নোয়াখালীতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, থানায় সাধারণ ডায়েরি 

0
127
নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাংবাদিক শাহাদাৎ বাবু ও সাংবাদিক একেএম ফারুক হোসেনকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে একটি ভিডিও পোস্ট করার অভিযোগে থানায় জিডি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার  (৯ জানুয়ারি) দুপুরে  সাংবাদিক শাহাদাৎ বাবু বাদী হয়ে নোয়াখালী সুধারাম মডেল থানায় এই জিডি করেন।সাধারণ ডায়েরি নম্বর ৬০৫।
 সাংবাদিক শাহাদাৎ বাবু নোয়াখালী প্রেস ক্লাবের একজন সদস্য, তিনি দ্য ডেইলি পোস্ট পত্রিকায় নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। এবং সাংবাদিক এ কে এম ফারুক হোসেন তিনিও নোয়াখালী প্রেস ক্লাবের একজন সদস্য ও দৈনিক আলোকিত প্রতিদিন পত্রিকায় নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় Bakhtiar Shikdar নামে একটি ফেক আইডি থেকে এই ভিডিয়ো পোস্ট করা হলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক বখতিয়ার শিকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম( ফেসবুক) ব্যবহার করি না। আমার নাম ও ছবি দিয়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি ফেক আইডি খুলে আমার এবং আমার সহকর্মীদের নামে মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা ছড়াচ্ছে। এই ভুয়া আইডির বিরুদ্ধে আমি গত ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে থানায় একটি জিডি করেছি।
ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিক শাহাদাৎ বাবুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফেক আইডির মিথ্যা অপপ্রচারে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। এই ফেক আইডি থেকে অনেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মানহানিকর পোস্ট করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার সম্মানহানি করার জন্য এই আইডি থেকে আমার ছবি দিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়েছে। যার কোন ভিত্তি নেই। আমি দীর্ঘদিন থেকে পরিচ্ছন্নভাবে পেশাদারিত্বের সাথে সাংবাদিকতা পেশায় কাজ করে যাচ্ছি। তাই আমি এমন মানহানিকর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আপত্তিকর মন্তব্য করে, ভুল ব্যাখ্যায় আমার ছবি সম্বলিত ভিডিয়ো অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আমি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এখানে আসল বিষয় হচ্ছে গত কিছুদিন আগে আমার আপন বড় ভাইয়ের বাসায় নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি হয়। তারপর আমরা চোরকে সনাক্ত করতে সমর্থ হই। পরবর্তীতে চোরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তারা চোরাইকৃত স্বর্ণ কোন দোকানে বিক্রি করেছে সেটা জানতে চাইলে তারা জানায় বিশ্বনাথের ‘শিল্পী স্বর্ণ শিল্পালয়’ নামে একটি স্বর্ণের দোকানে তারা স্বর্ণ বিক্রি করেছে। চোরের দেওয়া তথ্য মতে চোরকে নিয়ে আমি সেই দোকানে যাই। এ সময় আমাদের সাথে আরো ৭ থেকে ৮ জন সাংবাদিক সহকর্মী এসে হাজির হয়। পরবর্তীতে চোরের সম্মুখে সেই স্বর্ণের দোকানদারের কাছে জানতে চাইলে দোকানদার স্বর্ণ কিনেছেন বলে স্বীকার করেন। এবং স্বর্ণ কিনে তিনি তা বিক্রিও করে ফেলেন বলে জানান। তার জবানবন্দীর পুরো ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে রয়েছে। দোকানদার অন্যায় ভাবে স্বর্ণ ক্রয় করার কারণে সে দোষী সাব্যস্ত হওয়াতে তার পার্শ্ববর্তী পরিচিত কিছু সাঙ্গপাঙ্গ দোকানদারকে বাঁচাতে বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে। এ সময় তাদের সাথে আমাদের বাক-বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তারা আমার দু’একজন সহকর্মীর সাথে দুর্ব্যবহার করে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। যে কারণে আমার সহকর্মীরা পুলিশে খবর দিয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পরবর্তীতে থানায় অভিযোগ দিলে সেই স্বর্ণ দোকানদারসহ যারা দুর্ব্যবহার করেছে তারা সকলে থানায় গিয়ে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চায় এবং মুচলেখা দিয়ে ক্রয়কৃত স্বর্ণ ফেরত দেয় এবং বিষয়টি নিষ্পত্তি করে। যার পূর্ণ বিবরণ আমার অভিযোগে আমি লিখেছি।
এ বিষয়ে সাংবাদিক একেএম ফারুক হোসেন জানান, আমরা আমাদের সহকর্মীর ভাইয়ের চুরি হওয়া স্বর্ণের বিষয়ে আপোষ নিষ্পত্তির জন্য সেখানে যাই। স্বর্ণ দোকানদারের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আমরা বিষয়টি নিষ্পত্তির পর্যায়ে চলে আসলে একদল অসাধু চক্র আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। যে কারণে আমরা থানায় অভিযোগ দিলে পরবর্তীতে তারা থানায় মুচলেখা দিয়ে আমাদের কাছে ক্ষমা চায় এবং চোরাইকৃত স্বর্ণ ফেরত দেয়। কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের ভিডিও ধারণ করে তা ভুল ব্যাখ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে একটি পরাজিত শক্তির দোসরেরা আমাদের সম্মানহানি করার চেষ্টায় লিপ্ত। উক্ত কাণ্ডে জড়িত কুশীলবদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি করছি।সম্প্রতি এই প্রতিবেদক পরাজিত শক্তির দোসরদের নিয়ে একাধিক রিপোর্ট দৈনিক আলোকিত প্রতিদিনসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্হা গ্রহন করে।এর ফলে সংক্ষুব্ধ ব্যাক্তির সাথে মিডিয়া পাড়ার কিছু দুষ্কৃতকারী এক হয়ে হাতে হাত মিলিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চরিত্র হননের পথ বেছে নেয়।
অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে নোয়াখালী সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি(ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) কামরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here