আলোকিত ডেস্ক:
সিগারেটের বাট ও প্যাকেট—এসব প্লাস্টিক পণ্যের দূষণে বিশ্বে বছরে ২৬ বিলিয়ন বা ২৬০০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়। এই হিসাব হয়েছে মূলত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যয় ও সামুদ্রিক প্রাণ-প্রকৃতির ক্ষতির ওপর ভিত্তি করে। মুদ্রাস্ফীতি সমন্বয়ে নিলে গত এক দশকে এই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ১৮৬ বিলিয়ন ডলার। বিশ্বে মোট ধূমপানের অর্ধেক হয় চীনে; এই ক্ষতিতে দেশটির অবদান ২০ ভাগ। থাইল্যান্ডভিত্তিক তামাক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা গ্লোবাল সেন্টার ফর গুড গভর্ন্যান্স ইন টোব্যাকো কন্ট্রোলের (জিজিটিসি) এক গবেষণায় এই ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে বলে সাউথ চাইনা মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। জার্নাল টোব্যাকো কন্ট্রোলে ৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত নিবন্ধে গবেষক দেবোরাহ সিই লিখেছেন, বিশ্বের প্রায় সব দেশ প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা তৈরি করছে। বিশেষত একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ করছে। কিন্তু তামাক পণ্যে ব্যবহৃত প্লাস্টিক থেকে দূষণের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। প্লাস্টিকের দূষণ কমাতে সিগারেটের ফিল্টারকেও বিষাক্ত, ব্যাপক বিস্তারযোগ্য এবং সামুদ্রিক দূষণে দায়ী উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করে প্রতিরোধ করতে হবে। দেশগুলো বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যয় এবং বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতির নির্দিষ্ট হিসাব করে দূষণের জন্য তামাক কোম্পানিগুলোর কাছে ক্ষতিপূরণ চাইতে পারে। সিগারেট বাটের জঞ্জালই বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। আর প্লাস্টিক দূষণের উপাদানগুলোর মধ্যে এর অবস্থান দ্বিতীয়। এছাড়া গবেষণায় দেখা গেছে, সিগারেটের ফিল্টার ধূমপানের ক্ষতিও কমাতে পারে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় সিগারেট ফিল্টারকে একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক পণ্য হিসেবে চিহ্নিত করে একে নীতিনির্ধারকদের নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে আসছে। গবেষকদের মতে, সিগারেট ফিল্টার বিপজ্জনক বর্জ্য। কারণ এতে মাইক্রোপ্লাস্টিক ফাইবার এবং নিকোটিনসহ শত শত বিষাক্ত রাসায়নিক; সীসা, আর্সেনিক ও ক্যাডমিয়ামের মতো ভারি ধাতু রয়েছে। জিজিটিসির গ্লোবাল পাবলিক পলিসি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজির প্রধান দেবোরাহ সাই বলেন, সিগারেটের বাট শুধু আবর্জনা নয়; এগুলো আমাদের পরিবেশের জন্য টিক টিক করতে থাকা বিস্ফোরন্মুখ বিষাক্ত টাইম বোমার মতো। সিগারেটের বাট পানিকে দূষিত করে এবং সামুদ্রিক প্রাণিসহ জলজ জীবন ধ্বংস করে। স্থলভাগের প্রাণিদের জন্যও এটি বড় হুমকি। পাখিরাও অনেক সময় ফেলে দেওয়া সিগারেটের বাটকে খাবার মনে করে খেয়ে ফেলে।
আলোকিত প্রতিদিন/ ৭ ডিসেম্বর ২৩/ এসবি
