নেই। এদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি সুযোগ পেলেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায় তার উদাহরণ এই পদযাত্রা কর্মসূচি। পদযাত্রার নামে তারা পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে, হাসপাতাল-ব্যাংকে ভাঙচুর করেছে, মানুষের যানবাহন নষ্ট করেছে। তারা ক্ষমতায় থাকার সময় আবার বিরোধী দলে থাকার সময় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। এখন তারা সেই দোষের দায়ভার চালাচ্ছে আওয়ামী লীগের উপর। এই সহিংসতা দমনে সরকার কঠোর ভূমিকায় যাবে বলে হুঁশিয়ারি করেন তিনি। এদিকে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে, নির্বাচনের পরিবেশ কেমন এবং নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে কিনা তা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সফর, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বিভিন্ন দলের সাথে বৈঠক, মার্কিন ভিসা নীতি থেকে ধারণা করা যায় যে সেই নজরের পরিধি যথেষ্ট বিস্তৃত। সব মিলিয়ে এই নির্বাচন ঘিরে আগ্রহ শুধু দেশের ভেতরেই নয়, সারা বিশ্বেই তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নির্বাচনের পরিবেশের বিষয়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেগুলোর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করছে। এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ঢাকা-১৭ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলমের ওপর হামলার বিষয়ে জাতিসংঘ, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর, ২৭টি দেশের প্রতিনিধি হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সেইসঙ্গে আরও ১২টি দেশের হাইকমিশনার এবং রাষ্ট্রদূত তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বলে তিনি জানান। এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের ওপর নজর রাখছে এবং তারা ধরতে পারছে যে অপরাধ কোন জায়গা থেকে সংঘটিত হচ্ছে কারা হামলা চালাচ্ছে। তিনি বলেন। গত এপ্রিলে ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়, সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে নিজেদের অবস্থান আগে থেকেই স্পষ্ট করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২১ সালে ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কাজে জড়িত থাকার’ কারণে র‍্যাব এবং এর সাতজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল দেশটি। সম্প্রতি মার্কিন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ঘন ঘন বাংলাদেশে সফর করছেন এবং গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং সুষ্ঠু ও আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছেন। গত মে মাসে নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অবাধ অনুষ্ঠানকে ঘিরে বাংলাদেশের নাগরিকদের ওপর কঠোর ভিসা নীতি আরোপ করে ওয়াশিংটন। যেখানে বলা হয়েছে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে এমন যে কারও ভিসা বাতিল করতে পারবে দেশটি। নির্বাচন সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত করার আহ্বান এসেছে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের নতুন হাইকমিশনার সারাহ কুকের থেকেও। এসময় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণ জানালে মিস কুক একে স্বাগত জানান। এ ব্যাপারে গবেষক ও রাজনীতি বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সবসময় আমাদের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের পরপর দুটো নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় এবারের নির্বাচন নিয়ে তাদের আগ্রহটা বেশি। এখন তারা নির্বাচনের সময় পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকতে চাইবে। ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং কূটনীতিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী এবং আন্তর্জাতিক নানা সংগঠনের প্রতিনিধিরা অনেকদিন ধরেই আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি থেকে শুরু করে ছোট-বড় অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে। ঢাকাস্থ বিভিন্ন দূতাবাসের অনুষ্ঠানগুলোতেও নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে কথা বলছেন বিদেশি দূতরা। যাতে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কেউ বাধা দিতে না পারে। সমঝোতার রাস্তা নেই? নির্বাচনের কয়েক মাস আগে এই সময়ে রাজনীতির মাঠ ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন গবেষক ও রাজনীতি বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি জানান, বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না এবং এই এক দফা দাবিতে তারা মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। যত আন্দোলন করার হয় তারা করবে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগও পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে। এই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে এই পরিস্থিতি সামাল দেয়া অসম্ভব হতে পারে বলে তিনি মনে করছেন। হামলা, সংঘর্ষ চলতেই থাকবে – যদি না এক পক্ষ নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু এখানে কোন পক্ষই নিজেদেরকে নিবৃত্ত করবে বলে মনে হয় না। তিনি বলেন। বিএনপিকে দমন করতে সরকার কঠোর অবস্থানে গেলেও বিএনপির এখন পর্যন্ত সংঘাতে না জড়ানোকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন তিনি। তার মতে, সরকার বিভিন্ন জায়গায় বিএনপিকে বাধা দিচ্ছে। বিএনপি এখন পর্যন্ত সংঘাত তৈরি করছে না বা অন্যদের উপর আক্রমণ করছে না। কিন্তু তারা কতদিন এই শান্তিপূর্ণ ভূমিকায় থাকবে সেটাও একটা বড় প্রশ্ন। দুই পক্ষই যদি মারমুখী হয়ে যায় তাহলে সামনের দিনগুলোয় পরিস্থিতি খুব খারাপের দিকে যাবে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন। দুই পক্ষের মধ্যে কোন ধরনের আপোষ বা মীমাংসার রাস্তা দেখছেন না তিনি। এর কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসতে চাইবে। আর ক্ষমতায় থাকতে হলে তাকে নির্বাচন ম্যানিপুলেট করতে হবে। সরকারের এই কর্মকাণ্ড যদি বিরোধীরা মেনে না নেয়, কঠোর অবস্থান নেয় তাহলে সংঘাত-সংঘর্ষ অনিবার্য। সহিংসতার যত ঘটনা: গত ১৮ই জুলাই বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের হামলায় একজন নিহত, প্রায় দুই হাজার আহত এবং এক হাজারের বেশি মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে বিএনপি তাদের আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানিয়েছে। ওই বিবৃতি অনুযায়ী দেশের মোট আট জেলায় তাদের নেতাকর্মীরা হামলার শিকার হয়েছেন। এরমধ্যে লক্ষ্মীপুরে পদযাত্রা চলাকালে কৃষক দলের নেতা সজীব হোসেনকে পদযাত্রার পেছন থেকে টেনে নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে বলে তারা অভিযোগ করেন। এ সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গুলি চালালে তিন শতাধিক নেতাকর্মী আহত হবার অভিযোগ করা হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে। খাগড়াছড়িতে পদযাত্রা চলাকালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে অন্তত দুইশ’ নেতাকর্মী এবং ফেনীতে প্রায় দেড়শ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হন, যাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। খাগড়াছড়িতে বিএনপি কার্যালয়ে হামলা চালানো হয় এবং বিএনপির ৫০ জনের বেশি নেতা কর্মীকে গ্রেফতারের কথা জানায় দলটি। বগুড়ায় পদযাত্রা কর্মসূচি চলাকালীন পুলিশ গুলি চালালে প্রায় দেড় শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। এ সময় পুলিশের টিয়ারগ্যাস শেলের আঘাতে স্থানীয় একটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা আহত হন। কিশোরগঞ্জেও পুলিশের হামলায় দেড় শতাধিক নেতাকর্মীকে আহত হন। এছাড়া জয়পুরহাটে অর্থ শতাধিক নেতাকর্মী, পিরোজপুর জেলায় পুলিশের অতর্কিত হামলা ও গুলিবর্ষণে ২০ থেকে ২৫ জন নেতা কর্মী গুরুতর আহত হন। নেত্রকোনা জেলায় বিএনপির পদযাত্রায় অংশ নেয়ার জন্য আসার পথে দুইজন এবং কর্মসূচি শেষে ফেরার পথে একজনের উপর হামলা চালিয়ে সন্ত্রাসীরা গুরুতর আহত করে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। এছাড়া ঢাকায় সরকারি বাঙলা কলেজের সামনে ছাত্রলীগ কর্মীদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিএনপি’র কিছু নেতাকর্মী কলেজ গেটে ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ ওঠে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। কোথাও কোথাও বিএনপির পদযাত্রা শেষে আওয়ামী লীগের ‘শান্তি’শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিভিন্ন স্থানে মোটরসাইকেল ও গাড়ি ভাঙচুরের খবর পাওয়া যায়। এসব সংঘাতের ঘটনায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি, কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনের দাবিতে বিএনপি এবং আরও ৩৬টি দল গত ১২ই জুলাই ঢাকায় সমাবেশ করে পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। তারই অংশ হিসেবে ঢাকাসহ সারা দেশে পদযাত্রার কর্মসূচি পালন করছে দলটি।

 

আলোকিত প্রতিদিন/ ২৫ অক্টোবর ২৩/ এসবি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here