মাইনুল হাসান মজনু:
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে ভেলাবাড়ী ইউনিয়নে ছাইহাটা বাঙ্গালী নদী পারাপারে নৌকা একমাত্র ভরসা। ছাইহাটা টেপুর ঘাট এলাকায় দির্ঘদিনেও সরকারি ভাবে সেতু নির্মাণ না করায় সারাবছর নৌকা দিয়ে পারাপারে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দুপারের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাইহাটা বাঙ্গালী নদীতে সেতু নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের। সরেজমিনে দেখা গেছে, ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের ছাইহাটা-বাঁশহাটা গ্রামের ভিতর দিয়ে চলে গেছে বগুড়ার অনেক পুরাতন চেলোপাড়া-চন্দনবাইশা সড়ক। সেই সড়ক দিয়ে গরু-মহিষের গাড়ীতে করে যমুনার চরের উৎপাদিত কৃষিপণ্য ও যমুনার বড় বড় রুই, কাতলা, আইড়-বাঘাইড়সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ জেলা শহরে এবং বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলায় বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হতো। সড়ক পথটি পরিবর্তণ করে জোড়গাছা গ্রামের ভিতর দিয়ে নতুন সড়ক নির্মাণ করা হলেও পূর্বের সেই পুরাতন সড়কটি আজও অবহেলিত রয়েছে। ছাইহাটা, বাঁশহাটা গ্রামের কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, প্রতিদিন এ ঘাট দিয়ে নৌকায় পারাপার হয়ে জেলা শহর বগুড়াসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া-আসা করছে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ। এখানে সরকারি ভাবে ৬০-৮০ মিটার দৈর্ঘ একটি আরসিসি ঢালাই সেতু নির্মাণ করা হলে এ পথে লোকজন চলাচলের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে এবং এই অঞ্চলের কৃষকদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হবে। কাঠ ব্যবসায়ী ইসাহাক জানান, ‘টেপুরঘাটে একটি সেতু হওয়া খুবই জরুরি। কারণ মেরুর চরে গাছ কিনে তরণীহাট এলাকায় নিতে কাজলা-কুতুবপুর হয়ে যেতে হয়। এতে গাছের ক্রয়মূল্য বেশি পড়ে। বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।’ কল্পনা নামের এক নারী জানান, খুব ঝুঁকি নিয়ে নৌকা পারাপার হতে হয়। খেয়াঘাটে মাঝি না থাকায় ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়।স্থানীয়রা আরও জানান, নদী পারাপারের সমস্যার কারনে ছাত্রছাত্রীদের স্কুল, কলেজে আসা যাওয়ায় অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। এনামুল হক নামের এক খামারী বলেন, নদীর পূর্ব পারের চরে প্রায় সাত আটটি গরুর খামার রয়েছে। খামারগুলোতে দৈনিক একশ দেড়’শ’ লিটার দুধ উৎপাদন হয়ে থাকে। কিন্তু নদী পারাপারের সমস্যার কারণে খামারিরা সঠিক সময়ে দুধ বাজারে নিতে পারেননা। ভেলাবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য রুবেল মন্ডল জানান, নদীর পূর্বপারে সাতটি বিএডিসি প্রকল্পের গভীর নলকূপ আছে। পারাপারের সমস্যার কারণে সেগুলো চুরি যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভেলাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মো.শরিফুল ইসলাম শিপন জানান, এলাকার সার্বিক উন্নয়নে এখানে সেতু নির্মাণ খুবই জরুরী। এখানে সেতু নির্মাণ করা হলে শোলারতাইড়, বাঁশহাটা, কালারতাইড়, কাজলা, কুতুবপুরসহ প্রায় সাতটি গ্রামের প্রায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার লোকের চলাচলের সুবিধা হবে। এখানে ৭০০ফিট সেতুর জন্যে এলজিইডির কাছে চাহিদা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আজও তার কোনো অগ্রগতি নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সারিয়াকান্দি কার্যালয়ের প্রকৌশলী মো. তুহিন সরকার বলেন, ‘এলাকাটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।