প্রতিনিধি,চট্টগ্রাম:
চার লাখ টাকা চুক্তিতে চট্টগ্রামে বিআরটিসির বাস ডিপোতে আগুন দিয়েছিল লেগুনাচালক সোহেল রানা (৩২)। এ নিয়ে তার সঙ্গে চুক্তি করেন দিদারুল আলম নামে এক শ্রমিক লীগ নেতা। যিনি চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানা শ্রমিক লীগের সভাপতি। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে এমনটাই জানিয়েছেন গ্রেফতার লেগুনাচালক সোহেল। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার শ্রমিক লীগ নেতা দিদার বিআরটিসির ঠিকাদার রুবেল হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। চট্টগ্রাম বিআরটিসি বাস ডিপোর ইনচার্জ মো. জুলফিকার আলী গত রবিবার বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় মামলা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাটহাজারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রহমত উল্লাহ। তিনি বলেন,’গত ২০ জুলাই শনিবার মধ্যরাতে বিআরটিসি বাস ডিপোতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় করা মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় আমাকে। তদন্তে নেমে ঘটনাস্থলে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে দেখা গেছে, ঘটনার দিন রাত ১১টা ৫০ মিনিটে এক ব্যক্তি ডিপোতে প্রবেশ করে। প্রবেশের ৫ মিনিট পর রাত ১১টা ৫৬ মিনিটে বাসে আগুন দেয়। এরপর সে ডিপো থেকে বের হয়ে আসে।’ এসআই বলেন, ‘সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আমরা বাসে আগুন দেওয়া ব্যক্তিকে শনাক্ত করি। সোহেল রানা নামে এক লেগুনাচালক। ২২ জুলাই সোমবার তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করা হলে সোহেল রানা বাসে আগুন দেওয়ার দায় স্বীকার করে ১৪৬ ধারায় জবানবন্দি দেয়। চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসেন মোহাম্মদ জুনায়েদের আদালতে এ জবানবন্দি দেওয়া হয়। তার দেওয়া তথ্যে দিদারুল আলম নামে অপর এক ব্যক্তিকে আমরা গ্রেফতার করেছি।’
আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে সোহেল রানা জানায়, চট্টগ্রাম বিআরটিসি বাস ডিপোতে থাকা বাসগুলোর মধ্যে পাঁচটি বাস পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য তাকে ভাড়া করা হয়। নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানা শ্রমিক লীগ নেতা দিদারুল আলম তাকে ভাড়া করেন। বিআরটিসির পাঁচটি বাস পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য সোহেলকে চার লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন দিদার। নগদ হিসেবে ৫০০ টাকা দেওয়া হয়।
হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, ‘বিআরটিসি বাস ডিপোতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে সোহেল রানা নামে গ্রেফতার ব্যক্তি জানিয়েছে টাকার লোভে সে বিআরটিসি বাসে আগুন দিয়েছিল। তার দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে।’
চট্টগ্রাম বিআরটিসি বাস ডিপোর ইনচার্জ মো. জুলফিকার আলী বলেন, ‘আগুনে ডিপোতে থাকা চারটি বাস পুড়েছে। এর মধ্যে দুটি বাস বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ১০ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বর্তমানে ডিপো এলাকায় পাহারা জোরদার করা হয়েছে। প্রতিদিন ২৫-৩০ জন মিলে পাহারা দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও বেশ তৎপর আছেন।’
আলোকিত প্রতিদিন /২৫ জুলাই-২০২৪ /মওম