সাতকানিয়ায় পরিবেশবান্ধব কংক্রিট ব্লক তৈরি হচ্ছে

0
198
সাতকানিয়ায় পরিবেশবান্ধব কংক্রিট ব্লক তৈরি হচ্ছে
সাতকানিয়ায় পরিবেশবান্ধব কংক্রিট ব্লক তৈরি হচ্ছে
নুরুল ইসলাম:
ইট উৎপাদনের কথা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে উপরিভাগের মাটি কেটে ফসলি জমির বারোটা বাজানো কিংবা জ্বালানি কাঠ পুড়িয়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতির নানা চিত্র। কিন্তু চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় মেসার্স শাহ মজিদিয়া কনক্রিট ব্লক ফ্যাক্টরি নামক একটি কারখানায় আধুনিক যন্ত্রে ফ্লাই অ্যাশ (কয়লা দহনে সৃষ্ট বিশেষ ছাই), সিমেন্ট, বালু ও পাথরকুচি দিয়ে তৈরি হচ্ছে অত্যাধুনিক কংক্রিট ব্লক। যা ব্যবহার হচ্ছে ইটের বিকল্প হিসেবে। দেখতে সুন্দর, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব।
দেশে পরিবেশবান্ধব ইট তৈরি এবং এর ব্যবহার বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। পুরনো প্রযুক্তির ইটভাটার লাইসেন্স দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে সরকার এবং এসব ইটভাটাগুলোকে ধাপে ধাপে বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রচলিত ইটভাটায় তৈরি ইটের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ইট তৈরির বিষয়ে প্রচারণাও চালাচ্ছে সরকার। কিন্তু তারপরও পরিবেশবান্ধব ইট তৈরিতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে এখনো যথেষ্ট আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।
পরিবেশবিদরা বলছেন, প্রচলিত ইটভাটায় উপরিভাগের মাটি ব্যবহার করায় জমির উর্বরতাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া আগুনে পোড়ানোর কারণে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়। তবে ইটভাটা মালিকরা এখনো পর্যন্ত নতুন প্রযুক্তি গ্রহণে খুব বেশি আগ্রহ দেখায়নি।
সাতকানিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের বারদোনা এলাকায় অবস্থিত কারখানাটিতে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পরিবেশবান্ধব এবং জমির মূল্যবান মাটি নষ্ট না করেই জার্মান প্রযুক্তিতে আগুনে না পুড়িয়ে, পাথর গুঁড়া ও সিমেন্ট দিয়ে অত্যাধুনিক ব্লক তৈরি হচ্ছে। শ্রমিকরা কারখানার পাশে স্তূপ করা পাথর, সিমেন্ট, সিলেকশন সেন্ড ট্রলিতে এনে হপারে (মেশিনের একটি অংশ) ঢেলে দেন। পরে মিক্সার মেশিনে অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে ভাইব্রো মাল্টি ক্যাভিটি মোল্ডিং মেশিনের মাধ্যমে তৈরি করা হয় এ ব্লক। মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে মেশিন থেকে সারি ধরে বেরিয়ে আসে ব্লক। এ অত্যাধুনিক ব্লক পোড়ানোরই প্রয়োজন পড়ছে না।
মেসার্স শাহ মজিদিয়া কনক্রিট ব্লক ফ্যাক্টরি মালিক মো. এনাম বলেন, কংক্রিটের ব্লক বের করে প্রথমে একটু সন্দেহ ছিল, এটি চলবে কিনা। কিন্তু দিন দিন চাহিদা বাড়ছে। এ কারণে আমরা অনেকটা আশাবাদী। বর্তমানে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ হাজার ব্লক তৈরি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সাশ্রয়ী হওয়ায় যেকোনো নির্মাণ কাজে ব্লক ব্যবহার হলে খরচ অনেকটাই কমে যাবে। এ ব্যাপারে প্রচারণা বাড়ালে ইটের বিকল্প হিসেবে মানুষ ব্লককেই বেশি বেছে নেবেন। এতে একদিকে পরিবেশ দূষণ কমবে, অন্যদিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাবে কৃষিজমি এবং বনাঞ্চল।
আলোকিত প্রতিদিন / ৩১ জুলাই-২০২৪ /মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here