সারিয়াকান্দিতে চর এলাকায় ভুট্টা চাষে কৃষকের মুখে হাসি 

0
186
সারিয়াকান্দিতে চর এলাকায় ভুট্টা চাষে কৃষকের মুখে হাসি 
সারিয়াকান্দিতে চর এলাকায় ভুট্টা চাষে কৃষকের মুখে হাসি 

মাইনুল হাসান মজনু:

সারিয়াকান্দি উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের বিশেষ করে চরাঞ্চলজুড়ে এখন শুধু ভুট্টার উঠতি চারা শোভা পাচ্ছে। ভালো ফলনের আশায় কৃষকরাও অধীর আগ্রহে জমিতে কাজ করছেন। সারিয়াকান্দি কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে কৃষি বিভাগ ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল ৫ হাজার ১০০ হেক্টর। আর আবাদ হয়েছে ৮ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ৮ শ’৪০ জন কৃষককে দুই কেজি করে মোট ১৬শ ৮০ কেজি ভুট্টার বীজ দেওয়া হয়েছে বিনামূল্যে। এছাড়াও ২০ কেজি করে ডি.এ.পি সার এবং ১০ কেজি করে এম.ও.পি সার দেওয়া হয়েছে বিনামূল্যে। অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এ মৌসুমে বৃহৎ পরিমাণের কৃষক ভুট্টার প্রণোদনা পেয়েছেন। কৃষকরা জানান, গত বছর বাজারে ভুট্টার দাম বেশি থাকায় অধিক লাভবান হয়েছেন। এ কারণে প্রণোদনা কর্মসূচির বাইরেও অনেক কৃষক তাদের জমিতে এ মৌসুমে ভুট্টার আবাদ করেছেন। এছাড়াও ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধি ও ফলন ভালো করতে কৃষকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সহযোতিা করছে কৃষি বিভাগ। কৃষকরা আরও জানান, নদীবেষ্টিত বিভিন্ন ইউনিয়নের চরাঞ্চলের অধিকাংশ প্রান্তিক কৃষকরা রবি মৌসুমে গত কয়েক বছর যাবৎ আগাম জাতের হাইব্রিড ভুট্টার চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। চরাঞ্চলে অন্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষ বেশি হয়। কম পরিশ্রম ও কম খরচে বেশি লাভজনক হওয়ায় ভুট্টাচাষ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গমের পাশাপাশি ভুট্টার ব্যবহারও বৃদ্ধি পেয়েছে। ভুট্টা গো-খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার হয়। তাছাড়া পোল্ট্রি শিল্পের জন্যও ভুট্টার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এক বিঘা জমিতে ভুট্টা হয় ৪০ থেকে ৪৫ মণ। বিঘা প্রতি আট থেকে দশ হাজার টাকা খরচ করে চাষিরা ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকার ভুট্টা বিক্রি করতে পারেন। চলতি রবি মৌসুমে জমিতে ফলনের আকৃতি ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটেছে। তারা এখন জমি পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেক কৃষক ভুট্টার জমিতে সাথী ফসল হিসেবে শীতকালীন শাক-সবজিরও আবাদ করেছেন। সারিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের শালুকার যমুনা চরাঞ্চলের ভুট্টাচাষি আব্দুল হামিদ সরদার বলেন, ভুট্টা চাষে খরচ অনেক কম। আর লাভ অনেক বেশি।এ বছর আমি ৭ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। এসময় ভুট্টাচাষি রহমান বলেন, এখানকার মাটি ভুট্টা চাষের উপযোগী হওয়ার আমাদের চরাঞ্চলে ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়। এবছর আমি পাঁচ বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছি। আশা করছি বিঘা প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ মণ ফলন পাবো। গত বছর চরাঞ্চলে ভুট্টার ফলন ভালো হওয়ায় এবছর আরও অধিক জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছি। আমার দেখা-দেখি যারা অন্য ফসল আবাদ করতো তারাও এবছ ভুট্টা চাষ করেছে। সারিয়াকান্দি উপজেলার কৃষি অফিসার আব্দুল হালিম বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে ক্রমাগতভাবে ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন ফসল হিসেবে কৃষক যেন চাষাবাদের ক্ষেত্রে সমস্যায় না পড়ে সেজন্য আমরা সরাসরি কৃষককে সঠিকভাবে ভুট্টাচাষ করার পদ্ধতি শিখিয়ে দিচ্ছি। ভুট্টায় বিভিন্ন রোগ ও পোকা আক্রমণ করলে সেগুলো দমনে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।তিনি আরও জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সব সময় ভুট্টার রোগ-পোকমাকড় দমন ও অধিক ফলনের জন্য কৃষকদেরকে প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

আলোকিত প্রতিদিন/১ ফেব্রুয়ারি ২৪/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here