একেএম ফারুক হোসেন
ভারতের উজান থেকে নেমে আসা জলে প্লাবিত ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষীপুর জেলার ৫০ লক্ষ মানুষ।নোয়াখালী জেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত প্রায় ২২ লক্ষ মানুষ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এবারের বন্যায় নোয়াখালী সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছাতে সদর উপজেলা প্রশাসন শুরু থেকে তৎপর ছিলো। যার ফলে বহু মানুষ ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রেহাই পান।স্বল্প সময়ের প্রস্তুতিতে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া মানুষকে একদিনের জন্য না খেয়ে থাকতে হয়নি। সদর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়,২৫৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২৭ হাজার ২শত পরিবার আশ্রয় গ্রহন করে। আশ্রিত এসকল পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবারের প্যাকেট বিতরণের পাশাপাশি চাল,ডাল,তেল সরবরাহ করা হয়। নিরাপদ পানির জন্য পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট,খাওয়ার স্যালাইন দিয়েও সহায়তা করা হয়েছে। এর ফলে এবারের বন্যায় ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েনি।এর পাশাপাশি বিভিন্ন মেডিকেল টীম কাজ করায় আপৎকালীন চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করাও সম্ভব হয়েছে।প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান,বন্যায় সদর উপজেলার জন্য ১৮৬ মেঃটঃ চাউল বরাদ্দের পাশাপাশি নগদ ১০ লক্ষ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি যেসব এলাকায় ত্রান পৌছানো সম্ভব হয়নি সেসকল এলাকার জন্য নগদ ১০ লক্ষ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
এ রিপোর্ট লেখার সময়ে কোথাও কোথাও পানি নামার সংবাদ পাওয়া গেলেও অনেক জায়গায় এখনো পানি নামেনি।এইসব বিষয়ে নিশ্চিত করে সদর উপজেলার ইউএনও আখিনূর জাহান নীলা বলেন,বন্যার্তদের সহায়তার জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি এনজিও, সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো ও ছাত্র সমন্বয়কদের প্রদানকৃত ত্রানের সুষ্ঠু বন্টন নিশ্চিত করায় কেউ না খেয়ে থাকেনি।প্রথমদিকে বেসরকারি বিভিন্ন এনজিও বিচ্ছিন্নভাবে ত্রানসহ বিভিন্ন সহায়তা প্রদানে সমন্বয়টা ঠিক হয়ে উঠেনি। এটা বন্ধ করে বেসরকারি একটি এনজিও (ব্রাক)কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যাতে তাঁরা সকল এনজিওর সাথে সমন্বয় করবে কারা কি ধরনের সহায়তা করবে।তাদের কাছ থেকে রিপোর্ট পেলে পরবর্তী করনীয় নির্ধারন করা হবে।তিনি আরো জানান,এবারের বন্যায় আমাদের মৎস্যও প্রাণিসম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও গ্রামীণ জনপদের রাস্তার ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্টসহ সকল বিষয়ে আমরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সরকারকে অবহিত করব।এর আগে ২ সেপ্টেম্বর রবিবার উপজেলার সকল বিভাগের কর্মকর্তা, বিভিন্ন এনজিও ছাড়াও ছাত্র সমন্বয়কদের নিয়ে বন্যা পরবর্তী করনীয় নির্ধারনে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এবারের বন্যায় সদর উপজেলার ইউএনওসহ ছাত্র সমন্বয়কদের ভূমিকার ভুয়সী প্রশংসা করে জেলার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আকাশ মুহাম্মদ জসিম বলেন,অভিজ্ঞ ইউএনও আখিনূর জাহান নীলা এবং ছাত্র সমন্বয়করা যেভাবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন সেটা আগামীর সুন্দর একটি বাংলাদেশের দৃশ্য হিসেবে উপস্থাপিত হবে।
আলোকিত প্রতিদিন/০৪ সেপ্টেম্বর-২৪/মওম