নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কক্সবাজারের সদর উপজেলায় সরকারি রাস্তা ও অবকাঠামো রক্ষায় সাধারণ জনগণকে সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। সরকারি অবকাঠামো গুলোকে নিজেদের সম্পদের মতো করে যত্ন নিতে হবে।
১২ ফেব্রুয়ারী ( বুধবার) কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের মোক্তারকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইএমসিআরপি প্রকল্পের আওতায় নির্মিত স্থাপনা ব্যবহারে যত্নের বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সচেতনতা সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। বাংলাদেশ সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামস্ (বিসিসিপি) এর উদ্যোগে, এলজিইডির আওতায় বাস্তবায়িত জরুরি রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মাল্টি-সেক্টর প্রকল্প (ইএমসিআরপি) এর মাধ্যমে সরকারি সেবা সুবিধা ব্যবহারে যত্নশীল হওয়া এবং এসব সুবিধা রক্ষায় স্থানীয়দের সচেতন করতে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা প্রকৌশলী তৌহিদুল ইসলাম এলজিইডি’র মাধ্যমে পরিচালিত সার্বিক কার্যক্রম তুলে ধরে বলেন, সরকার সেবা সুবিধা তৈরি করে দিচ্ছেন সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য এবং তাদেরকে এগুলো রক্ষণাবেক্ষণে সচেতন থাকতে হবে। “সরকার বিশ্ব ব্যাংকের অনুদান সহায়তায় স্থানীয় মানুষের জীবন যাত্রার মানোন্নয়নের জন্য এলজিইডি’র মাধ্যমে বিভিন্ন রাস্তা, ঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, সেতু ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মান করছে। এগুলো আপনাদেরই সম্পদ। এই অবকাঠামোগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে আপনাদের দায়িত্বশীল হতে হবে, যেন এগুলো টেকসই হয় এবং দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়।” তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, সরকার অবকাঠামো করে দিচ্ছে কিন্তু মানুষ এগুলোর যত্ন নিচ্ছে না। একটা রাস্তা ভাঙন শুরু হলে সাধারণ মানুষ চাইলে এটা রক্ষা করতে পারে কিন্তু মানুষ সেটা করে না। একটা পাবলিক টয়লেটের সিটকানি নষ্ট হলে অল্প টাকা দিয়ে মানুষ সেটা ঠিক করে না ফলে টয়লেটগুলো নষ্ট হয়ে যায়। এভাবে সরকারি সেবা সুবিধা ব্যবহারে মানুষের মধ্যে অনিহা বোধ দেখা যায় যেটা খুবই খারাপ লক্ষণ। এ জায়গায় আমাদের মানসিক আচরণ পরিবর্তন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সরকারি অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের আরও অনেক দায়িত্বশীল হতে হবে।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কৌশিক চাকমা। তিনি সরকারি সেবা সুবিধা ব্যবহারে যত্নশীল হওয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করতে গিয়ে বলেন, “সরকার সেবা সুবিধা গুলো করে দিচ্ছে স্থানীয় মানুষের জীবন যাত্রার মানোন্নয়নের জন্য। এগুলোর উপকারভোগি আপনারা। এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আপনাদের। তিনি আরও বলেন, “এলজিইডির উদ্যোগে তৈরি হওয়া রাস্তা ও অন্যান্য অবকাঠামোগুলো যদি ঠিকমতো রক্ষা না করা হয়, তাহলে তা দ্রুত ভেঙে পড়বে। তাই আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।”
এ সময় সভায় উপস্থিত স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গও এ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণে নিজেদের দায়িত্বশীল ভুমিকা আরও সক্রিয়ভাবে পালন করার প্রতিশ্রুতি দেন। সভার বিশেষ অতিথি হিসেবে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিসিসিপি’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মুহাম্মদ শাহাবুদ্দিন।
বিসিসিপি’র ইএমসিআরপির যোগাযোগ ও সচেতনতা কার্যক্রমের ডেপুটি টিম লিডার রিদুয়ানুর রহমান সভায় ইএমসিআরপি প্রকল্পের সার্বিক বিষয় তুলে ধরেন।
তিনি জানান, “এই প্রকল্পের আওতায় জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য বিসিসিপি নিয়মিতভাবে বিভিন্ন কমিউনিটি ভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর মাধ্যমে আমরা জনগণকে সচেতন করতে চাই যে, সরকারি সেবা সুবিধা ব্যবহার করার সময় আমাদের দায়িত্বশীলতা এবং যত্নবান হওয়ার প্রয়োজন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন মোক্তারকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুল আলম। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ, কলেজের প্রভাষক, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, উন্নয়ন কর্মী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ প্রমুখ।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের, স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে ‘জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মাল্টি-সেক্টর প্রকল্প (ইএমসিআরপি)’ এর আওতায় এসব কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
আলোকিত প্রতিদিন/১২ফেব্রুয়ারি-২৫/মওম