নতুন ব্রিজ টু বাঁশখালী রুটে সিএনজি চলাচলের পক্ষে-বিপক্ষে যাত্রী সাধারণের বক্তব্য

0
343

আব্দুস সাত্তার টিটু : চট্টগ্রাম নগরীর নতুন ব্রিজ থেকে বাঁশখালী রুটে সিএনজির লাইনটি দীর্ঘদিন যাবত চলাচল করলেও হঠাৎ করে এই রুটে সিএনজি চলাচল সীমিত থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। যদিও অল্প কিছু সংখ্যক সিএনজি চলাচল করছে এই রুটে। বাস মালিকদের যাত্রী না পাওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে এই রুটে সিএনজি চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে সূত্রে জানা যায়।
আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নতুন ব্রিজ এলাকায় কথিত কিছু সাংবাদিকের নামে সিএনজি চলাচলের অভিযোগ উঠেছে। নামে বেনামে পত্রিকার স্টিকার সাঁটিয়ে চলছে টোকেন বাণিজ্য। অনেকে আবার শ্রমিক সংগঠনের নামেও চালাচ্ছে সিএনজি। আর এসব সিএনজির অধিকাংশের নেই কোন বৈধ কাগজপত্র রেজিস্ট্রেশন। On test এর নামে বিরদর্পে দিনে এবং রাতে সমান তালে চলছে এসব রোড পারমিট বিহীন অবৈধ সিএনজি।  প্রশাসনের একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তাও এই সিএনজির টোকেন ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে মর্মে অভিযোগ রয়েছে।
চট্টগ্রাম শহর থেকে দক্ষিণ জেলার অন্যতম প্রবেশ পথ শাহ আমানত ব্রিজ (নতুন ব্রিজ) নতুন ব্রিজে যাত্রী এবং যানবাহনের সংখ্যা বেশি থাকায় এমনিতেই সড়কটিতে যানজট লেগেই থাকে। অন্যদিকে সিএনজি লাইন বন্ধ থাকায় আনোয়ারা, বাঁশখালী রোডে নিয়মিত যারা সিএনজিযোগে যাতায়াত করেন তারা পড়েছেন বিপাকে। অনেকে আবার যানজট নিরসনে সিএনজি যাতে না চলে সেটাকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অল্প সংখ্যক সিএনজি আনোয়ারা বাঁশখালী রোডে চলাচল করছে। আগে যে সিএনজিতে যাত্রী ফিলাপ হতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় লাগতো এখন সেই সিএনজিতে মাত্র মিনিটের মধ্যেই যাত্রী ফিলাপ হচ্ছে। আবার অন্যদিকে যারা এই রোডে দীর্ঘদিন ধরে সিএনজিযোগে চলাচল করতেন তাদের অনেকেরই দেখা গেছে বাসের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে। অনেকে আবার কাঙ্খিত বাসটি পেলেও গাদাগাদি করে যেতে হয়েছিল নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে।
শান্ত মজুমদার নামে বাঁশখালীর এক যাত্রী বলেন, আগে যখন এই রুটে সিএনজি চলাচল করতো তখন খুব স্বাচ্ছন্দে যাতায়াত করতে পারতাম। আজকে বৃহস্পতিবার এমনিতে এই রুটে প্রচুর ঘরমুখো যাত্রীদের ভিড়। সেখানে আবার সিএনজি না থাকায় বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী জহির নামের আরেক যাত্রী জানান, নতুন ব্রিজের প্রবেশ মুখে আগে সিএনজির জটলা লেগে থাকতো। সিএনজি চলাচল এখন কম থাকায় যাত্রী সাধারণেরা নির্বিঘ্নে বাসে করে চলাচল করতে পারছে।  সন্ধ্যার পরে এখন আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাড়ি পৌঁছাতে পারছি।
বাস ড্রাইভার আনোয়ার বলেন, এখন যাত্রীদের প্রচুর ভিড়। যাত্রীর জন্য বাস দাঁড় করিয়ে রাখার প্রয়োজন হচ্ছে না। আমরা ওয়া বিলের টাকা দিয়ে নতুন ব্রিজ টু বাঁশখালী রোডে গাড়ি চালিয়ে থাকি। লাইনের গাড়ি চালানো আমাদের বৈধতা রয়েছে  যাত্রীদের থেকে ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আমরা যাত্রীদের কাছ থেকে এক টাকাও বেশি নিচ্ছি না বলে তিনি দাবি করেন।
এই রুটে দীর্ঘদিন যাবত সিএনজি চালানো ড্রাইভার জসিম বলেন, ভয়ে সিএনজি বের করতে পারছিনা। গাড়ি বের করলে ট্রাফিক পুলিশ মামলা দিয়ে গাড়ি ডাম্পিং পাঠাচ্ছে। গাড়ি চালাতে না পারলে ঘর ভাড়া কোথা থেকে দেবো, সংসার কিভাবে চালাবো সেই চিন্তায় ঘুম আসেনা। আর ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার খরচ তো আছেই।
বিষয়ে টিআই অপূর্ব পালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রোড পারমিট বিহীন রেজিস্ট্রেশনবিহীন যে কোন গাড়ি দেখলেই আমরা মামলা দিয়ে গাড়ি জব্দ করছি।  ঈদকে সামনে রেখে ঘরমুখো মানুষের চাপ বাড়ছে। আমরা গাড়ির জটলা বাঁধতে দিচ্ছি না, যাতে যাত্রীবাহী বাস কোরবানির পশুবাহী গাড়ি নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে। আমি এবং আমার টিম নিরলসভাবে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি যাতে মানুষ ঈদের ছুটিতে স্বাচ্ছন্দে বাড়ি যেতে পারে।

আলোকিত/১৬/০৬/২০২৪/আকাশ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here