রানা ইস্কান্দার রহমান:
জীবনের অপর নাম সংগ্রাম। সংগ্রাম করেই বাঁচতে হয় রিকশাওয়ালাদের। কারো কারো জীবন বড় সুখকর হলেও কারো কারো কাছে খুবই কষ্টের। অর্থবিত্তশালীদের কাছে কিছু কিছু সময় অত্যন্ত আনন্দের হলেও নিম্নবিত্ত মানুষের কাছে ওই সময়গুলো খুবই কষ্টের। গ্রামীণ সমাজের একটি অংশ শ্রমিক শ্রেণী। যেমন রিকশাওয়ালা। গ্রামে সব সময় কাজ থাকে না তাই জীবন জীবিকার তাগিদে রিকশা চালাতে হয়। ছিন্নমূল আর নদীভাঙা মানুষের একটা বড় জীবিকা রিকশা। শ্রমটি অমানবিক হলেও নগদ আয়ের নিশ্চয়তা। এখন কৃষিশ্রমিকেরাও ধাবিত হচ্ছেন শহরে, পেশা রিকশা চালানো। ফলে কৃষিশ্রমিকের প্রবল ঘাটতি দেখা দিচ্ছে গ্রামগঞ্জে। এতে করে মজুরি বাড়ছে। মজুরি বৃদ্ধির কারণে কৃষি আর লাভজনক থাকছে না। বাংলাদেশের শহরগুলোতে রিকশার প্রবল প্রতাপ। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইজিবাইক। জেলা শহরগুলো এখন সৌন্দর্য হারিয়ে রিকশার শহরে পরিণত হয়েছে। কিন্তু রিকশাওয়ালাদের কষ্টের শেষ নেই। কাক ডাকা ভোর হতে না হতেই রিকশা নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন তারা। দুপুরে ক্লান্ত শরীরে রিকশার ওপরই ঘুমিয়ে পড়েন। বিশেষ করে বৃষ্টি হলে তো কোনো কথাই নেই। এ যেন কষ্টের ওপর আরেক কষ্ট। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের মিল না থাকায় তাদের রাস্তায় থাকতে হয়। যেন ভাগ্যও তাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে।গাইবান্ধা পৌর শহরের নুর উদ্দিন নামে এক রিকশাচালক বলেন, ৫ বছর ধরে রিকশা চালাই। সারা মাস রিকশা চালিয়ে যে টাকা আয় হয় তাতেও পরিবারের সদস্যদের ভরণ-পোষন করতে টানাপড়েনে পড়তে হয়। “যাদের অঢেল আছে, তাদের কষ্ট না দিয়ে বিধাতা শুধুই আমাদের কষ্ট দেন” বলেও তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেন। রিকশাচালক শরীফুল বলেন, ‘‘কার কাছে কষ্টের কথা বলবো রে ভাই। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে রিকশা চালাই। রিকশা চালিয়ে সংসারের ৮ জনের জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। তার ওপর মা-বাবার চিকিৎসার খরচ সব বহন করতে হয়। স্বপ্নহীন এই মানুষগুলোর কাছে কোনো উন্নত জীবনের ভাবনা ধরা দেয় না। নিত্য-নিষ্ঠুরতার মাঝেই তাদের বসবাস। বাসা ভাড়া, জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের মিল না থাকায় তাদের রাস্তায় থাকতে হয়। এসব ছিন্নমূল মানুষের জন্য কিছু করতে সরকারের প্রতি আহ্বান
এই অসহায় রিকশা চালকদের।
আলোকিত প্রতিদিন /১৬ মে-২০২৪ /মওম