আলোকিত প্রতিবেদক
গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। এরপর থেকে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের ক্ষমতাধর নেতাদের নামে মামলা হয় বিভিন্ন থানায়।
ডিএমপির তথ্য মতে, ৫ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় দেড় মাসে রাজধানীর থানাগুলোতে হত্যা মামলা হয়েছে ২৪৮টি। অনুসন্ধান বলছে, এসব মামলার বেশিরভাগ এজাহার একই ধরনের। প্রথম ১০ থেকে ২০ জন আসামি আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাসহ প্রভাবশালী কিছু পুলিশ কর্মকর্তাও। এসব মামলায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাদী চেনেন না আসামিকে; আসামিও বাদীর নাম শোনেননি কখনও এ রকম ঘটনা ঘটেছে।
গত ২৫ আগস্ট ঢাকার দোহার থানায় হয় তেমনি একটি মামলা। এজাহারে থাকা ঠিকানার সূত্র ধরে আসামির খোঁজ করা হয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজনৈতিক পরিচয় না থাকা অভিযুক্ত ষাটোর্ধ্ব এই ব্যক্তি দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের একজন। তিনি দাবি করেন, গত ১০ বছরেও দোহার যাননি।
তিনি আরও বলেন, ব্যবসা করি জীবনভর, সে হিসেবেই সরকারে যেই থাকে তাদের সঙ্গেই আমাদের সখ্যতা থাকে। কিন্তু আমরা কোনো রাজনীতি করি না, কখনও করিও নাই। আমার নামে হত্যা মামলা করা হয়েছে, অথচ গত ১০ বছরে আমি দোহার যাইনি। কেন কিভাবে কিছুই বুঝতে পারছি না আমি। সরকারের কাছে আবেদন করব আমাদের যেন এভাবে অপদস্থ না করা হয়।
এই শিল্পপতিসহ ১৭৪ জনের নামে মামলার বাদী শাজাহান মাঝি। যাদের অধিকাংশকেই চেনেন না তিনি। তাহলে কেন করলেন মামলা তিনি। এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, রাজনৈতিক মামলা তাই সবাইকে চেনেন না, নেতারা যাদের নাম দিয়েছে তাদের নামই মামলায় উল্লেখ করেছেন তিনি।
গেল ২ সেপ্টেম্বর একই ধরনের একটি মামলা হয় রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায়। আসামি বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী। যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি অভিযুক্তের। এ বিষয়ে বাদী ফরিদা ইয়াসমিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে গণহারে এমন মামলায় প্রকৃত দোষীরা পার পেয়ে যেতে পারে বলে শঙ্কা করছেন ব্যারিস্টার শাহেদ আজিম। সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, ভিন্ন মত পোষণের জন্যেই যেন কোন মামলা না হয়, এটাই আমরা আশা করি এখন।
পুলিশ বলছে, বিনা অপরাধে কেউ শাস্তি পাবে না। এ বিষয়ে উত্তরা পূর্ব থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, কে দোষী এবং কে নির্দোষ সেটি খুঁজে বের করার জন্যেই প্রাথমিকভাবে তদন্ত করতে হবে আমাদের। তদন্তের ফলেই যে দোষী থাকবে আর যে নির্দোষ সে মামলা থেকে বাদ যাবে।
অযথা কাউকে হয়রানি করা হবে না বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি