সৈয়দ রনো’র কবিতা : কাব্যের রং তুলি

0
427
কাব্যের রং তুলি
কাব্যের রং তুলি

কাব্যের রং তুলি
সৈয়দ রনো

বিবর্ণ পোশাকে ঢুকরে কেঁদে ওঠে আমার জন্মভুমি
কেউ না জানুক তুমিতো জান
গহীন অরণ্যে হারিয়েছে দেশমাতৃকার নাকফুল
হে আমার পরিপক্ক বিবেক
তুমি বলে দাও
এ জনপদে সস্তায় বিক্রি হয় মানবিক মূল্যবোধ
এখানে কেউ কাউকে বাসে না ভালো
হয় না শ্রদ্ধায় অবনত মস্তক

ধূমায়িত চায়ের কাপে ভাসতে থাকে আমার স্বদেশ
মধ্যরাতে দাবার চালে আইন হয়ে যায় খেলার ফুটবল
ঠিক তখন ষোল কোটি মানুষকে বৃদ্ধ আঙ্গুল দেখায়
রাজকীয় পোশাকধারী কিছু হায়না
সরাবের রেস্তোরায় হত্যাযজ্ঞের নৃত্যে
মেতে ওঠে ক্ষমতাবান অভিভাবক
মৃত্যুর শুনশান নীরবতায়
তখনও মাটি হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে কবি
ভাবুক মনে ভাবতে থাকে
এ এক নির্মম অবাঞ্চিত সময়

জেগে ওঠে মা মাটির ঘ্রাণে বেড়ে উঠা
কামনার উজ্জীবিত পৌরষ
শুধু ঘুমিয়ে পরে ভাগ্যবিধার
অসংখ্য সত্য আশ্রিত বাণী দলিল দস্তাবেজ
রূপক কিংবা নষ্টালজিয়ায় আক্রান্ত কোন গল্প নয়
ইতিহাসের বাস্তবতায় ধরাশায়ী হতে যাচ্ছে হাজার বছরের মিথ

লক্ষ লক্ষ মানুষের তাজা রক্তের নহর বেয়ে অর্জিত স্বাধীনতা আজ
খামখেয়ালী নেত্রীত্বের মহাসমুদ্রে ভাসতে ভাসতে তলিয়ে যাচ্ছে অতলান্তে
হে আমার অভাগা জাতির দন্ডমুন্ডের কর্তা
তুমি কি দেখতে পাচ্ছ না
রোদের খড়তাপে দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর নির্ঘুম চোখ
এই পলেস্তরা কিংবা ফ্যাকাশে মাটি তাও শুস্কতায় পরেছে বৈধব্যের সাজ

তুমি কি শুনতে পাচ্ছ না
এই ভয়াল নগরীর করুণ আত্মচিৎকার
একবার আমার চোখে দেখ
স্মৃতিচিহ্নের ধূলি কনায় গোটাদেশ এখন
মরুবাসীর বিধবা নগরী
পারবতীর ইচ্ছার চাতালে বন্ধি এখন
আমার প্রাপ্ত হিস্যার জল
মানি না মানবতা বিপর্যয়ের বাধ
গুড়িয়ে দাও
কাব্যের রং তুলির আঁচড়ে
পূর্ণতা পাক আমার আকাঙ্ক্ষার আসক্তি।

১৪ ডিসেম্বর ২০২৩

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here