কুমিল্লায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি, প্লাবিত হচ্ছে নতুন এলাকা

0
158
কুমিল্লায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি, প্লাবিত হচ্ছে নতুন এলাকা
কুমিল্লায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি, প্লাবিত হচ্ছে নতুন এলাকা
মো: ফয়েজ:
কুমিল্লায় ভয়াবহ বন্যায় ডুবে গেছে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি, শস্যের মাঠ, মাছের ঘের, গরুর খামার, পোল্ট্রি খামারসহ হাজার হাজার ঘরবাড়ি। ভয়াবহ এই বন্যায় জেলাজুড়ে এখন পর্যন্ত বেশ কিছু মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে । এরমধ্যে অর্ধেকই শিশু। বানের পানিতে তলিয়ে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় এসব মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে কুমিল্লার ১৪ উপজেলায় বন্যার পানিতে বন্দি প্রায় দশ লাখ মানুষ। এরমধ্যে বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়ায় প্রায় পৌনে দুই লাখ মানুষ এখনো পানিবন্দি। গোমতীর বাঁধ ভেঙ্গে দুই উপজেলার অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার ৫দিন অতিবাহিত হলেও এখানকার বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও পাঁচ থেকে দশ ফুট পানি, রয়েছে স্রোতের বেগও। গোমতীর পানি কমে আসলেও দুই উপজেলার পানি যেন সরতে চাইছে না। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বিভিন্ন লোকালয়ে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। বাস্তুহারা হয়ে অনেকেই ঠাঁই নিয়েছেন আশ্রয় কেন্দ্রে। অনেকেই আবার দূরের উঁচু স্থানে খোলা আকাশের নিচে পলিথিনের সামিয়ানা টানিয়ে দিন-রাত পার করছেন, কিন্তু বন্যার পানি থেকে জীবন বাঁচিয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নেওয়া মানুষগুলোকেও মাঝে মধ্যে গুড়ি ও ভারি বৃষ্টি ভিজিয়ে দিচ্ছে। বন্যা কবলিত প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণ না পৌছায় কষ্টে হাহাকার করছেন বানভাসি মানুষ। সোমবার বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া ঘুরে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে। এখনো বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি না কমলে বাঁধ মেরামত করা সম্ভব না। পানি না কমা পর্যন্ত নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতেই থাকবে।জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, ১৪ উপজেলায় পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। তবে স্থানীয়ভাবে ধারণা-করা হচ্ছে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা আরও বেশি। গোমতী নদীর পানি কিছুটা কমলেও এখনো বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গোমতীর বাঁধ ভাঙ্গন সবচেয়ে বেশি ভয়াবহতা সৃষ্টি করছে বুড়িচং উপজেলায়। ভেঙে যাওয়া নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ দিয়ে প্রতিনিয়ত স্রোতের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। বুড়িচংয়ে এখনো লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। এরিমধ্যে গত ৫ দিনে পুরোপুরি প্লাবিত হয়ে পানিতে ভাসছে বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা। ব্রাহ্মণ পাড়া উপজেলায় বর্তমানে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা প্রায় ৭৫ হাজার। এদিকে কুমিল্লার দক্ষিণাঞ্চলের মনোহরগঞ্জ, লাকসাম ও নাঙ্গলকোট উপজেলার কিছু অংশে পানি কমলেও নিম্ন অঞ্চলে বৃদ্ধি পেয়েছে বন্যার পানি। এসব এলাকার মানুষ আতঙ্কে দিন পার করছেন। মনোহরগঞ্জ উপজেলায় অনেক আশ্রয় কেন্দ্র এখন পানির নিচে। চারদিকে ত্রাণের জন্য হাহাকার। মনোহরগঞ্জ ও নাঙ্গলকোট উপজেলার বেশিরভাগ প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনো পৌঁছায়নি ত্রাণ সহায়তা। রয়েছে বিশুদ্ধ পানিরও চরম সংকট। অপরদিকে চৌদ্দগ্রামে পানি কিছুটা কমলেও ত্রাণ ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে মানুষ ভয়াবহ কষ্টে রয়েছেন। আর তিতাস উপজেলায় বাড়ছে পানি, তলিয়ে যাচ্ছে নতুন করে আরও গ্রাম এবং রাস্তাঘাট।
আলোকিত প্রতিদিন/২৭ আগস্ট-২০২৪ /মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here