মেডিক্যাল শিক্ষক দুই পিস্তল, ১২ চাকু নিয়েই ক্যাম্পাসে আসতেন

0
266

আলোকিত ডেস্ক-

সিরাজগঞ্জে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করার ঘটনায় গ্রেফতার শিক্ষক রায়হান শরীফের কাছে পিস্তল, গুলিসহ আরও অস্ত্র পাওয়া গেছে তার বাসায়। তার কাছ থেকে ৭.৫৬ বোরের অত্যাধুনিক দুটি বিদেশি পিস্তল, ৮১ রাউন্ড গুলি, চারটি ম্যাগাজিন ও ১২টি বিদেশি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। এসব অস্ত্র তার কাছে থাকা ব্যাগেই পাওয়া গেছে। তিনি ব্যাগে করে এসব অস্ত্র নিয়েই মেডিক্যাল কলেজে আসতেন। তবে তার বাসায় কিছু পাওয়া যায়নি।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) জেলা ডিবির ওসি জুলহাজ উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘শিক্ষার্থীর পায়ে গুলি করার ঘটনায় গতকালই রায়হান শরীফকে আটক করা হয়। পরে গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী তমালের বাবা আবদুল্লাহ আল আমিনের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। গ্রেফতারের পর তার মোবাইল ফোন ঘেঁটে ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করা অত্যাধুনিক বিদেশি পিস্তলের অনেক ছবি পাওয়া গেছে। আরও অস্ত্র আছে কিনা খোঁজ নিতে গতকাল রাতেই তাকে নিয়ে তার বিএ কলেজ রোডের প্রফেসর গার্ডেন বাসায় অভিযান চালানো হয়। তবে বাসায় নতুন কোনও অস্ত্র পাওয়া যায়নি।

shorif2

ডিবির ওসি আরও বলেন, ‘শিক্ষক রায়হান শরীফ ইন্টারনেটে বিদেশি পিস্তলের ছবি দেখলেই ডাউনলোড করে রাখতেন এবং বিদেশি অস্ত্র কেনার দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন। অস্ত্রের প্রতি তার বিশেষ আকর্ষণ থেকেই এই অস্ত্রগুলো কিনেছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেন, শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফের কাছ থেকে উদ্ধার করা অত্যাধুনিক দুটি বিদেশি পিস্তলই অবৈধ ছিল। অবৈধ অস্ত্র রাখায় ডিবির এসআই আবদুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা করেছেন তিনি।

জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, তার কাছ থেকে উদ্ধার করা অস্ত্রগুলো তার ব্যাগে ছিল। শিক্ষক রায়হান শরীফ তার ব্যাগে করে অস্ত্রগুলো নিয়ে নিয়মিত মেডিক্যালে কলেজে যাতায়াত করতেন।

shorif3

প্রসঙ্গত, সিরাজগঞ্জে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজে সোমবার (৪ মার্চ) ভাইভা চলাকালে ওই কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে শিক্ষক ছাত্রকে গুলি করেন। গুলিটি তমালের ডান পায়ের উরুতে লাগে। তমাল ওই মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

ঘটনার পর গুলিবিদ্ধ আরাফাত আমিন তমাল ও তার সহপাঠীরা জানান, শিক্ষক রায়হান শরীফ ক্লাস রুটিনে ক্লাস না থাকা সত্ত্বেও সময়–অসময়ে শিক্ষার্থীদের ডেকে এনে তার ক্লাস করতে বলতেন। রবিবার বিকালে হঠাৎ আরাফাতসহ আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মোবাইলে কল করে ক্লাসে আসতে বলেন। কিন্তু আরাফাতসহ শিক্ষার্থীদের কেউই ক্লাসে আসেননি। সোমবার বিকাল ৩টার দিকে ফরেনসিকের ভাইবা ক্লাস চলার সময় তিনি গতকালের প্রসঙ্গ তুলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা করতে করতে একপর্যায়ে পকেট থেকে পিস্তল বের করে গুলি করেন। চিৎকার শুনে সবাই এগিয়ে এসে তমালকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করেন তারা। পরে শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষককে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে ওই পিস্তলসহ নিয়ে যান।

লোকিত প্রতিদিন/এপি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here