নিত্যপণ্যের দাম এখনো চড়া

0
394

আলোকিত ডেস্ক:

মাংস ও শাক-সবজির বাজারে স্বস্তি ফিরলেও অস্থিরতা রয়েছে আটা-চালের বাজারে। আবার দীর্ঘদিনের ‘ছিনিমিনি’ আছে চিনির দামে। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ, আদা ও রসুন। এদিকে ৮০ টাকার ঘর থেকে নেমে বাজারের অধিকাংশ সবজির দাম এখন পঞ্চাশের ঘরে। অনেকটা কমে এসেছে গরুর মাংসের দাম। তাই সপ্তাহের ছুটির দিনে মাংসের দোকানে ভিড়ও একটু বেশি। শুক্রবার (০১ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। শীতের সবজিতে বাজার যখন পূর্ণ। তখন শিম, কপি থেকে শুরু করে সকল সবজির দামই কমে এসেছে। ঝাঁজ কমেছে কাঁচামরিচের। তবে আগের অবস্থাতেই আছে আলুর দাম। নতুন আলুর দাম শতকের ঘর থেকে নেমে ৮০ টাকা হয়েছে। তবে পুরনো আলু তার জায়গা ধরে রেখেছে। বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। এদিকে শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, খোলা আটা হচ্ছে কেজিতে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়। আর প্যাকেট আটার বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। একইভাবে খোলা ময়দা ৬০ থেকে ৬৫ এবং প্যাকেট আটা ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যা কয়েক মাস আগে কেজিতে আরও ১০-১৫ টাকা কমে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এদিকে কৃষকরা নতুন ধান ঘরে তুললেও সু-খবর নেই চালের বাজারে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বৃহস্পতিবারের বাজারদরের তালিকানুযায়ী, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকায়। মাঝারি চালের কেজি পড়ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা। আর সরু চালের কেজি পড়ছে ৬২ থেকে ৭৫ টাকা। টিসিবির হিসাবের বাইরে বাজারে প্রতি কেজি সরু চালের দাম ৯৫ টাকা পর্যন্ত দেখা গেছে। চালের দামে গত এক সপ্তাহে বড় কোনো পরিবর্তন না থাকলেও সরকারি সংস্থা টিসিবির হিসাবে গত এক মাসে মোটা চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ২ শতাংশ। মাঝারি চালের দাম বেড়েছে ৬ শতাংশ। আর সরু চালের দাম বেড়েছে ৪ শতাংশ। বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এইচ আর খান পাঠান বলেন, ধানের উৎপাদন ভালো। নতুন ধানের চাল বাজারে আসতে শুরু করেছে। তাতে চালের দাম আর বাড়ার সম্ভাবনা নেই। চালের মতো ডালের বাজারও এখনো চড়া। টিসিবির হিসাবে বাজারে মোটা, মাঝারি ও সরু মসুর ডালের কেজি ১০৫ টাকা থেকে ১৩৫ টাকা। গত এক সপ্তাহে ডালের দামে কোনো ওঠানামা নেই। এমনকি টিসিবির হিসাবে গত এক মাসের মধ্যে ডালের দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এদিকে সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম তো দূরের কথা চড়া দাম দিয়েও মিলছে না চিনি। খোলা চিনির জন্য ১৩০ আর প্যাকেটজাত প্রতি কেজির জন্য সরকার নির্ধারিত দাম ১৩৫ টাকা। কিন্তু রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৪৫ টাকা। প্যাকেটজাত লাল চিনির সরবরাহ নেই বললেই চলে। কোথাও মিললে তার জন্য গুনতে হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা।  উত্তর মুগদার মুদি দোকানি মিঠু বলেন, অনেক দিন ধরেই দোকানে চিনি রাখি না। দাম এখন বেশি, লাভ কম। কাস্টমারের সাথে শুধু ঝামেলা হয়। তাই চিনি বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি। চিনির দাম নিয়ে দুই দিন আগে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আপাতত চিনির দাম কমানোর কোনো সুযোগ নেই। কারণ চিনি আমদানি কর কমাতে এনবিআরকে চিঠি দেওয়া হলেও ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে তা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া দেশি চিনির উৎপাদন নেই এবং ভারতীয় চিনি আমদানিও বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে প্রায় আগের দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ-রসুন। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা। আমদানী করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-১১০ টাকা। এছাড়াও পাতাসহ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা কেজি। রসুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৯০-২১০ টাকা। নতুন আদা বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা কেজি। রাজধানীর শাহজাহানপুর বাজারের ক্রেতা সেলিম উদ্দিন বলেন, এখন তো সবকিছু দাম বেশি দিয়ে কিনতে হয়। মাঝেমধ্যে কোনো পণ্যের দাম একটু কমলে তাই ভালোই লাগে। তবে মাছ-মাংসের দাম খুব বেশি যে কমেছে, তা বলা যাবে না। ভোগ্যপণ্য বিপণনকারী কোম্পানি টিকে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আতহার বলেন, ভোগ্যপণ্যের দাম নতুন করে বাড়ার সম্ভাবনা নেই। ডলারের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকায় আমদানিতে খরচ এখনো বেশি পড়ছে। তাতে আপাতত দাম কমার পরিস্থিতিও নেই।

আলোকিত প্রতিদিন/ ১ ডিসেম্বর ২৩/ এসবি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here