ইমরান হোসেন :
আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে প্রচার দলের উদ্যোগে ‘দুর্যোগ প্রশমনে বিএনপির ভূমিকা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রচার দলের সহ সভাপতি রুহুল আমিন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বিএনপির কর্মকান্ডের ওপরে একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রাখেন
নির্বাচন হবে কিনা কিভাবে বিশ্বাস করবো?
এখনো নির্বাচন কমিশন পরিবর্তন করতে পারেন নাই। কিন্তু জনগনের ভোট করতে হলে তো নির্বাচন কমিশন লাগবে। যেখানে এখনো উইথআউট নির্বাচন কমিশন সেখানে আমি কিভাবে বিশ্বাস করবো আপনি নির্বাচন করবেন?
‘কমিশনের পর কমিশন আরেকটা কমিশন হলো রাজনৈতিক দল গুলোর সাথে আলাপ-আলোচনা, জাস্ট ইজ এ টাইম কিলিং, নাথিং মোর।
নির্বাচন যত শিগগিরই হবে জনগনের পার্টিসিপেশনের জোয়ারের রায়ে মধ্যে হবে। এই মুর্হুতে যদি নির্বাচন হয় তাহলে বাংলাদেশে নির্বাচনের অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করে জনগন ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হবে। কিন্তু মরা মানুষ উপস্থিত হবে না।”
২০০৭ সালে এক এগারোর ঘটনা প্রবাহের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘ এক এগারোর যে বিরাজনীতিকরণ বা রাজনীতিবিদদের অপসারণ করা বা রাজনীতি অঙ্গন থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া…তখন রাষ্ট্র শক্তি গ্রহন করা সংস্কারের নামে কুসংস্কারের মধ্য দিয়ে এগুলো অতিক্রম করার মধ্য দিয়ে বাস্তবরূপ এখনো সংস্কার শব্দ ঘুরছে।”
‘‘ আজকে ১৬ বছর পর জনগনের একটা দাবি… একটা সুষ্ঠু নির্বাচন। একই সময়ে সেই নির্বাচনের জন্য যে এতো রক্ত দিলো…সব কিছু করল আজকে আপনাদেরকে সেই যে জনগনের আকাংখা, ভোটাধিকার, স্বাধীন ভোট… যাকে খুশি তাকে দিবো অন্য কোনো দাবি নাই। জাস্ট আপনি একটা নির্বাচন করে দিয়ে যাবেন সুন্দর করে।“
ছাত্র-জনতার আন্দোলন ভোটাধিকারের।
গয়েশ্বর বলেন, ‘‘ আজকে যে আকাংখা কোটা বৈষম্য বিরোধী থেকে শুরু করে জনগনের ভোটাধিকার ফিরে পাবার যে আন্দোলনটা সেই আন্দোলনে ছাত্রদের সাথে রাজনৈতিক দলের কোনো সাংঘর্ষিক না। একই ধারার আন্দোলন। কিন্তু বর্তমান সরকার তাদেরকে(ছাত্রদের) আলাদা করতে চান কেনো?
‘‘ ছাত্ররা সচিবালয় ঘেরাও করবে কেনো…. কিছু থাকলে তারা সমাবেশ করে সরকারকে সর্তক করবে। আন্দোলন শেষ আমরা তো চলে গেছি… আমাদেরকে কেউ ডাকে নাই। ১৯৬২ সালে আমি ক্লাস এইটের ছাত্র তখন থেকে শিক্ষা আন্দোলন ছিলাম… তখন থেকে সেই রাজনীতি করছি। আমি বলব, তাই ছাত্রদের আলাদা করে বিভাজন সৃষ্টি করবেন না। বৈষম্য বিরোধী যদি আরেকটা বৈষম্য সৃষ্টি হয় তার মাসুল কে দেবো।”
অন্তবর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘ আপনার দায়িত্ব একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যেটুকু রিফর্ম দরকার হয় সেইটুকু রিফর্মের জন্য বিবেচনা করবেন। আর আপনাদের ভাবনাগুলো আর আমাদের ভাবনাগুলো…. আমরা তো ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছি….এসব সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে আগামী দিনে… জনগনের প্রতিনিধিরা পার্লামেন্টে আসবে, তারা ঐক্যমতের ভিত্তিতে যেসব সংস্কার করবে।”
‘‘ আমরা বলছি, আপনারা যদি ব্যর্থ হন জাতি ব্যর্থ হবে, আপনারা ব্যর্থ হওয়া মানে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফসল ব্যর্থ হওয়া। আমরা দেখতে চাই আপনারা সফল হন। আমরা আপনাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে… আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা দেবো।মানুষের তবে স্পষ্ট করেন আপনারা নির্বাচন করবেন।”
‘নির্বাচন: কত সময় লাগবে বলুন ?’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘‘ নির্বাচনের জন্য কতটুকু সময় লাগবে বলেন না কেনো? সেনা বাহিনী প্রধান বলেছেন ১৮ মাস… তার কথা বলেছেন বলুক। পরের দিন কেনো সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটা সরকারের কথা না।”
‘‘ তাহলে সরকারের কথাটা কি? ৩৬ মাস, ৩০ মাস তাই বলেন না… বলতে তো হবে আপনাকে। আপনাকে তো সময় বলতে হবে।কোনো বিয়ে ঠিক হলে তিন মাস আগে তারিখ ঠিক হয়… । আমি যদি জানতে পারি আপনারা এতো মাস পরে নির্বাচন করবেন আমাদের তো কাজ আছে… আমাকে জনগনের কাছে যেতে হবে তাদেরকে বুঝাতে চেষ্টা করবো… আমি এই করব, সেই করব… আমি তো একটা রাজনৈতিক দল করি… আমাদেরও তো আকাংখা আছে জনগনতে কনভিন্স করা। সুতরাং আপনাদের টার্গেট ঠিক করতে হবে।”
জাতীয়তাবাদী প্রচার দলের সভাপতি মাহফুজ কবির মুক্তা‘র সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মুহাম্মদ নেছারুল হকসহ জাতীয়তাবাদী প্রচার দলের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
আলোকিত প্রতিদিন/১৩ অক্টোবর -২৪/মওম
