নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজার জেলার পেকুয়ায় বনবিভাগের উপর খবরদারি করে তাদের জব্দকৃত বালু আবার জব্দ দেখিয়ে নিলামে তুলার চেষ্টা করছেন পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম। ২৭ মার্চ দুপুর ২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম টৈইটং বনবিটের মধুখালী সংরক্ষিত বনের গহীন জঙ্গল থেকে ওই বালু জব্দ করেন। ওই বালু ২০২৩ সালের ২৫ মে টৈইটং বনবিটের ১৭নং মামলা মূলে চার লক্ষ ছয় হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করেছিল বিট কর্মকতা জমির উদ্দীন। বর্তমান ইউএনও তড়িঘড়ি করে বনবিভাগের জব্দকৃত বালু আবারও জব্দ করে নিলামে তুলার ঘোষাণা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে নানান মহলে। অভিযোগ উঠেছে, মুহাম্মদ আলম নামের একজন হত্যা মামলার আসামি, কয়েক জন বন মামলার আসামির তদবিরে প্রশাসন ব্যবহার করে ওই বালু বের করে ভাগবাটোয়ারা করার চেষ্টা চলছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র পেকুয়া উপজেলা সভাপতি সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, যে বালু জব্দ আছে, মোটা অংকের দেনদেনের মাধ্যমে বের করার চেষ্টা চলছে, এটা বের করা বা নিলামে তুললে, জীববৈচিত্র পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখে যাবে। বালু দস্যুরা পুরো পাহাড় ধ্বংস করে ফেলবে। এটা কোনভাবে বের করা যাবে না,কোন পক্ষ নিলামের নামে পাহাড় ধ্বংসের পায়তারা করলে কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকতা হাবিবুল হক বলেন, আমাকে ইউএনও মোবাইলের মাধ্যমে, জানান যে আমাদের বনবিভাগ কর্তৃক মধুখালী এলাকায় জব্দকৃত বালু আছে ঐ বালু গুলো পরিদর্শনে যাবেন এবং নিলামের মাধ্যমে এটা বিক্রয়ের প্রক্রিয়া গ্রহণ করবেন। এটা জানার পর আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে ইউ,এন,ও মহোদয়েকে আমার দপ্তর থেকে একটি চিঠি দিয়েছি।। এখানে যদি বালুগুলো বের হয়ে আসে তাহলে জীববৈচিত্র মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ব্যতীত সংরক্ষিত বনে কোন কিছু নিলাম দেওয়া যায় না।
এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা সাইফুল ইসলাম বলেন, বালু জব্দ করেছি,এগুলো নিলামে দিব ওপেন বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে। একবার জব্দ করা বালু আবারো কিভাবে জব্দ করা যায় সে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা করেছি মোবাইল কোর্টে, মোবাইল কোর্টে কে জব্দ করল না করলো সেটা বিষয় না, বন বিভাগের কি কোর্ট আছে? আমরা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের মাধ্যমে জব্দ করেছি। কোর্টে আমরা বিজ্ঞপ্তি দিব, বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ওপেন নিলাম করব। এটা রাখার ব্যাপারে আপনার কোন আগ্রহ থাকলে বলেন। রেঞ্জ কর্মকর্তা কি করছে সেটা আমরা জানি,ডিসি অফিসের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা সেখানে গিয়েছি। আমাদের আইনগত প্রসিডিউরে যেটা হয়, আমরা সেটা করব।
চট্রগ্রাম দক্ষিণ বনবিাগের বিভাগীয় বন কর্মকতা (ডিএফও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “বনবিভাগের জব্দকৃত বনদ্রব্য অন্য কেউ জব্দ করতে পারবে না। এটা আমরা নিলামে যাব না। বালু নিলামে তুললে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হবে। এই বালু নিলাম দিলে আরো বালু তুলে আনবে। এই বালু নিয়ে গেলে এলাকার পরিবেশের ক্ষতি হবে। নিলাম দেওয়ার কোন ইচ্ছে আমাদের নাই”।
আলোকিত প্রতিদিন/২৯ মার্চ-২৪ /মওম
- Advertisement -