বিশেষ প্রতিনিধিঃ
বিআরটি অফিসে চাকরি পেয়ে যেনো আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়েছেন। আর এই চেরাগের মাধ্যমে হয়েছেন শতকোটি টাকার মালিক।
নোয়াখালী জেলার কবির হাট উপজেলার মৃত এনাম আহসানের পুত্র মোঃ সজীব আহসানের বিরুদ্ধে ঘুস দূর্নীতির মাধ্যমে শতকোটি টাকার মালিক হওয়ার অবিশ্বাস্য কাহিনীর উপাখ্যান জেলার মানুষের মুখে মুখে। পিতা মৃত এনাম আহসানের মুক্তি যোদ্ধার কোটায় চাকরি পেয়ে গড়েছেন এইসব অবৈধ সম্পদ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাকরি করতেন ঢাকার বিআরটিএ মিরপুর কার্যালয়ে অফিস সহকারী হিসাবে। হাসিনা সরকার পতনের পর তড়িগড়ি করে বদলি হয়ে বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিআরটিএ অফিসে কর্মরত আছেন। তার এই পদটি ১৪ তম গ্রেডের। বেতন পান সরকার থেকে সব মিলে ১৮/২০ হাজার টাকা। তাহলে এতো ছোট চাকুরী করে এতো অল্প সময়ে কোটি কোটি টাকার আলিশান বাড়ী গাড়ীর মালিক কিভাবে হলেন তা নিয়ে এলাকার সচেতন মহল রিতীমত হতবাক হয়ে পড়েছেন?
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অফিস সহকারী সজীব আহসান চাকুরীর মেয়াদ মাত্র ৪/৫ বছর অতিক্রম হতে চলেছে। তাহলে এই স্বল্প বেতন দিয়ে তিনি কিভাবে ৬/৭ কোটি টাকার সম্পদের মালিক হলেন? তিনি স্বল্প বেতন দিয়ে নোয়াখালী জেলার সদর উপজেলার মাইজদী লক্ষীনারায়ন পুর মৌজায় মাইজদী কোর্ট স্টেশনের উত্তর পাশে রেল লাইনের পূর্বপাশে ১২ শতাংশ জমি কিনে তথায় ৪ ইউনিটের ৮ তলা বিশিষ্ট একটি আলীশান বাড়ী নির্মাণ করেছে।ঐ বাড়ির ৮ম তলার মধ্যে ৬ তলা পুরোপুরি সম্পন্ন করেছেন।জানা যায়,বাড়ীটি বানাতে তিনি খরচ করেছেন প্রায় ৫ কোটি টাকা।পুরো ভবনটি বিদেশী ফিটিংস দিয়ে সম্পন্ন করেছেন।তার আলিশান বাড়িটির পাশেই রেললাইনের পশ্চিম পাশে তাদের আরেকটি পৈত্রিক বাড়ি রয়েছে। ঐ বাড়ীতে তার পরিবার পরিজন বসবাস করছে। ঐ বাড়ীর দক্ষিন পাশে ২/৩ শত গজের মধ্যে আরো ১০ শতক ভূমি খরিদ করে তা ইন্ডাস্ট্রিয়াল রঙিন টিন দিয়ে ঘেরাও করে মুক্তিযোদ্ধা এনাম আহসানের বাড়ী নামে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রেখেছেন। তৃয় শ্রেনির কর্মচারী সজীব হোসেনের লক্ষীনারায়ন পুর মৌজায় ৩ টি বাড়ীর সন্ধান পাওয়া গেছে। এলাকাবাসী জানান এই এলাকায় সজীবের প্রায় ৭/৮ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। এলাকাবাসী সাংবাদিকদের কাছে জানতে চান এতো স্বল্প বেতনের চাকুরী করে সজীব কি করে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক? এলাকাবাসী সাংবাদিকদের সাফ জানিয়ে দেন সজীবের এই সম্পদ দুর্নীতির টাকায় কেনা। এলাকাবাসী আরো অভিযোগ করেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এপিএস রাহাতের মাধ্যমে ৮ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধো কোটায় সজীব আহসান চাকুরী নেন। চাকুরীতে ডুকে সজীব নিজেকে ওবায়দুল কাদেরের ভাগিনা পরিচয় দিতেন।ভাগিনা পরিচয় দিয়েই তিনি বিআরটিএ অফিসের সকল তদবির, নিয়োগ বানিজ্য করে আলাদিনের চেরাগের মত সম্পদ গড়তে থাকেন।কথিত সজীবের বিরুদ্ধে এলাকায় মানুষের জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। সে এলাকায় যুবলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে মন্ত্রী কাদেরের ভাগিনার দাপট দেখিয়ে একদল কিশোর গ্যাঙ্ক পালতো।এই কিশোর গ্যাংকে দিয়ে ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি ও মানুষের জমি দখলের নেশা পেয়ে বসে।প্রতি সপ্তাহে সরকারি ছুটির দিনে নিজের কেনা সাদা প্রাইভেট কার নিয়ে এলাকায় এসে কিশোর গ্যাংদের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা করতো।নোয়াখালীতে যে সজীবের কোটি কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে তা নয়।ঢাকা শহরেও তার আলীশান ফ্ল্যাট রয়েছে। তিনি স্ত্রী ও ছেলে মেয়ে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন। লক্ষীনারায়ন পুর মৌজার সিরাজুল ইসলাম অভিযোগ করেন, সজীব সাবেক মন্ত্রী কাদেরের ভাগিনা পরিচয় দিয়ে এলাকায় একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলে।ঐ সন্ত্রাসী বাহনী দিয়ে গত ২০২৩ সালে তার জমি জোর পূর্বক দখল করে নেয়।ঐ সময় তারা সুধারাম থানায় মামলা করতে গেলে সজীব তার বাহিনী দিয়ে প্রানে হত্যার হুমকি দেয় বলে ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন। সজীবের দুর্নীতির এখানেই শেষ নয়।তিনি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তার নির্মিত আলীশান ভবনের সামনে সরকারী রেললাইনের মালিকানা ৪/৫ শতক ভূমি জোর পূর্বক দখল করে তথায় দামী দামী লোহার এ্যাঙ্গেল দিয়ে ঘেরাও করে রেখেছেন।
আলোকিত প্রতিদিন/ ০২ ডিসেম্বর-২৪/মওম