মো: মহিদ:
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সর্বোচ্চ পদক পেলেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী আনসার কোম্পানি কমান্ডার মোঃ ওয়াসিম মিয়া। ২০২৫ সালের প্রশংসনীয় ভালো এবং মানবিক কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ অসম সাহসিকতা বাংলাদেশ আনসার পদক পেয়েছেন। ১২ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকাল ১১ টার দিকে গাজীপুর জেলার সফিপুর আনসার ও ভিডিপি একাডেমির হলরুমে বাহিনীর জাতীয় সমাবেশে মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম এই পদক তুলে দেন।
এসময় বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ (এসজিপি, এনডিইউ, পিএসসি) উপস্থিত ছিলেন। ওয়াসিম মানিকগঞ্জ জেলার উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ে গত ১ অক্টোবর ২০১৮ সালে যোগদান করেন। শিক্ষা জীবনে সাফল্যের সাথে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ থেকে এমএ পাস করেন। গত ৫ ই আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বীরত্বপূর্ণ, গুরুত্বপূর্ণ আনসার কার্যক্রমে ও সংবেদনশীল স্থানসমূহ হতে মানিকগঞ্জ জেলাধীন সরকারি অফিস, রেকর্ডরুম নিরাপত্তা ডিউটিতে থাকা ১০ জন আনসার ব্যাটালিয়ন ১৬ জন অঙ্গীভূত আনসার সংবেদনশীল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তারা অস্ত্র গোলাবারুদ নিয়ে তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মধ্যে লুকিয়ে থাকা দুস্কৃতিকারীরা ডিউটিতে থাকা সদস্যদের গোলাবারুদ লুট করতে না পারে। এ জন্য মানিকগঞ্জ জেলা কমান্ড্যান্ট এ এস এম সাখাওয়াত হোসাইন অবরোধ হওয়া আনসার ব্যাটালিয়ন, অঙ্গীভূত আনসারদের সাথে থাকা অস্ত্র গোল বারুদ যাতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের মধ্য আন্দোলনে থাকা দুষ্কাতিকারীরা লুট করতে না পারে সংবেদনশীল স্থান হতে জেলা কমান্ডেন্ট কার্যালয়ে ফিরিয়ে আনা সমীচীন মনে করেন। জেলা কমান্ড্যান্ট উপজেলা সহকারী আনসার কোম্পানি কমান্ডার মোঃ ওয়াসিম মিয়াকে ফোন করে বলেন অবরুদ্ধ হয়ে পড়া আনসার সদস্যদের অস্ত্র গোলা বারুদ সরকারি মালামাল রক্ষা করার জন্য নির্দেশ দেন। তিনি মানিকগঞ্জ জেলা কমান্ড্যান্ট এর নির্দেশনা অনুযায়ী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কারীদের সাথে মিশে ছদ্মবেশ ধারণ করে আনসার ব্যাটালিয়ান অঙ্গীভূত আনসারদের খুঁজে বের করে নিরাপদ এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নেয়। যাতে দুষ্কৃতিকারীরা আনসারদের জীবন ও সরকারি মালামালের কোন ক্ষতি না করতে পারে এজন্য তিনি নিজের এবং আশ্রয় স্থলের বিভিন্ন বাসা বাড়ি থেকে শার্ট প্যান্ট লুঙ্গি গেঞ্জি চেয়ে এনে তাদের কাপড় পরিয়ে অস্ত্র গোলাবারুদ বস্তায় ভরে সন্ধ্যা রাতের জন্য অপেক্ষা করেন। রাতে সিএনজিতে, অটো বাইকে করে আনসার সদস্যসহ জেলা অফিস মানিকগঞ্জ ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হোন। পরবর্তীতে ইউনো গার্ড পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিস হতে দশটি অস্ত্র গোলা বারুদ নিজ মোটরসাইকেল যোগে জেলা অস্ত্রাগারে জমা করে। এছাড়াও ৫ তারিখের পরবর্তী সময়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার সাথে কাদে কাদমিলিয়ে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালব করে। এমন মানবিক কাজের জন্য মানিকগঞ্জ জেলা কমান্ড্যান্ট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একই সাথে মোঃ ওয়াসিম মিয়া বলেন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় প্লাটুন কমান্ডার ইয়াদ আলীর নেতৃত্বে ১২ জন আনসার সদস্য নিয়ে অস্থায়ী সরকারকে গার্ড অব অনার প্রদান একটি গৌরবময় ইতিহাস। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই ১২ জন দুঃসাহসিক আনসার সদস্যদের কথা মনে করে তিনি নিজের জীবন বিপন্ন কথা চিন্তা না করে বীরত্বপূর্ণ সাহসিকতা, পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। তার নিজ এলাকাবাসী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের জিজ্ঞাসা করে জানা যায়, তিনি সৎ মানবিক কাজের অবদান রাখতে অত্র বাহিনীর মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার সম্মান বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। মানিকগঞ্জ জেলার বর্তমান জেলা কমান্ডেন্ট শাহাদাত হোসেন বলেন, এরূপ সাফল্য যেন প্রতিটি সদস্যর আদর্শ হয়। এসময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেশ রক্ষায় সকলের মনবল ধরে রেখে সাহসিকতার সহিত দায়িত্ব পালনের আহবান জানান।
আলোকিত প্রতিদিন/২৩ফেব্রুয়ারি-২৫/মওম