খালেদ হাসান :
আসন্ন ৯ মার্চ দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এর আগে ২০১৯ সালের ৫ মে প্রথম অনুষ্ঠিত হয় ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। সে সময় প্রথমবারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন মোঃ ইকরামুল হক টিটু। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পরপরই সড়ক, ড্রেনেজ, সড়ক বাতি, বজ্র ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন ও নাগরিক সেবার মান উন্নয়নে ব্যাপক কাজ শুরু করেন। কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই করোনা মহামারী এবং পরবর্তীতে রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টির কারণে উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত হয়।এই দুই প্রতিবন্ধকতা না থাকলে নগরীর উন্নয়নকে আরো কাঙ্খিত লক্ষে নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল। এর পরেও নগরী জুড়ে ৯৫ কিলোমিটার সড়ক ও ৩ কিলোমিটার ফুটপাতের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। চলমান রয়েছে ৩৫৮ কিলোমিটার সড়ক ও ১০ কিলোমিটার ফুটপাতের কাজ। নগরীর জলবদ্ধতা নিরসনে শহরের কয়েকটি জায়গায় স্থাপন করা হয়েছে আন্ডারগ্রাউন্ড পাইপড্রেন।এর ফলে শহরের জলাবদ্ধতা অনেকাংশে নিরসন ঘটেছে। এ পর্যন্ত ৪৩ কিলোমিটার ড্রেন এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে চলমান রয়েছে ২৪৯ কিলোমিটার ড্রেনের কাজ। শহরের প্রধান খাল গুলোর প্রায় ১৬ কিলোমিটার অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও সংস্কারের মাধ্যমে খালের প্রশস্ততা ও প্রভাহ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। রাতের ভুতুড়ে অন্ধকার রাস্তা গুলো আলোকিত করার জন্য ১৭১ কিলোমিটার সড়কে ৬ হাজার ৮৯০ টি জিআই পুলসহ সড়ক বাতি ও ৩৫৮ টি সোলার প্যানেল সহ সড়ক বাতি স্থাপন করা হয়েছে। ৫০০ মেট্রিক টন বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা ও শম্ভুগঞ্জ ডাম্পিং স্টেশনের আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। চলছে রাত্র কালীর বজ্র ব্যবস্থাপনা। মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরির কাজ চলমান। ১০ মেট্রিক টন গৃহস্থালি বর্জ্য থেকে সার উৎপাদন করা হচ্ছে। মানব বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রায় ১৪০০ টন সার তৈরি হচ্ছে।নগরীর ২৭৪ টি হটস্পটকে প্রাধান্য দিয়ে পরিচালনা করা হয়েছে ওয়ার্ড ভিত্তিক মশক নিধন কার্যক্রম এবং ক্রাশ প্রোগ্রাম। নগরীর সৌন্দর্য বর্ধনেও এসেছে আমুল পরিবর্তন। ব্রহ্মপুত্র নদীর তীর ঘেঁষে স্থাপন করা হয়েছে জয়নুল আবেদীন পার্ক ও মিনি চিড়িয়াখানা। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়ে গুলোতে স্থাপন করা হয়েছে বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। শম্ভুগঞ্জ ব্রিজের পাশে নির্মাণ করা হয়েছে জয় বাংলা চত্বর, তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে বঙ্গবন্ধু গ্যালারি।সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে নিয়মিত বৃক্ষর্পণ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বিউটি পার্লার, ড্রাইভিং, মোবাইল সার্ভিসিং ইত্যাদি বিষয়ে ১ হাজার ১৯২ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। ২ হাজার ৫৭৬ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি দেয়া হয়েছে। করোনা মহামারীর সময় ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন ও মেয়র ইকরামুল হক টিটুর ভূমিকা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে সময় সরকারি বরাদ্দ ও সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ১৩২৭ টন চাল ও ৬৫ লক্ষ টাকার খাদ্য বিতরণ করা হয়। জনবহুল ৫২৫ টি স্থানে করা হয় হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। ঘরে থেকে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য চালু করা হয় টেলিমিডিয়া সেন্টার। নগরের ৯৫ ভাগ মানুষকে দুই ডোজ কোভিড ১৯ টিকা দেওয়া কাজ সফলতার সহিত সম্পন্ন করা হয়েছে। ইকরামুল হক টিটুু করোনা কালীন সময়ে নিজের জীবনের কথা চিন্তা না করে নগরীর মানুষদের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। নিজে দুই দুইবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এরপরেও তার কর্তব্য থেকে এক মুহূর্তের জন্যও পিছু পা হননি। যা জনসম্পৃক্ততার এক অনন্য দলিল হয়ে থাকবে। স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নের জন্য বাঘমারায় একটি নগর মাতৃ সদন এবং খাগডহর, শম্ভুগঞ্জ ও জামতলায় মোট তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। শতভাগ সফলতার সাথে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন, কৃমি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম এবং ইপিআই কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। ময়মনসিংহ নগরীর প্রতিটি ক্ষেত্রেই ইকরামুল হক টিটুর উন্নয়নের ছোঁয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে। নগরবাসীর আস্তা, ভরসা ও বিশ্বাসের স্থান হয়ে উঠেছেন ইকরামুল হক টিটু। জনগণের সাথে তার সম্পৃক্ততা তাকে অন্য মাত্রায় আসীন করেছে। তার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, করোনা কালীন ভুমিকা ও জনসম্পৃক্ততা আসন্ন ৯ মার্চ ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ব্যবধান তৈরি করে দিতে পারে।
আলোকিত প্রতিদিন/১৯ ফেব্রুয়ারি-২৪/মওম
