পিলার আছে কিন্তু সেতু নেই, ঠিকাদার বললেন টাকা শেষ!

0
151

আলোকিত ডেস্ক-

নড়িয়া-জাজিরা সংযোগ সড়কের কীর্তিনাশা নদীতে ভাষাসৈনিক গোলাম মাওলা সেতুর নির্মাণকাজ দীর্ঘ সময়েও শেষ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা ও সেখান দিয়ে চলাচলকারীরা। ৭ বছরে দুই দফায় ঠিকাদার পরিবর্তন করেও সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করতে পারেনি এখনো। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ এখান দিয়ে চলাচল করে। সামনে নদীতে বর্ষার পানি বাড়বে আরো। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়তে পারে। যারা ট্রলারে করে নদী পার হতে চান না, তাদের ১৫ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ ঘুরে সদর উপজেলার প্রেমতলা এলাকা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করতে হয় তাদের।

শরীয়তপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নড়িয়া উপজেলা সদরের পশ্চিম পাশ দিয়ে কীর্তিনাশা নদী প্রবাহিত হয়েছে। নদীর পূর্ব তীরে উপজেলা সদর এবং পশ্চিম তীরে মোক্তারের চর, রাজনগর, নশাসন ও জপসা ইউনিয়ন। এ ছাড়া জাজিরা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নও রয়েছে। নড়িয়া উপজেলা সদরের সঙ্গে সড়কপথে ওই ইউনিয়নগুলো এবং জাজিরার যোগাযোগের জন্য ১৯৯৭ সালে কীর্তিনাশা নদীর ওপরে ১০৫ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণ করে এলজিইডি। ২০১০ সাল থেকে কয়েক বছর সেতুটির আশপাশ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদী ভাঙনের কারণে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। দেয় স্থানীয় প্রশাসন।

জাজিরা বিলাসপুরের সারেং কান্দি এলাকার বাসিন্দা কামরুল ইসলাম নড়িয়া বাজারে শাড়ী কাপরের ব্যবসা করেন। তিনি প্রতিদিন বাড়ি থেকে গিয়ে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। কামরুল ইসলাম বলেন, পুরোনো সেতু দিয়ে হেটে কিংবা ভ্যানে করে যাতায়াত করতে পারতাম। নতুন সেতু নির্মাণ না করেই পুরোনো সেতুটি ভেঙে ফেলায় আমরা খুবই দুর্ভোগে পড়েছি। প্রতিদিন ট্রলারে নদী পার হতে গিয়ে মাঝে মধ্যে বৃষ্টিতে ভিজতে হয়। আবার এখন বর্ষা আসায় নদীতে স্রোত বেড়েছে খুবই ভয়ে থাকি কখন দুর্ঘটনার শিকার হই আমরা।

এ পথ দিয়ে চলাচলকারী একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা, ছাত্র-ছাত্রী ও ব্যবসায়ীরা বলেন, নড়িয়া উপজেলা সদর থেকে জাজিরা হয়ে ঢাকা যাওয়ার প্রধান সড়ক এটি। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এ পথে মানুষের যাতায়াত বেড়েছে কয়েকগুণ। কিন্তু কীর্তিনাশা নদী দিয়ে কোনো যানবাহন পারাপার হতে না পারায় নড়িয়ার বিভিন্ন এলাকার মানুষকে পদ্মা সেতু ব্যবহার করে ঢাকায় যাতায়াত করতে হলে জেলা শহরের প্রেমতলা এলাকা হয়ে অন্তত ১৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে কোহিনুর এন্টারপ্রাইজের পক্ষে সেতুটির নির্মাণকাজ করছেন আবদুল ওয়াহাব মাদবর নামের এক ব্যবসায়ী। তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, হাতে টাকা নাই, খয়রাত করতেছি আমি।

বিষয়টি নিয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রাফেউল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০১৭ সালে যে ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছিল, তিনি কাজটি শেষ না করে চলে তখন যান। এলজিইডি ঐ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। এখন যে ঠিকাদার কাজ করছেন, তারাও ধীরগতিতে কাজ করছে। তাদের কাজের গতি বাড়াতে একাধিকবার তাগিদপত্র দিয়েছি আমরা। এ ছাড়াও বিকল্প একটি ফুট ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে সেখানে। তা আগামী দুইমাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

লোকিত প্রতিদিন/এপি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here