রানা ইস্কান্দার রহমান:
অনলাইন জুয়া আসক্তি বাড়ছে গ্রাম গন্জে,ভিটামাটি বিক্রি করে সর্বশান্ত হয়েছে শতাধিক পরিবার। নিঃস্ব হওয়ার পথে হাজার হাজার পরিবার। বাড়ছে চুরি ডাকাতি ছিনতাই। অনলাইন জুয়ায় জড়িয়ে পড়েছে স্কুল কলেজগামী শিশু কিশোর সহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষ। ইচ্ছে করলেই যে কেউ জুয়ার এ্যাপ ডাউনলোড করে খেলতে পারে জুয়া। হাতে স্মার্ট ফোন থাকলেই হলো। এ-সকল জুয়ার লেনদেন হয় মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে। যার কারণে অনেকটা সহজলভ্য হওয়ায় জড়িয়ে পড়েছে অতি সহজেই। গত কয়েক বছরের তুলনায় সম্প্রতি সময়ে এর ব্যাপকতা বিস্তৃত হয়েছে বহুগুণে।
গাইবান্ধা সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের নিজপাড়া, মধ্যপাড়া গ্রামের শতকরা ৫০% লোক বর্তমানে অনলাইন জুয়া খেলায় জড়িয়ে পড়েছে। এদের মধ্যে দু একজন সাময়িক লাভবান হলেও নিঃস্ব সর্বসন্ত হয়েছে সবাই। এমনকি দেনার দায়ে অনেকেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। ছোট্ট ছেলে মেয়েরাও লেখা পড়া বাদ দিয়ে অনলাইনে জুয়া খেলছে। ঘরে স্মার্ট ফোনে জুয়া খেলায় বুঝতে বুঝতে না পারলেও, যখন টাকা হারিয়ে নিঃস্ব হয়, তখন আস্তে আস্তে জুয়া খেলার বিষয়টি প্রকাশ পায়। আমাদের গ্রামে এক মাস পূর্বে ১১ লক্ষ টাকা পেয়েছে এমন খবরে ছেলে বুড়া খেলছে অনলাইনে জুয়া। এমন কি অভিভাবকরা তার ছেলে মেয়েদেরকে জুয়া খেলায় উৎসাহ দিচ্ছে। এর একটা বিহীত হওয়া দরকার, তা না হলে ধ্বংস হয়ে যাবে যুবসমাজ ও এলাকার মানুষ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কে জানিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা, লিটন, মিলন,মমদেল।
এদিকে মধ্যপাড়া গ্রামের গুড়া হলুদ ব্যবসায়ী ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা অনলাইন জুয়া খেলে পেয়েছে,এমন খবরে সবাই এ খেলায় আরো বেশী উৎজীবিত হয়ে আসক্ত হয়ে পড়েছে।
কেউ কেউ অনলাইন জুয়ার এজেন্ট হিসাবে কাজ করছে এবং গোপনে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন,আমবাগান দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান পল্লব,ইসলামপুর বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সহকারী সুপার আল মামুন, ও হিংগারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড বি এম কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ মিলন। সাদুল্লাপুর উপজেলায় অনলাইন জুয়ার ব্যাপকতা ছড়িয়ে পড়ায় বাড়ছে সামাজিক অপরাধ প্রবনতা । বাড়ছে পারিবারিক দ্বন্দ্ব,অনেকের সংসার ভেঙে যাওয়ার মত ঘটনাও ঘটেছে। আলু ব্যবসায়ী সুজন মিয়া বীমা কর্মী মোস্তা মিয়া বলেন, আমরা অনলাইন জুয়ায় এ-পর্যন্ত অনেক টাকা হারিয়াছে। অনেকেই সব হারিয়ে হয়েছে নিঃস্ব সর্বসন্ত।
এলাকাবাসীরা জানায় এলাকার সকল শ্রেণি পেশার ব্যক্তি এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বিষয়টি অবগত থাকলেও তারা প্রতিরোধ করতে পারছে না। তারা যথাযথ কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ-বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ তাজ উদ্দিন বলেন সকল জুয়ার বিষয়ে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।
আলোকিত প্রতিদিন/ ১৮ নভেম্বর-২৪/মওম
