বিশেষ প্রতিনিধি (ইমরান রিপন): প্রহসনমূলক উপজেলা নির্বাচনের নামে সন্ত্রাস-হানাহানির প্রতিবাদে ও লোডশেডিং সংকট সমাধান না করে উল্টা বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির নিন্দা জানিয়ে গতকাল শনিবার রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টি। বিকেল ৪ টায় বিজয় নগরস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে সেগুনবাগিচা, নাইটেঙ্গেল, পল্টনসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে বিজয়-৭১ চত্বরে এসে এক প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার। যুগ্ম আহ্বায়ক এবিএম নাজমুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের যুগ্মআহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ ও অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, যুব পার্টির আহ্বায়ক এবিএম খালিদ হাসান প্রমূখ। সমাবেশে মেজর (অব.) মিনার বলেন; ডামি প্রহসনমূলক সংসদ নির্বাচনের পর বহু ঢাক ঢোল পিটিয়ে নিজেদের মার্কা বাদ দিয়ে সরকারী দল উপজেলা নির্বাচনে যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও অংশগ্রহণ দেখাতে চেয়েছিল তা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচন কমিশন বলছে জনগণ নাকি ধান কাটার কারণে ভোট দিতে আসেনি। তিনি এ বক্তব্যকে হাস্যকর আখ্যা দিয়ে বলেন নাগরিকগণ আসলে সরকারকে বার বার প্রত্যাখ্যানের সংকেত দিচ্ছে। সরকার তলে তলে এই অনাস্থা ও প্রত্যাখ্যানে দিশাহারা হয়ে এখন আবোল তাবোল বক্তব্য দিচ্ছে। অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন; আমরা অনেক আগেই বলেছি বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা আর অবশিষ্ট নেই। এই নির্বাচন কমিশন রাজদরবারের গোপাল ভাঁড়ে পরিণত হয়েছে। মানুষ সরকারকে প্রত্যাখ্যান করে ভোট দিতে যায়নি অথচ তারা বলছে ধান কাটার জন্য মানুষ ভোট দিতে যায়নি। তিনি বলেন, বিভিন্ন বিদ্যুৎ কোম্পানির সাথে সরকার চুক্তি করেছে যাদের কাছ থেকে কোন বিদ্যুৎ কেনা হচ্ছে না, শুধু মাত্র লুটপাট করতেই কুইকরেন্টালের ভাড়া টাকার পরিবর্তে ডলারে দেওয়া হচ্ছে। এই লুটপাট বন্ধে সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন; আওয়ামীলীগ সরকারের জনপ্রিয়তা ও লজ্জা দিনে দিনে সমানহারে কমছে। একটি দল নিজের কর্মদোষে ধ্বংস ও নিশ্চিহ্ন হওয়ার এটা বড় লক্ষণ। মানুষের সতস্ফুর্ত প্রত্যাখ্যানে এবারের প্রহসনমূলক উপজেলা নির্বাচন অতীতের সকল ইতিহাসকে ম্লান করে ফেলেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, মানুষের এই মৌন অনাস্থা এক সময় বিক্ষোভের অগ্নিস্ফুলিংগে পরিণত হবে। তিনি সারাদেশে বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ন্ত্রণে সরকারের ভয়াবহ ব্যর্থতার সমলোচনা করেন এবং বিদুৎ নিয়ে সরকার যে, চরম লুটতরাজের ইতিহাসে সৃষ্টি করেছে তা বিশ্ববাসীর কাছে অষ্টম আশ্চর্যজনক পুকুর চুরি হিসেবে বিবেচিত হবে বলে মন্তব্য করেন। ব্যারিষ্টার আসাদুজ্জামান ফু্য়াদ তার বক্তব্যে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় শহীদ স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ রিফাতের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি বলেন, লুটপাটের কারণে রাশিয়ার তৈরী সেকেলে বিমান একের পর এক বিধ্বস্ত হচ্ছে, তারপরেও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। বিদ্যুৎ খাতে কুইক রেন্টাল লুটপাটের আরেক নাম হচ্ছে লোডশেডিং। অনির্বাচিত ডামী সরকার নাকি ২৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছে। তাহলে প্রতিদিন কেন তিন থেকে চার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি হচ্ছে? গ্রাম এলাকাতে প্রতিদিন ৬-৮ ঘন্টার লোডশেডিং হচ্ছে, স্থানীয় ব্যবসা বানিজ্য, সেচ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। লুটপাটের আনন্দে কুইক রেন্টাল এখন গ্যাস ক্ষেত্রে শুরু হয়েছে। দেশীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সকে তুর্বল করে দেশী বিদেশী লুটেরাদের টেন্ডার দেবার আয়োজন চলছে। অথচ তেল-গ্যাসের অনুসন্ধানে বাপেক্সের সক্ষমতা অন্য যে কারো থেকে বেশী। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব আব্দুল বাসেত মারজান, শাহ আব্দুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার ফারুক, আব্দুল হালিম খোকন, গাজী নাসির, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, যুবপার্টির সদস্য সচিব শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, ছাত্রপক্ষের আহ্বায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব সফিউল বাসার, কেফায়েত হোসেন তানভীর, আহমাদ বারকাজ নাসির, যুবপার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব হাদিউজ্জামান খোকন, মাসুদ জমাদ্দার রানা, সুলতানা রাজিয়া, মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, আমিরুল ইসলাম নুর, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, রিপন মাহমুদ, শরণ চৌধুরী, আমেনা বেগম, রুনা হোসাইন, সুমাইয়া শারমিন ফারহানা, মশিউল আজম সাকিব, যুবপার্টি মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব শাহিনুর আক্তার শীলা সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
আলোকিত/১২/০৪/২০২৪