হেলাল উদ্দিন টেকনাফ
সাগরপথে মালয়েশিয়াগামী একটি ট্রলার ভাসমান অবস্থায় কুলে টেনে নিয়ে আসলেন স্থানীয় জেলেরা। ওই ট্রলারটিতে প্রায় দেড়শতাধিক যাত্রী ছিলেন। তাদের অধিকাংশই রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু। তারা সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিযা যাচ্ছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোর ছয়টার দিকে স্থানীয় জেলেরা সাগরে ভাসমান অবস্থায় সাগর থেকে ট্রলারটি উদ্ধার করে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহেশখালীয়াপাড়া ঘাটের কূলে নিয়ে আসে।এতে করে প্রাণেরক্ষা পেলেন দেড়শতাধিক যাত্রী । এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান জহির আহমেদ। টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো জোবাইর সৈয়দ বলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে তাঁরা বিষয়টি জেনেছেন। পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হয়েছে। তবে ওইটি কোস্টগার্ড নিয়ন্ত্রিত এলাকা। একটি ট্রলার জব্দ করা হয়েছে। তবে কোন লোকজন পাওয়া যায়নি। নাম প্রকাশ ও অনিচ্ছুক কয়েকজন উদ্ধারকারী নৌকার মাঝি মাল্লারা জানান, ওই ট্রলারের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা জেনেছেন। রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির ও স্থানীয় দালালরা মিলে তাদেরকে রোহিঙ্গা শিবির থেকে বাহির করে আনা হয়। সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে দালাল চক্রের সদস্যরা গত পাঁচদিন ধরে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকার পয়েন্ট থেকে প্রায় দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুকে এই ট্রলারের তোলা হয়। পরে সাগরের বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরার পর আজ বৃহস্পতিবার ভোর রাতে ট্রলারের থাকা তিনজন মাঝিমাল্লারা ট্রলারটি কুলের কাছাকাছি এনে তাঁরা সাগরে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায়।এসময় ট্রলারটি ঢেউয়ের কবলে পড়ে ভাসতে থাকে। এক পর্যায়ে মাছ শিকার শেষে সাগর থেকে কুলে ফেরার সময় দুটি নৌকায় থাকা মাঝিমাল্লারা ট্রলারটি দেখতে পায়। ওই সময় ট্রলারে থাকা নারী-পুরুষদের আত্মচিৎকারে সহযোগিতায় এগিয়ে আসে নৌকার মাঝিমাল্লারা। এরপর নৌকা দুটিতে রশি বেধে ট্রলারটিকে টেনে কূলে নিয়ে আসা হয়।
তাঁরা আরও বলেন, কুলে নিয়ে আসার পর ট্রলারে যাত্রীরা যে যেদিকে পারে সেদিকে পালিয়ে যায়। অন্যতায় উদ্ধার করে নিয়ে আসার অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয়।এসময় আমরা তাদের কোনো ধরনের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করিনি। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্যকে অবহিত করা হয়। তিনি থানা ও ইউএনওকে অবহিত করেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে আরেকজন নৌকার মাঝি বলেন, ভাসমান অবস্থায় সাগর থেকে কয়েক বছর আগে কিছু রোহিঙ্গা নাগরিককে উদ্ধার করা হয়েছিল। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রোহিঙ্গা পারাপারের অভিযোগ এনে উল্টো আমাকে কারাগারে পাঠান। আজ ইচ্ছা করলে অনেক রোহিঙ্গা নাগরিককে আটকে রাখা যেত। কিন্তু ঝামেলা এড়াতে গিয়ে এ থেকে বিরত ছিলাম। প্রায় দেড়শতাধিক মতো নারী-পুরুষ ও শিশু ছিল ওই ট্রলারটিতে। তারা উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের বাাসিন্দা বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে কোস্টগার্ড স্টেশনের কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সুলাইমান কবিরের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার কোন ধরনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি