
গত ১৫-১৭ মার্চ রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ছয় বছরের মেয়াদের জন্য পুনরায় পুতিনই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন বলে প্রত্যাশা করা হয়েছিল। প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় পেয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। এবারের নির্বাচনে প্রায় ৮৭ শতাংশ ভোট পড়েছে তার পক্ষে। সোভিয়েত-পরবর্তী রাশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয়ের পর পুতিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা সবার কাছে পরিষ্কার, এটি (রাশিয়া-ন্যাটো সংঘর্ষ) হবে এমন কিছু যা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে এক ধাপ দূরে। আমার মনে হয় খুব কমই কেউ এতে আগ্রহী হবে।’ পুতিন আরও বলেছেন, ন্যাটোর সামরিক কর্মীরা ইতোমধ্যেই ইউক্রেনে উপস্থিত রয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্রে ইংরেজি এবং ফরাসি উভয় ভাষাতেই কথা বলা হচ্ছে বলে রাশিয়া দেখতে পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘এতে ভালো কিছু নেই, প্রথমত তাদের জন্য, কারণ তারা সেখানে প্রচুর সংখ্যায় মারা যাচ্ছে।’ গত ১৫-১৭ মার্চের নির্বাচনের আগে ইউক্রেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে আক্রমণ বাড়িয়ে দেয়। পূর্ব ইউরোপের এই দেশটি সীমান্ত অঞ্চলে গোলাবর্ষণ করে এবং এমনকি রাশিয়ার সীমানা ভেদ করে রুশ ভূখণ্ডের ভেতরে হামলার চেষ্টা করার জন্য প্রক্সি যোদ্ধাদেরও ব্যবহার করেছে। ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চল দখলে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয়তা মনে করেন কিনা জানতে চাইলে পুতিন বলেন, হামলা অব্যাহত থাকলে রাশিয়ার ভূখণ্ড রক্ষার জন্য ইউক্রেনের ভূখণ্ডের বাইরে একটি বাফার জোন তৈরি করবে রাশিয়া। পুতিন বলেছেন, ‘আজকে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনার কথা মাথায় রেখে আমি (এই ধারণাটি) বাদ দিচ্ছি না, আমরা যখন উপযুক্ত মনে করব তখন কিয়েভের শাসনাধীন অঞ্চলগুলোতে একটি নির্দিষ্ট ‘স্যানিটারি জোন’ তৈরি করতে বাধ্য হবো।’ অবশ্য রাশিয়ার এই প্রেসিডেন্ট এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তবে তিনি বলেছেন, রাশিয়ার ভূখণ্ডে বিদেশি অস্ত্রশস্ত্র পৌঁছাতে বাধা দেওয়ার জন্য এই ধরনের একটি অঞ্চল যথেষ্ট বড় হতে পারে। পুতিন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে লাখ লাখ সৈন্য পাঠিয়েছিলেন। আর সেটি একদিকে ইউক্রেনীয় বাহিনী এবং অন্যদিকে রাশিয়াপন্থি ইউক্রেনীয় এবং রাশিয়ান প্রক্সিদের মধ্যে পূর্ব ইউক্রেনে আট বছরের সংঘর্ষের পরে দেশটিতে পূর্ণ-মাত্রায় যুদ্ধের সূত্রপাত করে। পুতিন বলেন, তিনি চান ম্যাক্রোঁ ইউক্রেনের যুদ্ধকে আরও বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা করা বন্ধ করে শান্তি খোঁজার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবেন। তার ভাষায়, ‘মনে হচ্ছে ফ্রান্স এক্ষেত্রে একটি ভূমিকা পালন করতে পারে। এখনও সব কিছু হারিয়ে যায়নি।’ পুতিন বলেন, ‘আমি এটা বারবার বলেছি এবং আমি আবারও বলব। আমরা শান্তি আলোচনার পক্ষে।’
আলোকিত প্রতিদিন/১৮ মার্চ-২৪ /মওম