পাকিস্তানিদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করলো বাংলাদেশ

0
103
পাকিস্তানিদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করলো বাংলাদেশ
পাকিস্তানিদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করলো বাংলাদেশ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার প্রক্রিয়া সহজ করেছে বাংলাদেশ। মূলত ভিসা দেওয়ার সময় পাকিস্তানের মিশন প্রধানদের জন্য ঢাকা থেকে ছাড়পত্র নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।
১২ জানুয়ারি রবিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার লক্ষ্যে পাকিস্তানিদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করেছে বাংলাদেশ। শনিবার দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরে ‘লাহোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিতে (এলসিসিআই)’ ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সাথে কথা বলার সময় পাকিস্তানে বাংলাদেশের হাইকমিশনার ইকবাল হুসাইন বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ভিসা দেওয়ার সময় পাকিস্তানের মিশন প্রধানদের জন্য ঢাকা থেকে ছাড়পত্রের প্রয়োজনীয়তা তুলে নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্য দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোই হবে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তিনি এই লক্ষ্য অর্জনে এলসিসিআই-এর সহযোগিতার ওপর জোর দেন।

অনুষ্ঠানে ইকবাল হুসাইন বলেন, বাংলাদেশ সরকার পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক উন্নত করতে আগ্রহী, যা গত এক দশকে সন্তোষজনক ছিল না। তিনি বলেন, ১৮ কোটি জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশ একটি উল্লেখযোগ্য ভোক্তা বাজারের প্রতিনিধিত্ব করে যা পাকিস্তানের জন্য সম্ভাবনাময়।

বাংলাদেশের এই কূটনীতিক আরও বলেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্ভাবনা অনেকাংশে কাজে লাগানো হয়নি এবং পাকিস্তানের এটিকে কাজে লাগানোর ক্ষমতা রয়েছে। তিনি আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের প্রচেষ্টার কথাও উল্লেখ করেন।

এছাড়া তিনি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতার আহ্বান জানান এবং আঞ্চলিক বাণিজ্য এবং সহযোগিতা বাড়াতে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) পুনরুজ্জীবিত করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক সহযোগিতা সত্ত্বেও, দক্ষিণ এশিয়া এখনও এমন সব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে যা অতিক্রম করার জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

পাকিস্তান-বাংলাদেশ সখ্য নিয়ে ভারতে উদ্বেগ, ভীত ভারতীয় গোয়েন্দারা

হাইকমিশনার বলেন, বর্তমান প্রজন্মের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা এবং পারস্পরিক বাণিজ্য এবং সহযোগিতার প্রতিবন্ধকতা দূর করা উভয় দেশেরই দায়িত্ব। তিনি বলেন, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে এলসিসিআই-এর ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।

এদিকে এলসিসিআই সভাপতি মিয়া আবুজার শাদ জানিয়েছেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৭১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

তিনি বলেন, “এই সময়ে বাংলাদেশে পাকিস্তানের রপ্তানির মূল্য ছিল ৬৬১ মিলিয়ন ডলার, অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানে আমদানি হয়েছে ৫৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানি বেড়ে ৩১৪ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যেখানে বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানে আমদানি হয়েছে ৩১ মিলিয়ন ডলারের পণ্য।”

এলসিসিআই সভাপতি অদূর ভবিষ্যতে উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ কমপক্ষে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার দৃঢ় ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। তিনি এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য সরকার এবং বেসরকারি খাত উভয়কেই জোরদার পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি, ওষুধ, চাল, অস্ত্রোপচারের যন্ত্রপাতি, প্রক্রিয়াজাত খাবার, মোটরগাড়ির যন্ত্রাংশ এবং ক্রীড়া সামগ্রীসহ বেশ কিছু খাত এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

সূত্র: দ্য ডন

আলোকিত প্রতিদিন/১২জানুয়ারি-২৫/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here