মতিয়ার রহমান, কালীগঞ্জ
ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ থানা শহরের কোটচাঁদপুর রোডের মমতাজ মেডিসিনি সেন্টারে দীর্ঘ দিন যাবত নিয়মিত পশু চিকিৎসা প্রদান করে যাচ্ছেন জামাল আহমেদ মিলন।তবে পেশায় তিনি উপজেলার সরকারি মাহতাবউদ্দিন কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক।তিনি একাধারে একদিকে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক, ,গবাদীপশুর সর্ব রোগ বিশেষজ্ঞ আবার কখনো তিনি ডাক্তারদের প্রশিক্ষক ।নামের আগে পরে নানা পদবী যুক্ত থাকলেও তার হাতে অপচিকিৎসার শিকার হয় অধিকাংশ গবাদী পশুর খামারীরা ।লাখ টাকার পশু মারা গেলেও জামাল আহমেদ মিলনের ফি ক্ষতিগ্রস্ত পশুর মালিককে দেওয়া লাগে বলে জানা যায়। নতুবা তাকে নানা বিড়ম্ববনার স্বীকার হতে হয়।
অন্যদিকে জানা যায়, জামাল আহমেদ মিলন তিনি বিভিন্ন ব্যক্তি ও ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি নিয়ে শহরজুড়ে গড়ে তুলেছেন এক পশু চিকিৎসা সিন্ডিকেট।এই সিন্ডিকেট শহরময় গবাদি পশু চিকিৎসা করে বেড়ায় ।এই পশু চিকিৎসকের সিন্ডিকেটের সদস্যরা ৫-৬ টি মোটরসাইকেলে কমপক্ষে ১০-১২ জনের একটি দল একযোগে বিভিন্ন গ্রামে বেরিয়ে পশু চিকিৎসা সেবা দিতে সেবা প্রত্যাশীর বাড়ি হাজির হন ।এরপর শুরু হয় গবাদি পশুর ভুল চিকিৎসা।তাদের এই চিকিৎসায় অধিকাংশ গবাদি পশু ভাল না হওয়ার অভিযোগ আছে। চিকিৎসায় গবাদিপশু ভাল না হলেও সম্পূর্ন বিল পরিশোধ করতে হয় সেবা প্রত্যাশির।এমন অনেক অভিযোগ আছে জামাল আহমেদ মিলনের বিরুদ্ধে ।যার অডিও ভিডিও রেকর্ড প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে ,ডিভিএম ডাক্তার না হয়েও জামাল আহমেদ মিলন শহরের কোলা রোডে অবস্থিত লাইফ সাইন্স ভেটরেনারী ট্রেনিং ইনস্টিউটে চলমান কোর্সের প্রশিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।ইতিহাসের শিক্ষকের ভেটরেনারীর কোর্সের ক্লাস নেওয়ারে ব্যাপারে জানতে চাইলে লাইফ সাইন্স ভেটরেনারী ট্রেনিং ইনস্টিউটের সত্বাধিকারী বিশ্বাস রাজিব কিশোর জানান,মিলন স্যার তো প্রথম থেকেই এ কোর্সের সাথে আছেন।তিনি নিয়মিত ক্লাস নেন। জামাল আহমেদ মিলনসহ তার সাথে থাকা সনদবীহিন ভুয়া পশু চিকিৎসকদের কারো বাংলাদেশ ভেটরেনারী কাউন্সিলের সনদ নেই।
উপজেলার চাঁচড়া গ্রামের ভুক্তভোগী মনোয়ারা বেগম বলেন,আমার গরুর সামান্য জ্বর হওয়ায় আমি মিলন ভাইকে জানাই।সে এসে চিকিৎসা করার পর আমার গরু আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে ।এরপর আমি উপজেলা পশু হাসপাতালে নিয়ে যাই।আরেক ভুক্তভোগী উপজেলার চাদবা এক্তারপুর গ্রামের ইমামুল ইসলাম বলেন ,আমার ছাগল যন্ত্রনায় ছটফট করায় আমি মিলন স্যারকে বলি ,তখন মিলন স্যার পলাশ নামের এক ব্যক্তিকে পাঠিয়ে আমার ছাগলের অস্ত্রপচার করায় ।রক্ত বন্ধ না হওয়ায় সে ব্যক্তি দ্রুত চলে যায়।তারপর আমি ছাগল পশু হাসপাতালে নিয়ে যায়।এরা কেমন ডাক্তার ,আমার অনেক ক্ষতি হয়েছিল ।
অভিযোগের ব্যাপারে সনদবিহীন পশু চিকিৎসক জামাল আহমেদ মিলনকে মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডা : মো: রেজাউল করিম জানান , কালীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় সনদ বিহীন পশু চিকিসকের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।ক্ষতিগ্রস্ত খামারির অভিযোগ পেলে বাংলাদেশ ভেটরেনারী আইন ২০১৯ অনুযায়ী ভূয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি