নুরুন্নবী নুরু:
রংপুরে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠাণ্ডায় বিপাকে পড়েছেন এই অঞ্চলের মানুষ । বিশেষ করে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ কষ্টে দিন পার করছে। তীব্র শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই অঞ্চলের ফুতপাতে বেশ জমে উঠেছে পুরনো গরম কাপড়ের বিক্রি । অঞ্চলের শহর ও গ্রাম অঞ্চলে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার পাশে অস্থায়ী পুরনো কাপড়ের দোকানগুলোতে সারা দিন ভিড় লেগেই থাকে। কম দামে ভালো মানের গরম কাপড় কিনতে পেরে সাধারণ মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করছেন। পাশাপাশি দোকানগুলোতে বিক্রি বেড়ে গেছে। শনিবার ১৩ জানুয়ারি সকালে রংপুর জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রংপুর নগরীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে পুরাতন কাপড়ের দোকান গুলোতে ভিড় করছেন দিনমজুর,ভ্যান চালক ও নিম্ন আয়ের মানুষজন। শীত নিবারণের জন্য তারা কম দামের এসব জ্যাকেট ও সোয়েটার কেনার চেষ্টা করছেন। এদিকে একটু উষ্ণতা পেতে মানুষ ভিড় করছেন ফুটপাতের হকার ও পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে। কম দামে কিনছেন সোয়েটার, জ্যাকেট, হুডি, রেজার, শাল, কানটুপি ও হাত মোজা। পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ীরা ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুর থেকেই পুরাতন কাপড়ের বান্ডিল (বেল) কিনে এই অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় এসব গরমের কাপড় বিক্রি করেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। পুরাতন কাপড়ের দাম কম, তাই নিম্ন আয়ের মানুষ কম দামে কাপড় কিনছেন। দিনমজুর আরিফুল ইসলাম বলেন, পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানে এসেছি, এই ঠাণ্ডায় তেমনটা কাজ করতে পারছিনা তাই কম দামে একটি জ্যাকেট কিনলাম । বদরগঞ্জ উপজেলার ভ্যানচালক কবির বলেন শীতে আর ঠান্ডা কারণে মনটা ভ্যান চালাতে পারিনা তাই কমদামে একটা জ্যাকেট কিনলাম টা পরে ভ্যান ভ্যান চালাবো তাতে শীত বেশি লাগবে না। পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ী মন্টু বলেন, গত কয়েকদিন থেকে এই এলাকায় কনকনে শীত নেমেছে। গরম কাপড়ও বিক্রি হচ্ছে বেশ। ২শ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে একটি ভালো জ্যাকেট পাওয়া যায় আমাদের কাছে। সোয়েটার ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় পাওয়া যায়। তাই এসব পুরাতন কাপড়ের দোকানে মানুষ ভিড় লেগেই থাকে। উত্তরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়ে তা অনেকটা মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। শীতের হাত থেকে রক্ষা পেতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শরীরের উষ্ণতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন দরিদ্র পরিবারগুলো। এমন আবহাওয়ায় ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানিয়েছেন, গত কয়েকদিন ধরে রংপুরের তাপমাত্রা ৭ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। বাতাসের আর্দ্রতা কাছাকাছি হওয়ায় বায়ুমন্ডল উত্তপ্ত হতে না পারায় সূর্যের নাগাল পাওয়া যাচ্ছে না। পরিণতিতে আবারো শীত জেঁকে বসেছে। মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ আরো দুই-তিনদিন থাকবে এরপর আবহাওয়া পরিস্থিতি ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । আগামী ১৬ই জানুয়ারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জানান, শীত মোকাবিলায় সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে জেলা প্রশাসনের। এরইমধ্যে নগরীর ৩৩ ওয়ার্ডসহ জেলার আট উপজেলা ও তিন পৌর এলাকায় সরকারিভাবে প্রথম পর্যায়ের ৪৬ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে ও দ্বিতীয় পর্যায় ১৩ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।শীত মোকাবিলায় আরো ২৫ হাজার পিস কম্বলের চাহিদা সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
আলোকিত প্রতিদিন/ ১৩ জানুয়ারি ২৪/ এসবি