খালেদ হাসান, ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ রহমতপুর ৩০ নং ওয়ার্ডের জামিয়া কাসেমিয়া এতিমখানা ও মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নূর আহমদ কাসেমীর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারবর্গ। গত ১২ ই নভেম্বর ২০২৪ ইং তারিখ সকাল ১২ ঘটিকায় ময়মনসিংহ গাঙ্গিনার পার অলকা নদী বাংলা কমপ্লেক্সের তৃতীয় তলায় এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে”প্রেস রিলিজ” পড়ে শুনান মোঃ খলিলুর রহমান নামে একজন ভুক্তভোগী। প্রেস রিলিজ এ উল্লেখ করা হয় বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলিম ধর্মীয় অনুভূতিতে বিশ্বাসী। আর এই ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে একশ্রেণীর অর্থলোভী, লেবাসধারী লোক মসজিদ, মাদ্রাসা ও বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তৈরির নামে নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত। ভূমিদস্য মাওলানা নূর আহমদ কাসেমী সেই প্রকৃতির একজন লোক। এতিমখানা ও মাদ্রাসাটির পরিচালক মাওলানা নূর আহমদ কাসেমী মাদ্রাসাটির আশপাশের জমি গুলো কারো কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে, কারো সরলতার সুযোগে আবার কারো কাছ থেকে জোর পূর্বক দখল করে নিচ্ছে। বর্তমানে তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ মাদ্রাসার আশপাশের জায়গার মালিকগণ। আমি মোঃ খলিলুর রহমান পেশায় একজন ব্যবসায়ী।
আমাকে ব্যবসায়ীক কারণে বেশিরভাগ সময় ঢাকায় থাকতে হয়। এই সুযোগে নূর আহমদ কাসেমী এলাকার সুদখোর আবুল কালাম ও তার কয়েকজন সহযোগী সহ বহিরাগত দেরশতাধিক লোকের সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে গত ২৬ অক্টোবর ২০২৪ ইং তারিখ সকালে আমার ক্রয় কৃত ও ভোগ দখলে থাকা ২০১৮,২০২০,২০১৯ দাগের মোট ২৭.৭৪ শতাংশ জমি অনধিকার প্রবেশ করে জোরপূর্বক দখল করে বাউন্ডারি নির্মাণ করে।আমার আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের লোকজন বাধা দিতে গেলে মাদ্রাসার কোমলমতিছাত্রদের হাতে লাঠি দিয়ে বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে তাদেরকে সংঘর্ষের জন্য উসকে দেওয়া হয়।
আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তাই তাদের সাথে সংঘর্ষে না জড়িয়ে আদালতে মামলা দায়ের করি যা বর্তমানে চলমান। জায়গাটির উপর আদালত একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রদান করলেও তা না মেনে নূর আহমদ কাসেমী বর্তমানে জমিতে বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ অব্যাহত রেখেছে। শুধু আমার জমি নয় আমার বাবা মোঃ বজলুর রহমানের ২০১৮,২০১৯,২০২০ দাগে ৩২ শতাংশ জমির মধ্যে ২ শতাংশ জমি সরকার বাইপাসের জন্য অধিগ্রহণ করে নেয় বাকি ৩০ শতাংশ জমিও জোরপূর্বক দখল করে নেয় নূর আহমেদ কাসেমী।এখানে উপস্থিত আরো একজন ভুক্তভোগী মোছাঃ বদরুন নাহার এর ক্রয় কৃত ও চৌদ্দ বছর ধরে ভোগ দখলে থাকা ২০২০ দাগে ১৩ শতাংশ জমি জোরপূর্বক দখল করে নেয় নূর আহমদ কাসেমী। আর একজন উপস্থিত ভুক্তভোগী খালেদা আক্তার হ্যাপি’র কাছ থেকে ২০২০ দাগের ১৬ শতাংশ জমি দলিল সংশোধনের কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে লিখে নেওয়া হয়েছে।
মোঃ মিজানুর রহমান নামে আর একজন ভুক্তভোগীর ৬৫৯ দাগে ১৬ শতাংশ জমি জোর পূর্বক দখল করে নেয়। এলাকাটিতে গেলে এখানে উপস্থিত ছাড়াও আরো ডজন খানেক মানুষের জায়গা জোরপূর্বক দখল করে নেওয়ার আপনারা প্রমাণ পাবেন। জমি দখলে বাধা দিতে গেলেই সন্ত্রাসী বাহিনী সহ মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে উসকে দেওয়া হচ্ছে। এইসব কাজে মাওলানা নুর আহমদ কাসেমীকে সাহায্য করে ঐ এলাকার সুদখোর আবুল কালাম ও তার সহযোগিরা। এলাকায় প্রচার করা হয় তিনি আওয়ামী সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে।
একজন সাইকেল দিয়ে ঘুরে ফেরা মাদ্রাসার সাধারণ শিক্ষক এখন কিভাবে দামী গাড়িতে ঘুরে ফেরেন গড়েছেন শত কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় তা আপনাদের উদঘাটন করে জাতির সামনে তুলে ধরার সদয় অনুরোধ করছি। আমরা চাই আপনাদের লেখনীর মাধ্যমে একজন লেবাসধারী, ভূমিদস্যু নূর আহমদ কাসেমীর মুখোশ জাতির সামনে উন্মোচন হোক এবং সরকার যেন আমাদেরকে আমাদের সম্পত্তি ফিরে পাওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে নূর আহমদ কাসেমীর জোরপূর্বক জমি দখলের স্বীকার ভুক্তভোগীদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীদের মধ্যে এ সময় উপস্থিত ছিলেন খালেদা আক্তার জাহান,বাদল,তাজ উদ্দিন, সোহান, মনির, ফোরকান, তানিয়া আফরিন ও মাহবুবুর।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি