স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে ফেনী ও নোয়াখালী জেলা

0
238
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে ফেনী ও নোয়াখালীজেলা
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে ফেনী ও নোয়াখালীজেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ভারত থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে ফেনী ও নোয়াখালীসহ দেশের আটটি জেলা। মুহুরী, কহুয়া এবং সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙনস্থল দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করতে থাকায় একের পর এক জনপদ প্লাবিত হচ্ছে। ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে ফেনীর বাসিন্দারা।

জানা গেছে, ফেনীর সাড়ে ৩ লাখেরও বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। সব ধরনের যোগাযোগও বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে চরম আতঙ্কে দিন কাটাছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। ২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে ফেনী পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার হাওলাদার মো. ফজলুর রহমান বলেন, ‘জেলায় চার লাখ গ্রাহকের মধ্যে তিন লাখেরও বেশি বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন। ভারী বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকার বিদ্যুৎসংযোগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বুধবার রাত ৮টা পর্যন্ত জেলার সোনাগাজী এবং দাগনভূঞা উপজেলার কিছু এলাকায় বিদ্যুৎসংযোগ স্বাভাবিক ছিল।’ ফেনী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন মাহমুদ শামীম ফরহাদ বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৭০ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভবনগুলোর নিচতলায় পানি ঢুকে মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই পানি নেমে না যাওয়া পর্যন্ত বিদ্যুৎসংযোগ বন্ধ থাকবে।’

জানা যায়, গত তিন দিনের ভারী বর্ষণ এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দেখা দিয়েছে মানবিক বিপর্যয়। ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়ন, আনন্দপুর, মুন্সীরহাট, আমজাদহাট ইউনিয়নের ৪০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পরশুরামের মির্জানগর, চিথলিয়া, বক্সমাহমুদ এবং পৌরশহরসহ ৪৫টির বেশি গ্রাম পানিতে তলিয়ে রয়েছে। ছাগলনাইয়ার পাঠাননগর, রাধানগর, শুভপুর ইউনিয়নেরও বেশ কয়েকটি গ্রামে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। পরশুরামের স্থানীয়রা বলেন, ‘বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি সব ডুবে গেছে। পানির তীব্র স্রোতের কারণে ঠিকভাবে উদ্ধারকাজও করতে পারছেন না। তার মধ্যে বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় আরও দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।’

ফেনীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম জানান, টানা বর্ষণ আর ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২৭টি ভাঙা অংশ দিয়ে হু হু করে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। গেলো মাসের মাসের শুরুতে মুহুরী, কহুয়া এবং সিলোনিয়া নদীর ১৫ স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। সেসব স্থানে জোড়াতালি দিয়ে মেরামতের পর চলতি মাসের শুরুতে বাঁধের আরও ১২ স্থানে ভেঙে যায়, প্লাবিত হয় ১০০টির বেশি গ্রাম। অবকাঠামো, ধান, ফসল ও মাছের ক্ষতি ছাড়িয়ে যায় ৩০ কোটির বেশি। এর ১৫ দিনের মাথায় আবারও দেখা দিয়েছে বন্যা ।

এ দিকে বন্যাদুর্গতদের জন্য ত্রাণ সহায়তা নিয়ে মাঠে নেমেছে স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সেনাবাহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ড এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সহায়তা ও উদ্ধার অভিযানে তৎপর রয়েছেন।

আলোকিত প্রতিদিন/২২ আগস্ট-২০২৪ /মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here