আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ঐতিহাসিক দায়িত্ব’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি এই মন্তব্য করেন। এছাড়া গাজা সংঘাতের ‘নেতিবাচক আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক পরিণতি’ সম্পর্কেও সতর্ক করে দিয়েছেন এরদোয়ান। ১৫ ডিসেম্বর শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনালাপ করেন। সেখানেই এই মন্তব্য করেন তিনি। গত ৭ অক্টোবর হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার পর এদিনই প্রথম ফোনে কথা বলেন উভয় নেতা। বাইডেনের সঙ্গে ফোন কলের পর তুরস্কের প্রেসিডেন্সি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন- ইসরায়েলি হামলার তীব্রতা বৃদ্ধি এবং সংঘাত দীর্ঘায়িত হওয়ার ফলে নেতিবাচক আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক পরিণতি সৃষ্টি হতে পারে।’ আরও বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিঃশর্ত সমর্থন প্রত্যাহার হলেই তা দ্রুত যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা দিতে পারে।’ এএফপি বলছে, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনের বিষয়ে মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে সোচ্চার সমালোচকদের একজন হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ‘গাজার কসাই’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং ইসরায়েলকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ হিসেবে আ্যখায়িত করেছেন। বাইডেনের সঙ্গে ফোন কল চলাকালীন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান জোর দিয়ে বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই অঞ্চলে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি ঐতিহাসিক দায়িত্ব রয়েছে’। হামাসের সঙ্গে সংঘাতের শুরু থেকেই প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইসরায়েলকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে চলেছেন। কিন্তু গত মঙ্গলবার তিনি বলেছেন, গাজায় নির্বিচারে বোমা হামলা চালিয়ে বিশ্বব্যাপী সমর্থন হারাচ্ছে ইসরায়েল। মার্কিন এই প্রেসিডেন্টের মন্তব্যকে ইসরায়েলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত তার সবচেয়ে কঠোর সমালোচনা বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া গাজায় বেসামরিক হতাহতের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে তার উদ্বেগের কথা জানিয়েছে বলে বুধবার জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। আর বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস বলেছে, তারা ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব’ এই যুদ্ধ শেষ করতে চায়। তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, গাজায় তাদের যুদ্ধ চলতে পারে আরও কয়েক মাস। যদিও গাজার ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে এই সপ্তাহেই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে জাতিসংঘ। উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এরপর থেকে টানা দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহত হয়েছেন ১৮ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।
আলোকিত প্রতিদিন/ ১৫ ডিসেম্বর ২৩/মওম
