পোশাক কারখানায় নতুন নিয়োগ বন্ধ

0
289

আলোকিত ডেস্ক:

সরকার নির্ধারিত বেতন কাঠামো প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া পোশাকশ্রমিকদের বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এরই অংশ হিসেবে সব পোশাক কারখানায় সব ধরনের নতুন নিয়োগ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রতিটি পোশাক কারখানার ফটকে ‘নিয়োগ বন্ধ’ লেখা ব্যানার টাঙিয়ে দিতে সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দিয়ে নির্দেশ দিয়েছে সংগঠনটি।বৃহস্পতিবার পোশাকশিল্পের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে পোশাকশিল্প মালিকদের সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক, কারখানায় ভাঙচুর হলেও প্রয়োজনে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।সভায় সভাপতিত্ব করেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, বিজিএমইএর সিনিয়র সহ-সভাপতি এস.এম. মান্নান (কচি) ও সহ-সভাপতি ও পরিচালকরা। বিজিএমইএ সভাপতি জানান, কোভিড অতিমারি পরবর্তী পরিস্থিতি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ ইত্যাদি কারণে ক্রয়াদেশ কমে যায়, সম্প্রতিককালে শ্রমিক অসন্তোষ, কারখানার কাজ বন্ধ, শ্রমিক-কর্মচারীদের মারধর, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, মালামাল লুটপাট ইত্যাদি জটিল পরিস্থিত তৈরি হয়েছে। এ কারণে বিজিএমইএতে পোশাকশিল্প মালিকদের সমন্বয়ে একটি সভা হয়। তিনি আরও জানান, সভায় বিস্তারিত আলোচনা শেষে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখন থেকে বাংলাদেশে অবস্থিত সব পোশাক কারখানাতে সব ধরনের নতুন নিয়োগ বন্ধ থাকবে। প্রতিটি কারখানার গেটে ‘নিয়োগ বন্ধ’ লেখা সম্বলিত ব্যানার টাঙিয়ে দিতে হবে। সভার অন্য সিদ্ধান্তসমূহ কারখানা মালিকদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়া হয়। এসব সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে- যেসব কারখানায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর বা মারামারির ঘটনা ঘটেছে, সেসব কারখানা কর্তৃপক্ষকে নিকটস্থ থানায় ছবি ও ভিডিওসহ মামলা করতে হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নাম জানা না থাকলে ‘অজ্ঞাতনামা’ উল্লেখ করে মামলা করা যাবে। মামলা করার সঙ্গে সঙ্গে এর একটি কপি বিজিএমইএর অতিরিক্ত সিনিয়র সচিবের কাছ পাঠাতে হবে। যেসব কারখানার শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করে কাজ করা থেকে বিরত থাকবে বা কারখানা ছেড়ে বেরিয়ে যাবে, সেসব কারখানার মালিক বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা ১৩(১) এর বিধান মোতাবেক কারখানা বন্ধ করে দেবেন। যেসব কারখানায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও মারামারি হয়েছে, সেসব ঘটনার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ শিগগির বিজিএমইএর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বরাবর পাঠাতে হবে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বেতন বাড়ানোর দাবিতে সাভার ও গাজীপুরে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করছিলেন। তাদের দাবির মুখে গত মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। যেখানে পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এটি কার্যকর হবে আগামী ডিসেম্বর মাস থেকে। তবে সরকার নির্ধারিত এই বেতন কাঠামো প্রত্যাখ্যান করে ২৩ থেকে ২৫ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে শ্রমিক সংগঠনগুলো। চলমান আন্দোলনে এরই মধ্যে অন্তত চার শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া বেশ কিছু পোশাক কারখানায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের খবর এসেছে। অনেক কারখানা আন্দোলনের কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ১০ নভেম্বর ২৩/ এসবি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here