মোঃ সোহাগ (বিশেষ প্রতিনিধি): পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ অভিযানকে ঘিরে ব্যবসায়ী ও জেলা প্রশাসন পাল্টাপাল্টি আল্টিমেটাম দিয়েছে ।
রবিবার সকালে মাইকিং করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অন্যত্র সড়ে যাবার জন্য ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয় জেলা প্রশাসন। এরই প্রতিবাদ জানিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধে পাল্টা আল্টিমেটাম দিয়ে বিক্ষোভ মিছিলকরেছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, তাদেরকে পুনর্বাসন না করে জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান চালালে তাদের প্রতিহত করা সহ অনির্দিষ্টকালের জন্য দোকানপাট বন্ধ রেখে ধর্মঘটের ঘোষণা দিবেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তাদের একটাই দাবী আগে পুনর্বাসন পরে উচ্ছেদ।
জানাগেছে, আগামী ১৫ নভেম্বর কুয়াকাটায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের গঙ্গাস্নান ও রাস মেলা। এরাস উৎসব কে প্রানবন্ত করতে কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট সহ সমুদ্র সৈকত এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। এ উচ্ছেদ অভিযান বন্ধে গত এক মাস ধরে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মিছিল মিটিং সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। এতে কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সভাপতি আ. আজিজ মুসুল্লি, সাধারণ সম্পাদক মো. মতিউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান সোহেল সহ নেতৃবৃন্দ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের যাতে পুনর্বাসন করে এরপর উচ্ছেদ করা হয় এমন অনুরোধ করে জেলা প্রশাসনকে।
সোমবার এ বিষয়ে কথা বলতে পৌর বিএনপির নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসনের সাথে সাক্ষাৎ করবেন বলে জানাগেছে। ফিস ফ্রাই ব্যবসায়ী কাওসার জানান, প্রতিবছর দুই থেকে তিনবার তাদের উচ্ছেদ করা হয়। কয়েক দফা উচ্ছেদে আমরা পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমরা গরীব মানুষ। ব্যবসা করে পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার চালিয়ে আসছি। পুনর্বাসন না করে আমাদের যাতে উচ্ছেদ না করা হয় এমন দাবী জানাচ্ছি জেলা প্রশাসেনর কাছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রুমী শরীফ জানান, কুয়াকাটা সৈকত ও তার আশপাশ মিলিয়ে প্রায় ৫ শতাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রয়েছে। এদের আয়ের উপর নির্ভর করে কয়েক হাজার পরিবারের ভরনপোষন। এদের উচ্ছেদ করা হলে এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পরিবার গুলো নিস্ব হয়ে যাবে। বেকার হয়ে পড়বে দুই থেকে তিন হাজার মানুষ। রুমী শরীফ আরো জানান, আগে পুনর্বাসন তারপর উচ্ছেদ করা হোক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। পুনর্বাসন না করে উচ্ছেদের চেস্টা করলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তা প্রতিরোধ করবে। প্রয়োজনে দোকানপাট বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট করা হবে।
এ বিষয়ে ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অফ কুয়াকাটা (টোয়াক) এর সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, যদি পর্যটনের সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হয় তবে যেন অবশ্যই তাদের পুনর্বাসন আগে করা হয়। এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব মো.রবিউল ইসলাম বলেন, বীচ এলাকার সৌন্দর্য বর্ধনে জেলা প্রশাসন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটা একান্তই জেলা প্রশানের বিষয়। জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত নেয় এটা আমার জানা নেই।
আলোকিত/০৩/১১/২০২৪/আকাশ