আবু সায়েম :
উখিয়ার ২০ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিমে অবস্থিত পাহাড়। ক্যাম্প থেকে অনুমানিক ৫ কিলোমিটার গহীনে নিরাপদ আস্তানা তৈরি করেছে মিয়ানমারের সন্ত্রাসী গোষ্ঠি আরসার সন্ত্রাসীরা। চারপাশ সবুজ হলেও এ পাহাড়ের নাম লাল পাহাড়। যেখানে ভয়ে সহজে কেউ যায় না। আর সেই পাহাড়ে দিনে অবস্থান করে রাতে ক্যাম্পে এসে নাশকতা, হত্যার মিশন বাস্তবান করে থাকে ‘আরসা’। সেই লাল পাহাড়ের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে দেশীয় ২২টি অস্ত্র, ৪টি হাত বোমা , ককটেল তৈরির সরঞ্জাম, একে ৪৭ সহ বিভিন্ন অস্ত্রের ১০০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব ১৫। এসময় গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরসার ৩ সন্ত্রাসীকে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছেন র্যাব ১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন। গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা হলো: উখিয়া বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মগবাগি উসমান(৩০), এফসিএন আব্দুল সালামের পুত্র মোঃ নেছার (৩৩), এবং উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কামাল হোসেনের পুত্র ইমাম হোসেন (২২)।গ্রেফতারকৃত ব্যাক্তিরা বিভিন্ন ক্যাম্পের বাসিন্দা ও আরসার নানা দায়িত্ব প্রাপ্ত। লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানিয়েছেন, লাল পাহাড়ে আরসা সন্ত্রাসীদের অবস্থানের খবর পেয়ে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করি। কিন্তু র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় অনেকেই। আভিযানিক দল ধাওয়া দিয়ে উসমান, নেছার ও ইমানকে আটক করেন । আর আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয় দেশি বিদেশি ২২ টি অস্ত্র, ১০০ রাউন্ড গুলি, ৪টি হাত বোমা , হাত বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও গোলাবারুদ। তিনি জানান, আরসার শীর্ষ গান কমান্ডার উসমান, মাইন তৈরিতে পারদর্শী নেছার ও গুলি চালাতে পারদর্শী ইমান। তিনজনই দিনে অবস্থান করে লাল পাহাড়ের আস্তানায়। যেখান রয়েছে দেশি-বিদেশি অস্ত্র, গুলি ও মাইন। যা নিয়ে রাতে ক্যাম্পে হামলা করে বলে স্বীকার করেছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ল’ এন্ড মিডিয়া মোঃ আবু সালাম চৌধুরী জানান,আরসা প্রধান আতাউল্লাহর নির্দেশে ক্যাম্পে গড়ে তোলা হয় ১২টি গান গ্রুপ। যারা ক্যাম্পে নাশকতা করছে। এব্যাপারে মামলা করে গ্রেপ্তারদের উখিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। র্যাব জানায়,গেলো বছর কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ক্যাম্পগুলো থেকে সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার ৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।তাদের কাছ থেকে সর্বমোট ৫ টি বিদেশি পিস্তল, ২ টি বিদেশি রিভলবার,৬ টি ওয়ানশুটারগান, ১৬ টি এলজি, ১ টি শর্টগান,৬ টি এসবিবিএল,৬৯ রাউন্ড গুলি,৩ রাউন্ড খালি খোসা,৫১.৭১ কেজি বিস্ফোরক এবং ২৮ টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। এদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সৃষ্ট এই ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারি ও তৎপরতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-১৫।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২৫ জানুয়ারি ২৪/মওম