প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

0
252
ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক কালবেলা পত্রিকায় গত ৩ জুন প্রকাশিত ‘পাহাড়ে বন কর্মকর্তার আলাদা সম্রাজ্য’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিত্তিহীন ও মনগড়া তথ্যের সমাহার। তাই আমি উক্ত সংবাদ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
মূলত, আমি ২০২১ সালের ১৪ আগস্ট চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি। আমার কর্মকালীন সময়ে বারবাকিয়া, টৈটং ও পহরচাঁদা বনবিটে বনদস্যু ও পাহাড় খেকোসহ বন রিরুদ্ধ অপরাধে ১৪৮ টি মামলা দেয়া হয়েছে। প্রতিটি মামলা সুনির্দিষ্ট অপরাধের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়। অকারণে মামলা রুজুর কোন সুযোগ নেই। উক্ত সংবাদে যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে উল্লেখ্য করা হয়েছে। তাছাড়া আমার কর্মকালীন সময়ে নয় শত একর বনভূমি দখলমুক্তকরে বনায়ন করা হয়। জব্দ করা হয়েছে ৩৮শ ঘনফুট বনজ গাছ। যা পেকুয়া উপজেলার পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে আমার রেঞ্জ এলাকা দিয়ে পাচার করা হচ্ছিলো। একইসাথে উক্ত সময়ে প্রায় ২৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়।
আমি হাবিবুল হক বনের ক্ষতি করা কাউকে ছাড় দেয়নি। এর প্রমাণ পাওয়া যাবে শিলখালী ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান কামাল হোসেন, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার ভাই মহসিন মাষ্টার, টৈটং ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান মেম্বার আবু ওমর, আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদ মাঝি ও শুক্কুর মেম্বারকে বন আইনে দেয়া মামলায়। প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে আমার এ আপোষহীন অবস্থানের কারণে একাধিকবার হত্যার হুমকি পেয়েছি। কিন্তু আমি ধমে যায়নি। এরই ধারাবাহিকতা গত, ২৭ এপ্রিল স্থানীয় বালুদস্যুদের প্ররোচনায় পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সংরক্ষিত বনভূমিতে বনবিভাগের জব্দ করা বালু ফের জব্দ দেখিয়ে নিলামের চেষ্টা চালায়। বিষয়টি আমি জানতে পেরে লিখিত আপত্তি জানালে বিপত্তি বাঁধে। এর জেরে বালুদস্যু সিণ্ডিকেট শুধুমাত্র আপনার প্রকাশিত বহুল পঠিত দৈনিক কালবেলা পত্রিকা নয়, বিভিন্ন স্থানীয় পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ভিত্তিহীন প্রচারণা চালায়। এর প্রেক্ষিতে গত ১০/০৪/২৪ ইং তারিখ পেকুয়া থানায় জিডি (নং-৪১৯/২৪) দাখিল করি। বন রক্ষা করতে গিয়ে জীবন বিপন্ন হওয়ার উপক্রম হলেও আমি পিছপা হইনি।
সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, পেকুয়া সদর থেকে পঞ্চাশ কিলোমিটার দূরে দূর্গম বারবাকিয়া এলাকা। কিন্তু সত্য হলো যে, পেকুয়া উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার দূরেই সংরক্ষিত বনভূমি। সংবাদে আরও উল্লেখ করা হয়, বারবাকিয়া রেঞ্জের আওতাধীন ১৫ হাজার একর বনভূমি রয়েছে। যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সংবাদে আরো দাবী করা হয়, আলাউদ্দিন শেখ, সাইফুল ও এন্তাজ আলীকে আমি অহেতুক বন মামলা দিয়েছি। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। কারণ বিগত দশ বছরের রেজিস্ট্রার ঘেঁটে এই নামে বন মামলায় কোন আসামীর খোঁজ পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদকের কাছে কোন তথ্য-উপাত্ত থাকলে তা প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করতে পারে। সংবাদে উল্লেখ করা হয়, ব্যবসায়ী জাকের আমার অনুমতি নিয়ে সংরক্ষিত বনভূমির পাহাড় কেটে বালু মজুদ করেছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও কল্পনাপ্রসূত। এই জাকের হোসেন এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে বন আইনেও মামলা রয়েছে। র‍্যাব কর্তৃক ৫ টি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া অস্ত্র মামলায় সে জামিনপ্রাপ্ত আসামি। জামিনে এসে সে বনবিভাগকে জিম্মি করে বন বিরুদ্ধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছে।
আসলে, বালু নিলামে বাঁধা দেওয়ায় ও বন রক্ষায় সোচ্চার থাকায় পুরষ্কার হিসেবে আমার বিরুদ্ধে মনগড়া গল্প সাজিয়ে এ প্রতিবেদন ছাপানো হয়েছে। পাঠকনন্দিত কালবেলা পত্রিকার গুটিকয়েক প্রতিবেদককে বালু দস্যু চক্র ভুল তথ্য সরবরাহ করে এ মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করিয়েছেন বলে আমি মনে করি।
অতএব,বহুল পঠিত দৈনিক কালবেলা পত্রিকার পাঠক সহ সকল সংবাদপত্রের পাঠকদের এ সংবাদে বিভ্রান্ত না হতে আমি অনুরোধ করছি।
লোকিত প্রতিদিন/এপি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here