মো. জাকির হোসেন:
গত ১৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে এক সমাবেশে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ২৮ অক্টোবর শনিবার নয়াপল্টনে মহাসমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি। দিবস টিকে আন্দোলনের মহাযাত্রা শুরু বলে ঘোষণা দিলেও এ সমাবেশের স্থান নিয়ে চলছে অনিশ্চয়তা। বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে ডিএমপিকে চিঠি দিলেও ডিএমপি সূত্র জানায়, নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি পাচ্ছে না দলটি। যদিও দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা মহাসমাবেশের জন্য অনুমতি চাইনি, শুধু অবহিত করেছি। গত বুধবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার খন্দকার মহিদ উদ্দিন স্পষ্ট করে বলেছেন, সমাবেশের জন্য যে স্থান নির্ধারণ করা হবে বিএনপিকে সে স্থানেই সমাবেশ করতে হবে। নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়ে পুলিশ যদি গোলাপবাগ মাঠ বা অন্য কোথাও সমাবেশ করার কথা বলে তাহলে কী করবে বিএনপি? এমন প্রশ্ন গোড়পাক খাচ্ছে সবার মাঝে। নাকি ১০ ডিসেম্বরের পরিণতি হতে যাচ্ছে। যদিও নেতারা বলছেন, নয়াপল্টন ছাড়া বিএনপি বিকল্প কিছু ভাবছে না। যেকোনো কিছুর বিনিময়ে সমাবেশ করতে চায় দলটি। এমন অবস্থায় সংঘাতের আংশকা সাধারণ মানুষের মধ্যেও বিরাজ করছে। এদিকে বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা বলছেন, সরকারের হুমকি-ধমকিতে যদি সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করা হয়, তাহলে চূড়ান্ত আন্দোলনের নৈতিক পরাজয় ঘটবে। এ বিষয়ে দলটির নেতারা বলছেন, সরকার অনুমতি দিল কি দিল না তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করার দরকার আমরা তা করেছি। সমাবেশ সফল করতে যা যা প্রস্তুতি দরকার সবই আমাদের আছে। এ বিষয়ে বিএনপির নেতারা বলছেন, নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি না দিলে সরকার বড় ধরনের ভুল করবে। তখন পুরো শহরই সমাবেশের নগরীতে পরিণত হবে। এদিকে ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ সামনে রেখে পুলিশের ‘বিশেষ অভিযান’ চলছে বলে মনে করে বিএনপি। দলটি বলছে, শীর্ষ নেতাদের টার্গেট করে তালিকা ধরে মাঠপর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও সংগঠকদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর ও আশপাশের জেলার নেতারা অভিযানের প্রধান লক্ষ্য। প্রায় প্রতি রাতে নেতাদের বাড়িতে গিয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে ঢাকামুখী অনেক বিএনপি নেতাকর্মীদের আটক করা হয়েছে বলে গতকাল এক সংবাদ সন্মেলনে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘বিএনপিতো কোনো নিষিদ্ধ সংগঠন নয়। তবে কেন এত দমন-পীড়ন! আজকে শুধু দলীয় নেতাকর্মীই নয়, সমর্থকদেরও বিনাকারণে আটক করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার কতটা কাপুরুষ ও ভীরু হলে একটি সমাবেশকেই এত ভয় পায়। আর যখন লাগাতার কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে তখন সরকার আর সরকারে থাকবে না। এ বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার বলেন, বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি চায়নি, ডিএমপিকে অবহিত করা হয়েছে। অতএব, আমরা নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট স্থানে সমাবেশ করবই। আমরা সরকারকে আগেও বলেছি সেদিন আমরা বসে পড়ব না। তারপরও তারা ভয় পাচ্ছে।ঢাকা মহানগর দক্ষিন বিএনপির আহবায়ক বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আব্দুস সালাম, ঢাকায় সমাবেশের জন্য বিএনপি প্রস্তুত রয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেন, ইনশাল্লাহ আমরা নয়াপল্টনেই সমাবেশ করবো। সমাবেশের জন্য ঢাকা মহানগর বিএনপি প্রস্তুত। ব্যাপক জনসমাগম হবে। ঢাকায় মহাসমাবেশর প্রস্তুতি নিয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আতাউর রহমান চেয়ারম্যান বলেন, চারিদিক গ্রেফতার আতংক চলছে, তারপরও আমাদের প্রস্ততি থেমে নেই।ঢাকা মহানগর দক্ষিন শ্রমিকদলের আহবায়ক মো. সুমন ভূইয়া ও সদস্য সচিব বদরুল আলম সবুজ বলেন, ২৮ তারিখের বিএনপির মহাসমাবেশের জন্য শ্রমিকদলের নেতাকর্মীরা সমাবেশ সফলে যেকোন পরিস্হিতির স্বীকারে হউক প্রস্তুত রয়েছে।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২৬ অক্টোবর ২৩/ এসবি