মো. মিজানুর রহমান খান কুদরত :
ভাঙনে থাবায় দিন-দিন হারিয়ে যাচ্ছে ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘিওর হাট ও যাতায়াতের বিভিন্ন সড়ক-রাস্তাঘাটসহ স্থাপনা-বিস্তীর্ণ জনপদ। ভাঙ্গন রোধে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়া হলে বাকি অবশিষ্ট স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
ঘিওর-কুস্তা ইছামতি নদীর উপর পুরাতন ব্রিজ ভেঙে ফেলার পর সেখানে এ পর্যন্ত চলাচলের জন্য কোন বিকল্প ডাইভারশন রাস্তা নির্মাণ না করায় দুর্ভোগে পড়েছে ৩০ গ্রামের মানুষজন। গরুহাট সড়ক রক্ষা ও কুস্তা নদীর উপর ডাইভারশন রাস্তা নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
সরেজমিনে দেখা যায়, মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার গরুর হাট ইছামতি নদীর ভাঙ্গনে বিলীন হওয়ার পর এবছর হাটের সড়কটিও বিলীন হওয়ার পথে। অন্যদিকে ঘিওর কুস্তা ইছামতি নদীর উপর পুরাতন ব্রিজ ভেঙে ফেলার পর সেখানে যাতায়াতের বিকল্প ডাইভারশন রাস্তা না করায় চরম দুর্ভোগ পড়েছে এলাকার মানুষজন।
ঘিওর হাটে ধান বিক্রি করতে আসা তেরশ্রী গ্রামের মনোয়ার হোসেন জানান, কুস্তা নদীর উপর ব্রিজ হওয়ার আগ পর্যন্ত একটি ডাইভারশন রাস্তা জরুরী হয়ে পড়েছে। আপাতত বিকল্প ডাইভারশন রাস্তাটি নির্মাণ হলে যাতায়াতকারী মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা কমবে।
গরুহাট সংলগ্ন কুস্তা দক্ষিণপাড়া নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকার বাসিন্দা ষাটউর্ধ রাবিয়া বেওয়া বলেন, তিন বছর আগে নদীতে সব চলে গেছে তার। এখন অবশিষ্ট থাকা একটু মাটির উপর সরকারি টিনের ঘরে বসবাস করছি। বিয়ে হয়ে যাওয়া দুই মেয়ে আমাকে ভাত- কাপড় দিয়ে চালাচ্ছে।
ঘিওর হাটে আসা রসুলপুর গ্রামের ইকবাল মোল্লা বলেন, বাপ-দাদা আমলের গরুহাটি নদীর ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে। এখন চলাচলের সড়কটির তলার মাটি ধ্বসে বিলিনের পথে। এ রাস্তাটি দিয়ে বেপারি পাড়া, বড়টিয়া, মোহালি, ফুলহারা, হিজুলিয়া, নেকের কান্দী, রসুলপুর, ঠাকুরকান্দী, গোলাপ নগর ও কুস্তা সহ প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষজন চলাফেরা করে থাকেন।
গাড়ি চালক হৃদয় মিয়া জানান, দফায় দফায় নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে এই গরুহাটটি। এখন বাকী চলাচলে রাস্তাটির নিচের মাটি দিন দিন নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে। রাস্তাটি ভেঙে নদীতে চলে গেলে গ্রামের মানুষজনের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা কেরামত আলী জানান, গত কয়েক বছরের নদীর ভাঙ্গনে গরুর হাট বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে চলাচলের একমাত্র সড়ক টিও নদীতে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
নদী ভাঙ্গনের শিকার কুস্তা গ্রামের বাসিন্দা নাহিদা বেগম বলেন, নদীর ভাঙ্গনে আমরা দিশাহারা হয়ে পড়েছি। ভাঙ্গন রোধে আরো বেশি জিও ব্যাক ফেলা সহ কার্যকারী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
আলোকিত প্রতিদিন/ ৩০ নভেম্বর-২৪/মওম