মুজিবুর রহমান প্রধান:
গত ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন, নরসিংদী কর্তৃক আয়োজিত ১০ দিনব্যাপী ‘অমর একুশে বইমেলা’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে নরসিংদী জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. বদিউল আলম বঙ্গবন্ধু পৌর পার্কে নির্মিত মঞ্চকে ‘একুশে মুক্তমঞ্চ’ নামকরণ করেন এবং মঞ্চটিকে একটি স্থায়ী পাকা মঞ্চ করার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, পৌর পার্ক এলাকাটি হবে জেলার কালচারাল হাব। সংস্কৃতির বিকাশে এখানে নিয়মিতভাবে আয়োজন করা হবে বিভিন্ন সাহিত্য-সাংস্কৃতিক উৎসব। যে কোন সংগঠন নরসিংদী জেলা প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে এখানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারবে। ১ মার্চ ২০২৪ বইমেলার দশম ও সমাপনী দিনের আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় শিল্পমন্ত্রী, এডভোকেট নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, এমপি। প্রধান অতিথি বলেন, পৌর পার্কের মতো একটি জায়গায় বইমেলা করে জেলা প্রশাসন একটি সাংস্কৃতিক জাগরণ ঘটিয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ও সাহিত্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক জাতিসত্তার কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা। তিনি এ বইমেলা আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং মেলার টার্নওভার প্রায় ১ কোটি টাকা হওয়ায় নরসিংদী জেলা প্রশাসনকে সাধুবাদ জানান। তিনি বাংলা একাডেমি আয়োজিত বইমেলার তুলনায় এ লেনদেনটি আনুপাতিক হারে বেশি বলেও মন্তব্য করেন। এর পরে তিনি ‘ভাষার নান্দনিকতা’ সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা উপস্থাপন করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন,শহীদুল ইসলাম সোহাগ,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার,সদর সার্কেল,নরসিংদী। নরসিংদী জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. বদিউল আলম তাঁর বক্তব্যে নরসিংদী জেলায় সুস্থ ও নান্দনিক সাংস্কৃতিক পরিবেশ গড়ে তোলা ও বই পড়ার চর্চায় পৌর পার্কে বড় পরিসরে বইমেলার আয়োজনের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং তরুণ প্রজন্মকে বই পড়ার আগ্রহ তৈরিতে উৎসাহ প্রদান করেন। এছাড়াও তিনি ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে লালন করে সর্বস্তরের জনগণকে হাতে হাত রেখে নরসিংদী জেলাকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ জনপদ হিসেবে গড়ে তোলার বলিষ্ঠ আহ্বান জানান। একই সাথে তিনি অস্থায়ী মঞ্চটিকে স্থায়ী করার ঘোষণা দেন ও এর নামকরণ করেন।
আলোচনা সভা শেষে প্রধান অতিথি ১০ দিনব্যাপী এ আয়োজনে অংশগ্রহণকারী সংগঠনগুলোকে শুভেচ্ছা স্বারক ও সার্টিফিকেট তুলে দেন। এছাড়াও বইমেলার স্টলগুলোর মাঝে বেস্টসেলার ক্যাটাগরিতে ৩টি স্টলকে এবং সাজসজ্জা ক্যাটাগরিতে ৩টি স্টলকে শুভেচ্ছা স্বারক প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, এ বইমেলায় ঢাকা ও স্থানীয় প্রকাশনীসহ মোট ৬৮ টি প্রতিষ্ঠান প্রায় ১০০ টি স্টলে তাদের প্রদর্শনী করে। নরসিংদীর মানুষের মাঝে বই পড়ার চর্চা ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় কৃষ্টি-কালচার এর উন্নয়ন, জ্ঞান-বিজ্ঞান আলোচনা, বিতর্ক, কুইজ, সেমিনার ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও শিল্পগোষ্ঠীসমূহের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ছিল ১০ দিনব্যাপী এ আয়োজনের প্রতিদিন।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২ মার্চ-২৪ /মওম