সাদ্দাম হোসেন:
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের উত্তর বাকাকুড়া গ্রামে স্থানীয় মাদরাসার ৯ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ১৮ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি জানাজানি হলে অপমান সইতে না পেরে ওই কিশোরীর মাতা (৩৫) বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদিকে এ বিষয়ে ধর্ষিতার চাচা বাদী হয়ে ৪জনের নামে ঝিনাইগাতী থানায় ধর্ষণের অপরাধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ধর্ষণকারিরা হলো উপজেলার কালীনগর গ্রামের সুরুজ আলীর ছেলে ইলিয়াস, উত্তর ভালুকা গ্রামের আবু দাউদের ছেলে আবু সাইদ, ডেফলাই গ্রামের মৃত আবু তাহেরের ছেলে আব্দুল মতিন এবং ঝিনাইগাতী সদরের আব্দুর রহিমের ছেলে রাশেদ।
ধর্ষিতার পরিবার ও থানায় দায়ের করা অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, গেলো ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে গজনী অবকাশে অবস্থিত বিদেশী এক এনজিও’র অফিসে স্পন্সর হিসেবে হাজিরা দিতে যায় ৯ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ৪ নারি শিক্ষার্থী সহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা। হাজিরা শেষ করে ওই ৪মেয়ে সহ তাদের বন্ধু বান্ধবীদের নিয়ে গজনীর ওয়াটার পার্কে বেড়াতে গেলে
ইলিয়াসের নেতৃত্বে অন্যান্যরা আসামীরা দেশীয় অস্ত্রেরমুখে জিম্মি করার সময় সুকৌশলে অপর তিন কিশোরী দৌড়ে পালিয়ে যায়। এসময় ইলিয়াস ও বাকি তিনজন ওই মেয়েকে ওয়াটার পার্কের ঘরে আটকে রেখে ধর্ষণ করে। পরে ধর্ষণকারিরা ঘটনাটি প্রকাশ না করতে ধর্ষিতাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে ১৮ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় বাকাকুড়া বাজারে ধর্ষণকারি ইলিয়াস ও আবু সাইদকে ওই ধর্ষিতার বন্ধুরা দেখতে পেয়ে গণধোলাইয়ের পর আটক করে। খবর পেয়ে ইলিয়াস ও আবু সাইদের লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে সটকে পড়ে। এমন সংবাদ ধর্ষিতার মা (৩৫) জানতে পেরে লোকলজ্জার ভয়ে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে এলাকাবাসী ও ধর্ষিতার পরিবার ধর্ষিতার মাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঝিনাইগাতী পরে জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানে তাহার অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ধর্ষিতার মাতাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। বর্তমানে তিনি মৃত্যুের সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। এ ঘটনায় ধর্ষিতার চাচা বাদী হয়ে বুধবার দুপুরে ৪ব্যক্তিকে আসামী করে থানায় ধর্ষণের অপরাধে মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতেই থানা পুলিশ ধর্ষিতাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসে জবানবন্দি রেকর্ড করে এবং বুধবার দুপুরে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্যে পুলিশের হেফাজতে জামালপুর প্রেরণ করে। এমন জঘন্য ঘটনায় এলাকাবাসীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল আমিন এ বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিয়েছি। তবে আসামীরা আত্মগোপনে থাকায় তাদেরকে প্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে।
আলোকিত প্রতিদিন/১৯ফেব্রুয়ারি-২৫/মওম