দৌলতপুরে ইলিশ রক্ষায় ঢিলে ঢালা অভিযান, যমুনার পাড়ে জমজমাট ইলিশ বিক্রির হাট

0
228

মো. মিজানুর রহমান কুদরত, মানিকগঞ্জ 

মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চল বাচামারা, বাঘুটিয়া ও চরকাটারি ইউনিয়নে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যমুনা নদীতে মা ইলিশ শিকারের উৎসবে মেতেছে অসাধু অসংখ্য জেলেরা। রবিবার সরেজমিনে যমুনায় পরিদর্শন কালে দেখা গেছে, জেলেরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বেপরোয়া হয়ে দিন-রাত যমুনা নদীতে শিকার করছে মনকে মন ইশিশ মাছ। মৎস্য বিভাগের ঢিলে-ঢালা অভিযানের কারণে জেলেরা মেতে উঠেছে ইলিশ শিকারে। নিধন ইলিশ গুলো প্রকাশ্যই পাল্লা দিয়ে অবাধে বিক্রি করছে যমুনার বিভিন্ন নদীর পাড় সহ স্থানীয় হাট-বাজার ও গ্রামগঞ্জে। এছাড়া প্রতিদিন ভোরে যমুনার পাড়ে বসছে ইলিশ বিক্রির রমরমা হাট।

১ কেজি ওজনের ইলিশ ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা, অধা কেজির ৭০০ টাকা ও ছোট গুলো পাচঁশত টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। শতশত ক্রেতা-ক্রেতাদের ভিড়ে মুখরিত মাছ বিক্রির নদী পাড়ের হাট। এখানে বাতাসে বইছে ইলিশের গন্ধ। ইলিশ মৌসুমে কিছু মাছ ব্যবসায়ীরা বাঘুটিয়ার পাচুরিয়া বাজার-নদীর পাড়, নতুন শ্যামগজ বাজার, দে পাড়া, বাচামারা ইউনিয়নের নদীর পাড়-বাজার, চরকাটারির নদীর পাড় সহ জিয়নপুরের আমতলী ও পার্শ্ববর্তী টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর থানার দপ্তিয়রের বাজার-গ্রামগঞ্জে বিক্রি করছে।

যেন দেখার কেউ নেই! নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক বাঘুটিয়া ইউনিয়নের সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের দায়সারা ঢিলেঢালা অভিযানের কারণে জেলেরা যমুনায় ইলিশ ধরায় সাহস পাচ্ছে। চরাঞ্চলের নদীর পাড়-বাজার ও গ্রামগঞ্জে পাল্লা দিয়ে বিক্রি হচ্ছে মা ইলিশ। প্রতিদিন দিন-রাতে যমুনায় অভিযান চলমান থাকলে ইলিশ নিধন কম হবে। জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় গত ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন নদীতে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। নিষেধাজ্ঞার সময় এসব এলাকায় সব রকমের ইলিশ সংরক্ষণ, আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও মজুতকরণ নিষিদ্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, কম জনবল ও সীমিত টাকা বরাদ্দ থাকায় প্রতিদিন যমুনা নদীতে অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব নয়। গত বৃহস্পতিবার ও শনিবার সকালে যমুনায় অভিযান চালানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৫ জনকে ১৫ হাজার হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং অভিযানে জব্দকৃত ৪০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয় ও ১৫ কেজি ইলিশ মাছ বিভিন্ন এতিমখানা-মাদ্রাসায় বিতরণ করা হয়েছে। অপরদিকে, গত শনিবার সকালে যমুনায অভিযান চালিয়ে ইলিশ ধরায় ৪ জেলেকে ১৫ দিনের জেল দিযেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

জব্দ ৫ হাজার মিটার জাল ধ্বংস করা সহ ৫ কেজি ইলিশ স্থানীয় মাদ্রাসায় বিতরণ করা হয়। অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রজত বিশ্বাস উক্ত কারাদণ্ড দেন। অভিযান অংশনেন উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মীরাসহ পুলিশ টিম। যমুনায় নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রাখার বিষয়টি প্রক্রিয়া চলছে।

আলোকিত প্রতিদিন/এপি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here