অনলাইন ডেস্ক
ইন্টারনেট জগত বলেই কথা । যে জগতে ঘুরলেই দেখা মিলবে অসংখ্য ডেটিং অ্যাপস। আমাদের দেশেও রয়েছে এ রকম বেশ কিছু অ্যাপস। যেখানে প্রতিনিয়ত ঘটছে নানা প্রতারণার ঘটনা। যা চোখ লজ্জ্বার ভয়ে নিরবে সয়ে যাচ্ছে অনেকেই। তবে চাপা পড়ছে না। মাঝে মধ্যেই বেরিয়ে আসছে দু-একটি ঘটনা। এবার এমনই এক ঘটনার তথ্য হাতে এসছে দৈনিক আলোকিত প্রতিদিনের কাছে। যে ঘটনার মূল চরিত্রে রয়েছে মোছা. সামিয়া। মেয়েটি ডেটিং অ্যাপস ট্যানট্যানে অ্যাকাউন্ট করে প্রতারণা করছেন দীর্ঘদিন ধরেই। ধনী যুবক ও মধ্যবয়সীদের টার্গেট করে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকাও। নিজের ছবিতে যখন আর কাজ হচ্ছিল না, তখন বান্ধবীর ছবি ব্যবহার করে প্রতারণা শুরু করে সামিয়া। রুম ডেটের জন্য বিকাশে টাকা নেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ব্লক করে দেয় এই মেয়ে। পরবর্তীতে তার সেই বান্ধবী বিষয়টি জানতে পারলে প্রকাশ্যে আসে ঘটনাটি।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী জানান, সামিয়া এসব অ্যাপসে নিজের ছবি ব্যবহার করে বহু মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। রুম ডেটের কথা বলে ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার; এমনকি সুযোগ বুঝে লাখ টাকাও নিয়েছে কারও কারও কাছ থেকে। ভুয়া জন্মদিনের কথা বলে নিয়েছে দামি উপহার। এমনকি বাসার জন্য মাছ, মাংসসহ বাজারও নিয়েছে।
অভিযুক্ত সামিয়ার এসব অপকর্মের এবং বিভিন্ন পুরুষের কাছ থেকে টাকা লেনদেনের অডিও ও ম্যাসেজের তথ্য রয়েছে। একটি অডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, তুমি তো শুধু মাছ আর গোশত কিনে দিলে। তেল, লবণ কেনার জন্য আরও ৫ হাজার টাকা পাঠাও। তারপর রুম ডেটে যাব।
বান্ধবীর দ্বারা এমন হেনস্তার শিকার হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন সেই শিক্ষার্থী। বান্ধবীর নামে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। কাছের বান্ধবীর এমন আচরণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি। তিনি বলেন, আমি রাস্তাঘাটে বের হতে পারছি না। সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছি। বান্ধবী হয়ে আমার এত বড় ক্ষতি করল! আমি এই ঘটনার কঠিন বিচার চাই। তার দ্বারা যেন অন্য কেউ আর প্রতারিত না হয়।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক শ্রেণির নারী প্রতারক চক্র পুরুষদের নানাভাবে প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়। এসব ক্ষেত্রে পুরুষদের সচেতন হতে হবে। যে কোনো অ্যাপসে অ্যাকাউন্ট করার পর কোনো নারী সম্পর্কে ভালোভাবে না জেনে টাকা পাঠালে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এসব বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সামিয়ার মোবাইল ফোনে কল দিলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর ফোনে এবং হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করলেও কোনো উত্তর মেলেনি। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী থানায় অভিযোগ করার পরই নিজের ফেসবুক আইডি, ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাকটিভ করে দিয়েছে সামিয়া ।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক পার্থ প্রতিম ব্রহ্মচারী বলেন, ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী একটি জিডি করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।