ফুলবাড়ীয়া কলেজে নিবন্ধন ছাড়া চাকরি পাওয়া রিকুলা খাতুন এখনো স্বপদে বহাল

0
152
খালেদ হাসান, ময়মনসিংহ 
বাংলাদেশে গত ১৫ বছর আওয়ামী সরকারের শাসনামলে প্রতিটি ক্ষেত্রে অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে এক অরাজক পরিবেশের সৃষ্টি করা হয়েছিল। যার মধ্যে নিয়োগ বাণিজ্য ছিল অন্যতম।এর হাত থেকে রেহাই পায়নি দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও। আওয়ামী সরকারের দূর্নীতি গ্রস্ত আমলা, মন্ত্রী, এমপিরা অর্থের বিনিময়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নজির অহরহ। তেমনি একটি নিয়োগের সন্ধান পাওয়া গেছে ময়মনসিংহ ফুলবাড়ীয়া কলেজের অনার্স শাখার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক রিকুলা খাতুনের। তার বিরুদ্ধে বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাশ ছাড়াই জালিয়াতির মাধ্যমে প্রভাষক পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হওয়ার গুরুতর প্রমাণ পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নিবন্ধন ছাড়া নিয়োগ পাওয়া রিকুলা খাতুন গত ১০/০৩/২০১৪ ইং তারিখ ফুলবাড়ীয়া কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দান করেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক পদে চাকুরীর জন্য নিবন্ধন পরীক্ষায় পাশ করা বাধ্যতামূলক থাকলেও ফুলবাড়ীয়ার সাবেক এমপি মোসলেম উদ্দিন ও তার ছেলে এডভোকেট এমদাদুল হক সেলিম এবং সাবেক দূর্নীতি গ্রস্ত অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ নাছির উদ্দিন খানের সাথে দফারফা করে বিষয়টি গোপন রেখে রিকুলা খাতুনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য নিয়োগের পরের বছর ০৯/০৩/২০১৫ ইং তারিখের রিকুলা খাতুনের নিবন্ধন পরীক্ষা পাশের একটি সার্টিফিকেট (যার রোল-৪০৪২১৩০৯) ফাইলে জমা রাখা হয়।এতে প্রমাণিত হয় রিকুলা খাতুন নিয়োগের সময় নিবন্ধন পাশ করেননি করেছেন নিয়োগের এক বছর পর। তিনি সকলের সামানে প্রকাশ্যে বলে বেড়ান আমি নিয়োগের সময় নিবন্ধন পাশ করিনি তাতে কি হয়েছে আমাকে চাকুরী থেকে কেউ বাদ দিতে পারবে না।
বিষয়টি নিয়ে এর আগেও পত্র পত্রিকায় অনেক সংবাদ প্রকাশ পেয়েছে কিন্তু আওয়ামী হর্তা কর্তারদের প্রকাশ্য হস্তক্ষেপের কারণে এই ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার সাহস করেনি। আজ আওয়ামী স্বৈরশাসনের পট পরিবর্তন হয়েছে। ০৫ জুলাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিজয়ের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী আওয়ামী শাসনের অবসান ঘটেছে। আওয়ামী লীগের দুর্নীতি গ্রস্ত এমপি, মন্ত্রীরা তাদের অপকর্ম থেকে বাঁচতে কেউ গা ঢাকা দিয়েছে, কেউবা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী সরকারের ছত্রছায়ায় অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া রিকুলা খাতুন এখনো সদর্পে স্বপদে বহাল রয়েছেন। দেশে সংস্কারের হাওয়া বইলেও রিকুলা খাতুন এর ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষ কেন ব্যবস্থা নিতে গরি মশি করছে তা বোধগম্য নয়।
তাহলে কি এখনোও আওয়ামী স্বৈরশাসকের দোসরা আড়াল থেকে কলকাঠি নাড়ছে ? মোঠফোনে ফুলবাড়ীয়া কলেজের অধ্যক্ষ ড. গোপাল চন্দ্র সরদার এর কাছে অবৈধ ভাবে নিয়োগ পাওয়া রিকুলা খাতুনের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং এই বিষয়ে ব্যবস্থা না নিতে বাহিরের কোন চাপ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি উত্তরে বলেন,না আমরা কোন চাপের সম্মুখীন হচ্ছি না। রিকুলা খাতুনকে নিয়োগ শোকজ লেটার দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী মিটিং এ বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বর্তমানে কলেজের ছাত্র ,অভিভাবক ও সাধারণ শিক্ষকদের মাঝে বিষয়টি নিয়ে খোভের জন্ম দিচ্ছে। তাদের দাবি নিবন্ধন ছাড়া অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া রিকুলা খাতুন কে অপসারণ এবং এই পর্যন্ত কলেজ থেকে দেওয়া সমুদয় বেতন ভাতা ফেরত নেওয়া হোক। বিষয়টি নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ফুলবাড়ীয়ার সচেতন মহল।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here