মিন্টু চন্দ্র দাস,
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সেপটিক ট্যাংকে নেমে সুইপারকে বাঁচাতে গিয়ে বাড়ির মালিকেরও মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে বাড়ির মালিকের নাম রিয়াদ হোসেন। সুইপারের নাম হযরত আলী ওরফে খোকন (৩৮)। রোববার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম রাখালিয়া গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। রিয়াদ একই এলাকার নুরুল হক পাটোয়ারী বাড়ির নুরনবী লেদার ছেলে ও স্থানীয় বাবুরহাট বাজারের ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ী। খোকন কুমিল্লা জেলার লাকসাম পৌরশহরের মিস্ত্রী এলাকার রুস্তম আলী মোল্লার ছেলে। তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে পরিবার নিয়ে রায়পুরের বামনী ইউনিয়নের চৌধুরী বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, রাখালিয়া এলাকায় নুরুল হক পাটোয়ারী বাড়ির ‘পাটোয়ারী ভিলার’ একটি সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে সুইপার খোকনকে ভাড়া করেন রিয়াদ। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই বাড়ির সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে নামেন খোকন। পরিষ্কার করা অবস্থায় সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে বিষাক্ত (মিথেন) গ্যাসে আক্রান্ত অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও খোকন ট্যাংক থেকে উঠছিল না। এ সময় বাড়ির মালিক রিয়াদ তাকে বাঁচতে মই দিয়ে ওই ট্যাংকে নামার চেষ্টা করলে মই ভেঙে রিয়াদও ট্যাংকের ভেতরে পড়ে যায়। পরে খবর পেয়ে রায়পুর ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ও রায়পুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেপটিক ট্যাংক থেকে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে রায়পুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। সোনাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএম ইউছুফ জালাল কিছমত বলেন, রিয়াদ ছাড়া বাসায় কেউ ছিল না। সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে নেমে সুইপার আর উঠছিল না। একপর্যায়ে রিয়াদ দেখে সে পড়ে আছে। তাকে রক্ষা করতে গিয়ে রিয়াদও মারা গেছে। সেপটিক ট্যাংকের গ্যাসের কারণেই তাদের মৃত্যূ হয়েছে। রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক মজুমদার জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস এসে সেপটিক ট্যাংক থেকে দু’জনের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি